ঢাকা ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলবে ভাঙ্গা পর্যন্ত!

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৯:৩১:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩ ৮৭ বার পড়া হয়েছে

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পাথরবিহীন রেললাইনে আর মাত্র একটি স্লিপার বসানো বাকি। ৭ মিটারের স্লিপারটি সফলভাবে বসে গেলে শতভাগ সম্পন্ন হবে মূল সেতুতে পাথরবিহীন রেললাইন স্থাপনের কাজ। বৃহস্পতিবার (৩০শে মার্চ) মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে চলবে ট্রেন।

একটি স্লিপারের অভাবে তবে এই অংশটুকু ঢালাই করা হয়নি। সেতুর মাঝামাঝি ৫ নম্বর মুভমেন্ট জয়েন্টের একটি স্টিলের স্লিপার নিয়ে নতুন করে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।

সোমবার (২৭শে মার্চ) সকালে প্রকৌশলী জুহুরুল ইসলাম জানান, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জরুরি ভিত্তিতে বিমানে করে এই স্লিপারটি নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে, আশা করি শিগগিরই এটি এসে পৌঁছাবে। স্লিপারটির ছিদ্র ডিজাইনে সঙ্গে মিলছে না। শেষ মুভমেন্ট জয়েন্টের বিশেষ এই স্লিপারটি যথাযথ না হওয়ায় একটু সময় লাগছে।

৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা রেল সেতুতে মোট ৮টি মুভমেন্ট জয়েন্ট রয়েছে। এর ৭টি যথাযথভাবে স্থাপন হয়েছে। বাকি জয়েন্টও স্থাপন হয়েছে তবে রেল লাইন ঢালাই করার জন্য ও শতভাগ কাজ সম্পন্ন করার জন্য এই স্লিপারের বিকল্প নেই।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে পদ্মা সেতুর রেল রুটটিও। প্রস্তাবিত রুটটি পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতকে সংযুক্ত করে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ভাঙ্গা-মাওয়া হয়ে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-টঙ্গী-আখাউড়া-চট্টগ্রাম-দোহাজারি- মিয়ানমারের গুনদুম সীমান্তে গিয়ে মিশবে। এই রেল নেটওয়ার্ক পায়রা বন্দরের সঙ্গেও যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রকৌশলীরা জানান, মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপন হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের স্টিলের স্লিাপারগুলো ছাড়া বাকি কংক্রিটের সব স্লিপার চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফরিদপুরেই তৈরি করেছে। শুধু সেতুর স্লিপারই নয় পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের ১৭২ কিলোমিটার রেললাইন তৈরি জন্য সব স্লিপার তৈরি করেছে এখানে। তবে বিশেষ তাপামাত্রায় মুভমেন্ট জয়েন্ট এবং স্টিলের স্লিপারগুলো তৈরি করে আনা হয় চীন থেকে।

স্লিপারটি পৌঁছালে রোববার বাকি অংশের কংক্রিটিং হওয়ার কথা ছিল। ৭২ ঘণ্টা কিউরিংয়ের জন্য অপেক্ষার পর আগামী ৩০শে মার্চ মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চলবে ট্রেন।

রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার পদ্মা সেতু রেল লিঙ্ক প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতুতে যানবাহন চালু রেখেই নিচ তলায় সূক্ষ্মভাবে টেকসই পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ। এটি এখন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পথে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ বিগ্রেডিয়ার সাঈদ আহমেদ বলেন, পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণ একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। সেতুতে রেল সংযোগ আরেকটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। যেটা টেবিলে করা হয় তা বাস্তবে করতে গেলে কিছুটা সমস্যা হয়। আমাদেরও প্রথমদিকে কিছুটা সমস্যা ছিল। তবে আমরা তা সংশোধন করেছি। এখানে আমরা সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করেছি। পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপনের কাজের অগ্রগতি প্রায় ৯৯ শতাংশ আর মাত্র এক দিনের মধ্যেই শতভাগ কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হবে। বাকি থাকা মাত্র ৭ মিটার কাজ ছাড়া দুই প্রান্ত থেকে পুরো সেতুর রেলপথ এখন তৈরি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলবে ভাঙ্গা পর্যন্ত!

আপডেট সময় : ০৯:৩১:৩৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পাথরবিহীন রেললাইনে আর মাত্র একটি স্লিপার বসানো বাকি। ৭ মিটারের স্লিপারটি সফলভাবে বসে গেলে শতভাগ সম্পন্ন হবে মূল সেতুতে পাথরবিহীন রেললাইন স্থাপনের কাজ। বৃহস্পতিবার (৩০শে মার্চ) মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে চলবে ট্রেন।

একটি স্লিপারের অভাবে তবে এই অংশটুকু ঢালাই করা হয়নি। সেতুর মাঝামাঝি ৫ নম্বর মুভমেন্ট জয়েন্টের একটি স্টিলের স্লিপার নিয়ে নতুন করে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।

সোমবার (২৭শে মার্চ) সকালে প্রকৌশলী জুহুরুল ইসলাম জানান, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জরুরি ভিত্তিতে বিমানে করে এই স্লিপারটি নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে, আশা করি শিগগিরই এটি এসে পৌঁছাবে। স্লিপারটির ছিদ্র ডিজাইনে সঙ্গে মিলছে না। শেষ মুভমেন্ট জয়েন্টের বিশেষ এই স্লিপারটি যথাযথ না হওয়ায় একটু সময় লাগছে।

৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা রেল সেতুতে মোট ৮টি মুভমেন্ট জয়েন্ট রয়েছে। এর ৭টি যথাযথভাবে স্থাপন হয়েছে। বাকি জয়েন্টও স্থাপন হয়েছে তবে রেল লাইন ঢালাই করার জন্য ও শতভাগ কাজ সম্পন্ন করার জন্য এই স্লিপারের বিকল্প নেই।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে পদ্মা সেতুর রেল রুটটিও। প্রস্তাবিত রুটটি পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতকে সংযুক্ত করে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ভাঙ্গা-মাওয়া হয়ে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-টঙ্গী-আখাউড়া-চট্টগ্রাম-দোহাজারি- মিয়ানমারের গুনদুম সীমান্তে গিয়ে মিশবে। এই রেল নেটওয়ার্ক পায়রা বন্দরের সঙ্গেও যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রকৌশলীরা জানান, মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপন হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের স্টিলের স্লিাপারগুলো ছাড়া বাকি কংক্রিটের সব স্লিপার চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফরিদপুরেই তৈরি করেছে। শুধু সেতুর স্লিপারই নয় পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের ১৭২ কিলোমিটার রেললাইন তৈরি জন্য সব স্লিপার তৈরি করেছে এখানে। তবে বিশেষ তাপামাত্রায় মুভমেন্ট জয়েন্ট এবং স্টিলের স্লিপারগুলো তৈরি করে আনা হয় চীন থেকে।

স্লিপারটি পৌঁছালে রোববার বাকি অংশের কংক্রিটিং হওয়ার কথা ছিল। ৭২ ঘণ্টা কিউরিংয়ের জন্য অপেক্ষার পর আগামী ৩০শে মার্চ মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চলবে ট্রেন।

রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার পদ্মা সেতু রেল লিঙ্ক প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতুতে যানবাহন চালু রেখেই নিচ তলায় সূক্ষ্মভাবে টেকসই পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ। এটি এখন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পথে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ বিগ্রেডিয়ার সাঈদ আহমেদ বলেন, পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণ একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। সেতুতে রেল সংযোগ আরেকটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। যেটা টেবিলে করা হয় তা বাস্তবে করতে গেলে কিছুটা সমস্যা হয়। আমাদেরও প্রথমদিকে কিছুটা সমস্যা ছিল। তবে আমরা তা সংশোধন করেছি। এখানে আমরা সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করেছি। পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপনের কাজের অগ্রগতি প্রায় ৯৯ শতাংশ আর মাত্র এক দিনের মধ্যেই শতভাগ কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হবে। বাকি থাকা মাত্র ৭ মিটার কাজ ছাড়া দুই প্রান্ত থেকে পুরো সেতুর রেলপথ এখন তৈরি।