ঢাকা ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিমের দামে কারসাজি

সিপি ও ডায়মন্ড এগকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৯:৪২:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৪ ৪১ বার পড়া হয়েছে

অস্বাভাবিকভাবে ডিমের মূল্য বৃদ্ধির দায়ে ডায়মন্ড এগ লিমিটেডকে আড়াই কোটি টাকা এবং সিপি বাংলাদেশকে এক কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন।

গত সোমবার হওয়া এ দুই মামলার রায় বুধবার কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করা হয়।

রায়ে বলা হয়, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ডায়মন্ড এগ সমধর্মীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে ২০২২ সালের ৫ অগাস্ট থেকে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত সময়ে তাদের উৎপাদিত ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়েছে, যা ২০১২ সালের প্রতিযোগিতা আইনের ১৫ ধারার (২) উপ-ধারার (ক) দফার (অ) উপ-দফা এবং (খ) দফার লঙ্ঘন।

অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা কমিশনে এটাই প্রথম মামলা। তাই সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ডায়মন্ড এগকে প্রতিযোগিতা আইন অনুযায়ী অপরাধ সংঘটনের আগের তিন অর্থবছরের গড় টার্নওভারের ভিত্তিতে (১০ শতাংশ) দুই কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা প্রশাসনিক অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

রায় ঘোষণার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিযোগিতা কমিশনের সংশ্লিষ্ট খাতে জরিমানার টাকা জমা না দিলে আইন অনুযায়ী প্রতিদিন এক লাখ টাকা হারে জরিমানা যোগ হবে।

সিপি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলার রায়ে বলা হয়, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সিপি বাংলাদেশ সমধর্মীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে ২০২২ সালের ৫ অগাস্ট থেকে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত সময়কালে তাদের উৎপাদিত ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়েছে।

একই প্রক্রিয়ায় তাদের উৎপাদিত ডিমের সরবরাহ এবং বাজার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, যা ২০১২ সালের প্রতিযোগিতা আইনের ১৫ ধারার (২) উপ-ধারার (ক) দফার (অ) উপ-দফা এবং (খ) দফার লঙ্ঘন।

অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা কমিশনে এটাই প্রথম মামলা। তাই সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সিপি বাংলাদেশ কোম্পানিকে প্রতিযোগিতা আইন অনুযায়ী অপরাধ সংঘটনের আগের তিন অর্থবছরের গড় টার্নওভারের ভিত্তিতে (১০ শতাংশ) এক কোটি টাকা প্রশাসনিক অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হল।

রায় ঘোষণার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিযোগিতা কমিশনের সংশ্লিষ্ট খাতে জরিমানার টাকা জমা না দিলে আইন অনুযায়ী প্রতিদিন এক লাখ টাকা হারে জরিমানা গুনতে হবে সিপি বাংলাদেশকে।

২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে আকস্মিকভাবে ফার্মের মুরগির ডিম ও মুরগির দাম বাড়তে থাকে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয় সারা দেশে।

এ নিয়ে খাত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকের আয়োজন করে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। কাজী ফার্ম, সিপি, ডায়মন্ড, নারিশসহ আরও কয়েকটি কোম্পানি যে মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে ডিম ও মুরগির দাম ঠিক করছে, তার প্রমাণ পাওয়া যায় সেখানে।

ভোক্তা অধিকারের পর্যালোচনা প্রতিবেদন ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরকে আমলে নিয়ে কমিশনের নবম সভায় এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়।

অনুসন্ধানে ডায়মন্ড, কাজী ফার্ম, সিপিসহ মোট ছয়টি কোম্পানির বিরুদ্ধে বাজারে ডিমের বিক্রয়মূল্য অস্বাভাবিকভাবে নির্ধারণ এবং বাজারে ডিমের সরবরাহ সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে কমিশনের দশম সভায় এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়।

দীর্ঘ শুনানি শেষে প্রায় আড়াই বছর পর এসব মামলায় রায় দিল প্রতিযোগিতা কমিশন। ইতোমধ্যে প্রথম মামলায় অভিযুক্ত অনেক কোম্পানির বিরুদ্ধি দ্বিতীয় দফায় একই অপরাধে আরেকবার মামলা ও শুনানি শুরু হয়েছে বলে কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

কমিশনের চেয়ারম্যান প্রদীপ রঞ্জন বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অপিল করতে পারবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি। এমনকি তারা আদালতেও যেতে পারেন।

জানতে চাইলে ডায়মন্ড এগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কায়সার আহমেদ বলেন, “আমরা এখনও রায় হাতে পাইনি। হাতে পাওয়ার পর আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ডিমের দামে কারসাজি

সিপি ও ডায়মন্ড এগকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা

আপডেট সময় : ০৯:৪২:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৪

অস্বাভাবিকভাবে ডিমের মূল্য বৃদ্ধির দায়ে ডায়মন্ড এগ লিমিটেডকে আড়াই কোটি টাকা এবং সিপি বাংলাদেশকে এক কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন।

গত সোমবার হওয়া এ দুই মামলার রায় বুধবার কমিশনের ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করা হয়।

রায়ে বলা হয়, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ডায়মন্ড এগ সমধর্মীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে ২০২২ সালের ৫ অগাস্ট থেকে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত সময়ে তাদের উৎপাদিত ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়েছে, যা ২০১২ সালের প্রতিযোগিতা আইনের ১৫ ধারার (২) উপ-ধারার (ক) দফার (অ) উপ-দফা এবং (খ) দফার লঙ্ঘন।

অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা কমিশনে এটাই প্রথম মামলা। তাই সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ডায়মন্ড এগকে প্রতিযোগিতা আইন অনুযায়ী অপরাধ সংঘটনের আগের তিন অর্থবছরের গড় টার্নওভারের ভিত্তিতে (১০ শতাংশ) দুই কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা প্রশাসনিক অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

রায় ঘোষণার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিযোগিতা কমিশনের সংশ্লিষ্ট খাতে জরিমানার টাকা জমা না দিলে আইন অনুযায়ী প্রতিদিন এক লাখ টাকা হারে জরিমানা যোগ হবে।

সিপি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলার রায়ে বলা হয়, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সিপি বাংলাদেশ সমধর্মীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে ২০২২ সালের ৫ অগাস্ট থেকে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত সময়কালে তাদের উৎপাদিত ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়েছে।

একই প্রক্রিয়ায় তাদের উৎপাদিত ডিমের সরবরাহ এবং বাজার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, যা ২০১২ সালের প্রতিযোগিতা আইনের ১৫ ধারার (২) উপ-ধারার (ক) দফার (অ) উপ-দফা এবং (খ) দফার লঙ্ঘন।

অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা কমিশনে এটাই প্রথম মামলা। তাই সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সিপি বাংলাদেশ কোম্পানিকে প্রতিযোগিতা আইন অনুযায়ী অপরাধ সংঘটনের আগের তিন অর্থবছরের গড় টার্নওভারের ভিত্তিতে (১০ শতাংশ) এক কোটি টাকা প্রশাসনিক অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হল।

রায় ঘোষণার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিযোগিতা কমিশনের সংশ্লিষ্ট খাতে জরিমানার টাকা জমা না দিলে আইন অনুযায়ী প্রতিদিন এক লাখ টাকা হারে জরিমানা গুনতে হবে সিপি বাংলাদেশকে।

২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে আকস্মিকভাবে ফার্মের মুরগির ডিম ও মুরগির দাম বাড়তে থাকে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয় সারা দেশে।

এ নিয়ে খাত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকের আয়োজন করে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। কাজী ফার্ম, সিপি, ডায়মন্ড, নারিশসহ আরও কয়েকটি কোম্পানি যে মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে ডিম ও মুরগির দাম ঠিক করছে, তার প্রমাণ পাওয়া যায় সেখানে।

ভোক্তা অধিকারের পর্যালোচনা প্রতিবেদন ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরকে আমলে নিয়ে কমিশনের নবম সভায় এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়।

অনুসন্ধানে ডায়মন্ড, কাজী ফার্ম, সিপিসহ মোট ছয়টি কোম্পানির বিরুদ্ধে বাজারে ডিমের বিক্রয়মূল্য অস্বাভাবিকভাবে নির্ধারণ এবং বাজারে ডিমের সরবরাহ সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে কমিশনের দশম সভায় এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়।

দীর্ঘ শুনানি শেষে প্রায় আড়াই বছর পর এসব মামলায় রায় দিল প্রতিযোগিতা কমিশন। ইতোমধ্যে প্রথম মামলায় অভিযুক্ত অনেক কোম্পানির বিরুদ্ধি দ্বিতীয় দফায় একই অপরাধে আরেকবার মামলা ও শুনানি শুরু হয়েছে বলে কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

কমিশনের চেয়ারম্যান প্রদীপ রঞ্জন বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অপিল করতে পারবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি। এমনকি তারা আদালতেও যেতে পারেন।

জানতে চাইলে ডায়মন্ড এগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কায়সার আহমেদ বলেন, “আমরা এখনও রায় হাতে পাইনি। হাতে পাওয়ার পর আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”