ঢাকা ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ঋণের টাকা না পেয়ে নারীকে রাতে তালাবদ্ধ করে রাখল পল্লী উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ায় নিখোঁজ অটোরিকশা চালকের লাশ উদ্ধার, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ক্রিকেটে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়লেন ক্যাম্ফার পাকিস্তানে বাস থামিয়ে ৯ যাত্রীকে অপহরণের পর হত্যা উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা আবশ্যক : প্রধান উপদেষ্টা ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশ জারি রাষ্ট্রপতির ইসরাইলি বর্বরতায় একদিনে আরও ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত গ্লোবাল সুপার লিগ : খালেদের ৪ উইকেটে জয়ে শুরু রংপুরের ২১ জেলায় পানির নিচে ৭২ হাজার হেক্টর জমির ফসল টানা বৃষ্টির প্রভাব কাঁচাবাজারে, মরিচের কেজি প্রায় ৩০০ টাকা

আর্জেন্টিনা যাচ্ছেন ৭ রোহিঙ্গা

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৬:১১:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩ ১০৩ বার পড়া হয়েছে

আর্জেন্টিনা যাচ্ছেন কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সাত রোহিঙ্গা। তারা সকলেই উখিয়া ১৩ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা। ২০১৭ সালে মিয়ানমারে নিজেদের উপর সংঘটিত বর্বরতার বর্ণনা দিতে ফুটবলের দেশে যাচ্ছেন তারা।

রোববার (২৮ মে) বিকেলে তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন। রাতে তারা আর্জেন্টিনার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর, ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ (সার্বজনীন এখতিয়ার) নীতির অধীনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা এবং মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলার তদন্ত শুরু করে আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগ। মামলাটির প্রেক্ষিতে সে সময় ভার্চুয়ালি স্বাক্ষ্য দিয়েছিলেন উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে বাস করা ৭ রোহিঙ্গা, যাদের চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে বুয়েন্স আয়ার্সের আদালতে স্বাক্ষী হিসেবে বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

এই মামলা ছাড়াও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিজে) এবং জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিসি) বিচার চলছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক রোহিঙ্গাদের সংগঠন বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকে (ব্রুক), ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আর্জেন্টিনায় মামলাটি শুরুর আবেদন করেছিল।

আইসিসির তৎকালীন তদন্তের কারণে দেশটির নিম্ন আদালত ২০২১ সালের ১২ জুলাই মামলাটি খারিজ করে। পরে, আগস্টে ব্রুকের করা আপিলের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের সেই সিদ্ধান্তকে বাতিল করার রায় দিয়ে ওই বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার তদন্ত শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় আর্জেন্টিনার ফেডারেল ক্রিমিনাল কোর্টের (ফৌজদারি আদালত) সেকেন্ড চেম্বার।

মামলাটির প্রক্রিয়াকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ উল্লেখ করে ব্রুকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বার্তায় বলা হয়, আর্জেন্টিনার মামলাটি বিশ্বের কোথাও রোহিঙ্গা গণহত্যা সংক্রান্ত প্রথম সার্বজনীন বিচারব্যবস্থার মামলা।

ওই বার্তায় ব্রুকের প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী তুন খিন জানান, গণহত্যা সংঘটনকারীরা কোথাও লুকিয়ে থাকতে পারবে না। ঘৃণ্য এসব অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্তদের জন্য সারা বিশ্ব ঐক্যবদ্ধ। তাঁর দাবী, আর্জেন্টিনার আপিল বিভাগের দ্বিতীয় চেম্বার আদালত নিশ্চিত যে মিয়ানমারে সংঘটিত অপরাধের মাত্রা ভয়াবহ এবং সেগুলো অধিকতর তদন্তের দাবি রাখে।
ব্রুক ও ৭ রোহিঙ্গার পক্ষে মামলাটির আইনি লড়াইয়ে আছেন বিশ্বখ্যাত আইনজীবী টমাস ওজেয়া কুইন্টানা।

আরাকানের পরিস্থিতি ভালোভাবে জানা এই আইনজ্ঞ ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত মানবাধিকারের জন্য জাতিসংঘের প্রাক্তন বিশেষ র‌্যাপোর্টার হিসেবে কাজ করাকালীন রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বকে জানিয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক আইনে গুরুত্বপূর্ণ নীতি হিসেবে ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই স্বীকৃত। ১৯৪৯ এর জেনেভা কনভেনশনে স্বীকৃতি লাভের পাশাপাশি পরবর্তী সময়ে এটি নির্যাতনবিরোধী সনদের (১৯৮৪) মতো আন্তর্জাতিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ সনদে স্থান পেয়েছে। এই নীতির আওতায় আর্জেন্টিনার আদালত অতীতে স্পেনে প্রাক্তন স্বৈরশাসক ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর শাসন এবং চীনে ফালুন গং আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য মামলাগুলি গ্রহণ করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আর্জেন্টিনা যাচ্ছেন ৭ রোহিঙ্গা

আপডেট সময় : ০৬:১১:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩

আর্জেন্টিনা যাচ্ছেন কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সাত রোহিঙ্গা। তারা সকলেই উখিয়া ১৩ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা। ২০১৭ সালে মিয়ানমারে নিজেদের উপর সংঘটিত বর্বরতার বর্ণনা দিতে ফুটবলের দেশে যাচ্ছেন তারা।

রোববার (২৮ মে) বিকেলে তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ত্যাগ করেছেন। রাতে তারা আর্জেন্টিনার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর, ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ (সার্বজনীন এখতিয়ার) নীতির অধীনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা এবং মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলার তদন্ত শুরু করে আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগ। মামলাটির প্রেক্ষিতে সে সময় ভার্চুয়ালি স্বাক্ষ্য দিয়েছিলেন উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে বাস করা ৭ রোহিঙ্গা, যাদের চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে বুয়েন্স আয়ার্সের আদালতে স্বাক্ষী হিসেবে বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

এই মামলা ছাড়াও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিজে) এবং জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিসি) বিচার চলছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক রোহিঙ্গাদের সংগঠন বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকে (ব্রুক), ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আর্জেন্টিনায় মামলাটি শুরুর আবেদন করেছিল।

আইসিসির তৎকালীন তদন্তের কারণে দেশটির নিম্ন আদালত ২০২১ সালের ১২ জুলাই মামলাটি খারিজ করে। পরে, আগস্টে ব্রুকের করা আপিলের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের সেই সিদ্ধান্তকে বাতিল করার রায় দিয়ে ওই বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার তদন্ত শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় আর্জেন্টিনার ফেডারেল ক্রিমিনাল কোর্টের (ফৌজদারি আদালত) সেকেন্ড চেম্বার।

মামলাটির প্রক্রিয়াকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ উল্লেখ করে ব্রুকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বার্তায় বলা হয়, আর্জেন্টিনার মামলাটি বিশ্বের কোথাও রোহিঙ্গা গণহত্যা সংক্রান্ত প্রথম সার্বজনীন বিচারব্যবস্থার মামলা।

ওই বার্তায় ব্রুকের প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী তুন খিন জানান, গণহত্যা সংঘটনকারীরা কোথাও লুকিয়ে থাকতে পারবে না। ঘৃণ্য এসব অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্তদের জন্য সারা বিশ্ব ঐক্যবদ্ধ। তাঁর দাবী, আর্জেন্টিনার আপিল বিভাগের দ্বিতীয় চেম্বার আদালত নিশ্চিত যে মিয়ানমারে সংঘটিত অপরাধের মাত্রা ভয়াবহ এবং সেগুলো অধিকতর তদন্তের দাবি রাখে।
ব্রুক ও ৭ রোহিঙ্গার পক্ষে মামলাটির আইনি লড়াইয়ে আছেন বিশ্বখ্যাত আইনজীবী টমাস ওজেয়া কুইন্টানা।

আরাকানের পরিস্থিতি ভালোভাবে জানা এই আইনজ্ঞ ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত মানবাধিকারের জন্য জাতিসংঘের প্রাক্তন বিশেষ র‌্যাপোর্টার হিসেবে কাজ করাকালীন রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বকে জানিয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক আইনে গুরুত্বপূর্ণ নীতি হিসেবে ‘ইউনিভার্সেল জুরিসডিকশন’ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই স্বীকৃত। ১৯৪৯ এর জেনেভা কনভেনশনে স্বীকৃতি লাভের পাশাপাশি পরবর্তী সময়ে এটি নির্যাতনবিরোধী সনদের (১৯৮৪) মতো আন্তর্জাতিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ সনদে স্থান পেয়েছে। এই নীতির আওতায় আর্জেন্টিনার আদালত অতীতে স্পেনে প্রাক্তন স্বৈরশাসক ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর শাসন এবং চীনে ফালুন গং আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য মামলাগুলি গ্রহণ করেছে।