ঢাকা ০৫:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪৩ জেলায় তাপদাহে জনজীবন দুর্বিষহ

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৭:১৫:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩ ১২৮ বার পড়া হয়েছে

দেশের ৪৩টি জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল রোববার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে জানান, ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলা, খুলনা বিভাগের ১০টি এবং বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলাসহ দেশের রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। ওমর ফারুক আরও জানান, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আগামী দুই দিনে আবহাওয়ার অবস্থা সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। তবে আগামী ৫ দিনে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ। গত শনিবার (৮ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চুয়াডাঙ্গায় এবং সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল রাজারহাটে ১৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য কোনো সতর্কবাতা নেই এবং কোনো সংকেতও দেখাতে হবে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে শ্রম উৎপাদনশীলতা হারাচ্ছে বাংলাদেশ। শুধু ঢাকা শহরে বছরে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার। সম্প্রতি দ্য রকফেলার ফাউন্ডেশন ও অ্যাড্রিয়েন আরশটের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে শ্রম উৎপাদনশীলতা হারাচ্ছে বাংলাদেশ। শুধু ঢাকা শহরে বছরে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার। সম্প্রতি দ্য রকফেলার ফাউন্ডেশন ও অ্যাড্রিয়েন আরশটের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
চুয়াডাঙ্গায় টানা তাপপ্রবাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এতে মানুষ ও যানবাহন চলাচল অনেকটা কমে গেছে। বাজারে ঈদ কেনাকাটায় ছেদ পড়েছে। তীব্র গরমে রোজাদারদের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। গত কয়েকদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬-৩৮.৫ ডিগ্রিতে থাকছে। রোববারও (৯ এপ্রিল) সকালে ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। যা দেশের সবের্োচ্চ তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, শনিবার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলয়িাস ছিল। এছাড়া শুক্রবার ৩৮ ডিগ্রি, বৃহস্পতিবার ৩৭.৫ ডিগ্রি, বুধবার ৩৭ ডিগ্রি, মঙ্গলবার ৩৭ ডিগ্রি, সোমবার ৩৫.৫ ডিগ্রি ও রোববার ৩৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল।
বেসরকারি চাকরিজীবী শিউলি শারমীন বলেন, প্রচণ্ড গরমে রোজা রাখা আর অফিস করা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে ভালো হতো। রিকশাচালক লিয়াকত মিয়া বলেন, রাস্তায় বের হলে মাথার ওপর সূর্য থাকছে। একই সঙ্গে গরমে রিকশা চালানো যাচ্ছে। আর যাত্রীও তেমনটা নেই। ব্যাংকার আবির হোসেন রাজু বলেন, ভাবছিলাম মাঝ রোজার মধ্যে বাড়ির জন্য ঈদের কেনাকাটা করে রাখবো, কিন্তু এতো রোদ আর তাপমাত্রা মার্কেটে ঘোরাঘুরি করার উপায় নেই।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, রোববার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এছাড়া গত সাত দিনও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড হয়েছে। দু-তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে তাপমাত্রা আরও বাড়বে পাবে।
টানা তাপপ্রবাহে রাজশাহীতে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এতে করে মানুষ ও যানবাহন চলাচল অনেকটা কমে গেছে। বাজারে ঈরে কেনাকাটায় ছেদ পড়েছে। তীব্র গরমে রোজাদারদের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। বৃষ্টি-বাতাস না থাকায় রাজশাহীতে বিদ্যুৎ গোলযোগও ব্যাপক। লোডশেডিং হচ্ছে অহরহ। নগরীর বাসিন্দারা বিদ্যুৎ বিভাগকে দুষছেন ঠিকমতো বিদ্যুৎ সরবরাহ না দেয়ার জন্য। রাজশাহীতে বৃহস্পতিবারসহ গত চার দিন ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরেই আটকে আছে তাপমাত্রার পারদ। রাজশাহীতে কার্যত মৃদু তাপপ্রবাহ চলছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ৩ এপ্রিল রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৪ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৪ এপ্রিল ছিল ৩৬ শমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৫ এপ্রিল তাপমাত্রা ছিল ৩৬ শমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ এটিই এখন পর্যন্ত চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
আবহাওয়া অফিস আরো জানায়, চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম। তাই গরমের তীব্রতা বেড়েছে। চলতি বছরের ১১ মার্চ মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিপাত হয়। ওই দিন মাত্র ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এরপর সর্বশেষ গত ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৪ শমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এরফলে তাপপ্রবাহ দীর্ঘমেয়াদি রূপ নিয়েছে। সাধারণত মার্চ-এপ্রিলকে তীব্র তাপপ্রবাহের মৌসুম হিসেবেও ধরা হয় বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
পটুয়াখালীর উপর দিয়েও বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। গত শনিবার জেলার কলাপাড়া উপজেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই ভ্যাপসা গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে এ জেলার নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন রোজাদাররা। এদিকে তপ্ত রোদে মৌসুমী সবজি চাষিরা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। রোদের এ তীব্রতা আরও বাড়লে ক্ষেতের সবজি পচে যাওয়ার শংকায় রয়েছেন তারা। এদিকে অস্বাভাবিক গরমে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে সংশ্লিষ্ট নানা অসুখবিসুখে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি। আবহাওয়ার এই অবস্থা আরও এক সপ্তাহ বিরাজ করতে পারে বলে জানিয়েছে জেলা আবহাওয়া অফিস।
কলাপাড়া ল ঘাট এলাকারা শ্রমিক আহসান মিয়া জানান, জাহাজে গার্মেন্টেসের ব্যাপক মালামাল এসেছে। এসব জামা কাপড় ঈদ উপলক্ষে দোকানীরা বিক্রি করবে। এদিকে অসহনীয় আকারে বেড়েছে গরম। তারপরও এসব মালামাল দৌকানে পৌছে দিতে হচ্ছে। এতে আমাদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রিকশাচালক ইয়াসিন মিয়া জানান, এতো রোদ আর গরম যে, রিকশা চালানোই দায় হয়ে যাচ্ছে। শরীর থেকে শুধু ঘাম ঝরছে।
চম্পাপুর ইউনিয়নের পানচাষি ইয়াসিন আহম্মেদ জানান, রোদের অবস্থা এরকম থাকলে আমাদেন ক্ষেতের পান অনেকটা পচে যাবে। এতে আমরা বড় লোকসানে পড়বো। পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী জানান, আবহাওয়ার এই অবস্থা আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত বিরাজ করতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

৪৩ জেলায় তাপদাহে জনজীবন দুর্বিষহ

আপডেট সময় : ০৭:১৫:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

দেশের ৪৩টি জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল রোববার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে জানান, ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলা, খুলনা বিভাগের ১০টি এবং বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলাসহ দেশের রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, মৌলভীবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। ওমর ফারুক আরও জানান, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আগামী দুই দিনে আবহাওয়ার অবস্থা সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। তবে আগামী ৫ দিনে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ। গত শনিবার (৮ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চুয়াডাঙ্গায় এবং সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল রাজারহাটে ১৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য কোনো সতর্কবাতা নেই এবং কোনো সংকেতও দেখাতে হবে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে শ্রম উৎপাদনশীলতা হারাচ্ছে বাংলাদেশ। শুধু ঢাকা শহরে বছরে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার। সম্প্রতি দ্য রকফেলার ফাউন্ডেশন ও অ্যাড্রিয়েন আরশটের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে শ্রম উৎপাদনশীলতা হারাচ্ছে বাংলাদেশ। শুধু ঢাকা শহরে বছরে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার। সম্প্রতি দ্য রকফেলার ফাউন্ডেশন ও অ্যাড্রিয়েন আরশটের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
চুয়াডাঙ্গায় টানা তাপপ্রবাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এতে মানুষ ও যানবাহন চলাচল অনেকটা কমে গেছে। বাজারে ঈদ কেনাকাটায় ছেদ পড়েছে। তীব্র গরমে রোজাদারদের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। গত কয়েকদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬-৩৮.৫ ডিগ্রিতে থাকছে। রোববারও (৯ এপ্রিল) সকালে ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। যা দেশের সবের্োচ্চ তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, শনিবার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলয়িাস ছিল। এছাড়া শুক্রবার ৩৮ ডিগ্রি, বৃহস্পতিবার ৩৭.৫ ডিগ্রি, বুধবার ৩৭ ডিগ্রি, মঙ্গলবার ৩৭ ডিগ্রি, সোমবার ৩৫.৫ ডিগ্রি ও রোববার ৩৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল।
বেসরকারি চাকরিজীবী শিউলি শারমীন বলেন, প্রচণ্ড গরমে রোজা রাখা আর অফিস করা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে ভালো হতো। রিকশাচালক লিয়াকত মিয়া বলেন, রাস্তায় বের হলে মাথার ওপর সূর্য থাকছে। একই সঙ্গে গরমে রিকশা চালানো যাচ্ছে। আর যাত্রীও তেমনটা নেই। ব্যাংকার আবির হোসেন রাজু বলেন, ভাবছিলাম মাঝ রোজার মধ্যে বাড়ির জন্য ঈদের কেনাকাটা করে রাখবো, কিন্তু এতো রোদ আর তাপমাত্রা মার্কেটে ঘোরাঘুরি করার উপায় নেই।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, রোববার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এছাড়া গত সাত দিনও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড হয়েছে। দু-তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে তাপমাত্রা আরও বাড়বে পাবে।
টানা তাপপ্রবাহে রাজশাহীতে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এতে করে মানুষ ও যানবাহন চলাচল অনেকটা কমে গেছে। বাজারে ঈরে কেনাকাটায় ছেদ পড়েছে। তীব্র গরমে রোজাদারদের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। বৃষ্টি-বাতাস না থাকায় রাজশাহীতে বিদ্যুৎ গোলযোগও ব্যাপক। লোডশেডিং হচ্ছে অহরহ। নগরীর বাসিন্দারা বিদ্যুৎ বিভাগকে দুষছেন ঠিকমতো বিদ্যুৎ সরবরাহ না দেয়ার জন্য। রাজশাহীতে বৃহস্পতিবারসহ গত চার দিন ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরেই আটকে আছে তাপমাত্রার পারদ। রাজশাহীতে কার্যত মৃদু তাপপ্রবাহ চলছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ৩ এপ্রিল রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৪ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৪ এপ্রিল ছিল ৩৬ শমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৫ এপ্রিল তাপমাত্রা ছিল ৩৬ শমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ এটিই এখন পর্যন্ত চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
আবহাওয়া অফিস আরো জানায়, চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম। তাই গরমের তীব্রতা বেড়েছে। চলতি বছরের ১১ মার্চ মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিপাত হয়। ওই দিন মাত্র ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এরপর সর্বশেষ গত ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৪ শমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এরফলে তাপপ্রবাহ দীর্ঘমেয়াদি রূপ নিয়েছে। সাধারণত মার্চ-এপ্রিলকে তীব্র তাপপ্রবাহের মৌসুম হিসেবেও ধরা হয় বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
পটুয়াখালীর উপর দিয়েও বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। গত শনিবার জেলার কলাপাড়া উপজেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই ভ্যাপসা গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে এ জেলার নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন রোজাদাররা। এদিকে তপ্ত রোদে মৌসুমী সবজি চাষিরা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। রোদের এ তীব্রতা আরও বাড়লে ক্ষেতের সবজি পচে যাওয়ার শংকায় রয়েছেন তারা। এদিকে অস্বাভাবিক গরমে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে সংশ্লিষ্ট নানা অসুখবিসুখে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি। আবহাওয়ার এই অবস্থা আরও এক সপ্তাহ বিরাজ করতে পারে বলে জানিয়েছে জেলা আবহাওয়া অফিস।
কলাপাড়া ল ঘাট এলাকারা শ্রমিক আহসান মিয়া জানান, জাহাজে গার্মেন্টেসের ব্যাপক মালামাল এসেছে। এসব জামা কাপড় ঈদ উপলক্ষে দোকানীরা বিক্রি করবে। এদিকে অসহনীয় আকারে বেড়েছে গরম। তারপরও এসব মালামাল দৌকানে পৌছে দিতে হচ্ছে। এতে আমাদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রিকশাচালক ইয়াসিন মিয়া জানান, এতো রোদ আর গরম যে, রিকশা চালানোই দায় হয়ে যাচ্ছে। শরীর থেকে শুধু ঘাম ঝরছে।
চম্পাপুর ইউনিয়নের পানচাষি ইয়াসিন আহম্মেদ জানান, রোদের অবস্থা এরকম থাকলে আমাদেন ক্ষেতের পান অনেকটা পচে যাবে। এতে আমরা বড় লোকসানে পড়বো। পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী জানান, আবহাওয়ার এই অবস্থা আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত বিরাজ করতে পারে।