ঢাকা ১০:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদ্মার বুকে চাষবাদ, জেগে উঠা পদ্মার চর মাটিকাটা ইউনিয়নে অর্ন্তভুক্তের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক//
  • আপডেট সময় : ০৪:৪১:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩ ১৪৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শুষ্ক মৌসুমে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি শুকিয়ে যায়। বর্ষার সময়ে স্বরুপে ফিরে আসলেও তার স্থায়িত্ব থাকে না বেশি দিন। তাই এ মৌসুমে পদ্মার বুকে জেগে ওঠে চর। আর তাতেই চলে চাষাবাদ। পদ্মা পাড়ের শত শত কৃষক জেগে উঠা চরে পেয়াজ, ভুট্টা, শরিষা, আলু, টমেটো, কপি, পটল, মসুর, চিনা, ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে আসছে। পদ্মার বুকে নির্মলচক, দক্ষিন নির্মলচর, নয়া খরিদা বাবুপুর, সেখের চর, এলাহী নগর, হুনমন্ত নগর, চর নওসেরা, রচ খাসমহল, চর কুমারপুর, আষাঢ়িয়াদহ খাসমহলসহ বিভিন্ন মোজায় প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে চর জেগে উঠলে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমি প্রতি বছর এসব ফসল চাষ করে ৬ নং মাটিকাটা ইউনিয়নের প্রেমতলী, সেখের পাড়া,বারমাইল, বিদিরপুর, পিরিজিপুর, হরিশংকরপুর, ভাটোপাড়া, কদমহাজির মোড়, উজানপাড়া ও মাটিকাটা এলাকার পদ্মা পাড়ের কৃষকরা। পদ্মার বুকে জেগে উঠা চরে চাষবাদ করে মাটিকাটা ইউনিয়নের চাষিরা। চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নের চারিরা এ জেগে উঠা চরে চাষবাদ করে না।
পদ্মা পাড়ের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ১০ বছর ধরে গোদাগাড়ীতে পদ্মার বুকে জেগে উঠা চরে চাষাবাদ করা হয় আবাদি ফসল। সেখানে রীতিমতো ধান, গম, মসুর, ভুট্টা, শরিষা, আলু, টমেটো, কপি, পটল, খেসারি, মটরসহ নানা ধরনের শাকসবজি চাষ করা হচ্ছে। এর ফলে বেড়েছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
এদিকে জেগে ওঠা পদ্মার চর ভরে গেছে ধানের বীজতলায়। আবাদি জমিতে বীজতলা তৈরি করতে খরচ বেশি হয়। তাছাড়াও, বীজতলা তৈরি জমির সংকটও দেখা দেয়। কিন্তু পদ্মা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে বীজতলা তৈরি করতে খরচ কম ও বীজ থেকে চারা ভালো হয়। তাই কৃষকরা পদ্মার বুকে জেগে ওঠা চরে তৈরি করেছে বীজতলা।
পদ্মা পাড়ের কৃষক সানোয়ার বলেন, পদ্মা নদীতে জেগে উঠা চরে ২ বিঘা জমিতে শরিষার আবাদ করা হয়েছে। আরেক কৃষক দুলাল বলেন, আমি জেগে উঠা পদ্মার চরে সবজি আবাদ করেছি। কৃষক ফেন্সু বলেন, পটল চাষ করে ছিলাম। এবার ধান চাষের জন্য বীজতলা তৈরী করেছি। ধান চাষ করবো।
জানা যায়, এই দেড় হাজার হেক্টোর পদ্মা বুকে জেগে উঠা চরের জন্য রাসায়নিক সার চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নের ডিলার গোদাগাড়ী পৌর সভায় অবস্থীত কৃষিঘরের নামের অন্তভুক্ত করা আছে। এলাকার কৃষকদের নিজ ইউনিয়ন ছেড়ে গোদাগাড়ী পৌর সভায় কৃষিঘরে সার আনতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই এ এলাকার কৃষকদের দাবি জেগে উঠা পদ্মার চর সারের জন্য মাটিকাটা ইউনিয়নের মধ্যে অর্šÍভুক্ত করা হোক।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, যে জমিতে আবাদ হবে সেই জমি আবাদি জমি। পদ্মা নদীতে জেগে উঠা চরে আবাদ হচ্ছে। কৃষকরা তাদের নিজ এলাকার ডিলারদের কাছ থেকে রাসায়নিক সার নিতে পারবে।
এবিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজশাহীর উপ পরিচালক মোঃ মোসদার হোসেন বলেন, পদ্মায় জেগে উঠা চরে যে সকল কৃষকরা ফসল চাষ করছে তারা তাদের নিজ এলাকা মাটিকাটা ইউনিয়নে যে ডিলার আছে সেখান থেকে সার নিতে পারবে। কৃষকরা যে কোন ডিলারের কাছ থেকে সার নিতে পারবে। এতে তাদের কোন অসুবিধা হবে না। সকল ডিলার তাদের সার দিবে। যদি কোন ডিলার সার না দেয় কৃষকরা আমাকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পদ্মার বুকে চাষবাদ, জেগে উঠা পদ্মার চর মাটিকাটা ইউনিয়নে অর্ন্তভুক্তের দাবি

আপডেট সময় : ০৪:৪১:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শুষ্ক মৌসুমে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ীতে পদ্মা নদীর পানি শুকিয়ে যায়। বর্ষার সময়ে স্বরুপে ফিরে আসলেও তার স্থায়িত্ব থাকে না বেশি দিন। তাই এ মৌসুমে পদ্মার বুকে জেগে ওঠে চর। আর তাতেই চলে চাষাবাদ। পদ্মা পাড়ের শত শত কৃষক জেগে উঠা চরে পেয়াজ, ভুট্টা, শরিষা, আলু, টমেটো, কপি, পটল, মসুর, চিনা, ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে আসছে। পদ্মার বুকে নির্মলচক, দক্ষিন নির্মলচর, নয়া খরিদা বাবুপুর, সেখের চর, এলাহী নগর, হুনমন্ত নগর, চর নওসেরা, রচ খাসমহল, চর কুমারপুর, আষাঢ়িয়াদহ খাসমহলসহ বিভিন্ন মোজায় প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে চর জেগে উঠলে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমি প্রতি বছর এসব ফসল চাষ করে ৬ নং মাটিকাটা ইউনিয়নের প্রেমতলী, সেখের পাড়া,বারমাইল, বিদিরপুর, পিরিজিপুর, হরিশংকরপুর, ভাটোপাড়া, কদমহাজির মোড়, উজানপাড়া ও মাটিকাটা এলাকার পদ্মা পাড়ের কৃষকরা। পদ্মার বুকে জেগে উঠা চরে চাষবাদ করে মাটিকাটা ইউনিয়নের চাষিরা। চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নের চারিরা এ জেগে উঠা চরে চাষবাদ করে না।
পদ্মা পাড়ের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ১০ বছর ধরে গোদাগাড়ীতে পদ্মার বুকে জেগে উঠা চরে চাষাবাদ করা হয় আবাদি ফসল। সেখানে রীতিমতো ধান, গম, মসুর, ভুট্টা, শরিষা, আলু, টমেটো, কপি, পটল, খেসারি, মটরসহ নানা ধরনের শাকসবজি চাষ করা হচ্ছে। এর ফলে বেড়েছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
এদিকে জেগে ওঠা পদ্মার চর ভরে গেছে ধানের বীজতলায়। আবাদি জমিতে বীজতলা তৈরি করতে খরচ বেশি হয়। তাছাড়াও, বীজতলা তৈরি জমির সংকটও দেখা দেয়। কিন্তু পদ্মা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে বীজতলা তৈরি করতে খরচ কম ও বীজ থেকে চারা ভালো হয়। তাই কৃষকরা পদ্মার বুকে জেগে ওঠা চরে তৈরি করেছে বীজতলা।
পদ্মা পাড়ের কৃষক সানোয়ার বলেন, পদ্মা নদীতে জেগে উঠা চরে ২ বিঘা জমিতে শরিষার আবাদ করা হয়েছে। আরেক কৃষক দুলাল বলেন, আমি জেগে উঠা পদ্মার চরে সবজি আবাদ করেছি। কৃষক ফেন্সু বলেন, পটল চাষ করে ছিলাম। এবার ধান চাষের জন্য বীজতলা তৈরী করেছি। ধান চাষ করবো।
জানা যায়, এই দেড় হাজার হেক্টোর পদ্মা বুকে জেগে উঠা চরের জন্য রাসায়নিক সার চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নের ডিলার গোদাগাড়ী পৌর সভায় অবস্থীত কৃষিঘরের নামের অন্তভুক্ত করা আছে। এলাকার কৃষকদের নিজ ইউনিয়ন ছেড়ে গোদাগাড়ী পৌর সভায় কৃষিঘরে সার আনতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই এ এলাকার কৃষকদের দাবি জেগে উঠা পদ্মার চর সারের জন্য মাটিকাটা ইউনিয়নের মধ্যে অর্šÍভুক্ত করা হোক।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, যে জমিতে আবাদ হবে সেই জমি আবাদি জমি। পদ্মা নদীতে জেগে উঠা চরে আবাদ হচ্ছে। কৃষকরা তাদের নিজ এলাকার ডিলারদের কাছ থেকে রাসায়নিক সার নিতে পারবে।
এবিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজশাহীর উপ পরিচালক মোঃ মোসদার হোসেন বলেন, পদ্মায় জেগে উঠা চরে যে সকল কৃষকরা ফসল চাষ করছে তারা তাদের নিজ এলাকা মাটিকাটা ইউনিয়নে যে ডিলার আছে সেখান থেকে সার নিতে পারবে। কৃষকরা যে কোন ডিলারের কাছ থেকে সার নিতে পারবে। এতে তাদের কোন অসুবিধা হবে না। সকল ডিলার তাদের সার দিবে। যদি কোন ডিলার সার না দেয় কৃষকরা আমাকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।