ঢাকা ০২:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিশিষ্টজনদের কথা বলার আহ্বান ফখরুলের

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৪:০৪:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৩ ৭৯ বার পড়া হয়েছে

দেশের বিশিষ্টজন ও রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। এর আগে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনকারী ১২ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে ও বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

ফখরুল বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, আজকে একটি ওয়েবিনারে বিশিষ্টজনরাও বলেছে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচন ব্যবস্থা এটা দেশের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা ছিলো। ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ যেদিন সংসদে এই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করেছিলো, সেইদিন বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলো-বাংলাদেশে চিরস্থায়ীভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। দেশে একটা অস্থিতিশীলতা, অনিশ্চতার দ্বার উম্মুক্ত করা হলো। আজকে সেই কথা প্রমাণিত হয়েছে। আজকে আওয়ামী লীগ গোটা দেশ-জাতিকে অশান্তকর অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এই দেশের মানুষ জানে যে কি হবে। দেশের মানুষ জানে না তার ভোট দিতে পারবে কিনা।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা অতীতে যে কাজগুলো করেছে, তাতে প্রমাণ হয়েছে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। দুই, এখানে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না। এই জিনিসগুলো আমাদেরকে বলতে হচ্ছে। আমরা আরও খুশি হতাম- যদি এই জিনিসগুলো নিয়ে দেশের আরও বিশিষ্টজন, রাজনৈতিক দল, সংগঠনগুলো সত্যিকার অর্থে কথা বলতেন। তাদেরকে আহ্বান জানাবো কথা বলেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনের দিকে নেওয়ার জন্য।’
আওয়ামী লীগ সব সময় বিএনপির প্রোগ্রামের তিন দিন আগে থেকে ধর্মঘট করে দেয় বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘তিন দিন আগে থেকে পুলিশকে নামিয়ে দিয়ে রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে মোবাইল পর্যন্ত চেক করতে থাকে। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের আগে তারা ১৫ দিন বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় রেট করে হাজার-হাজার ছেলে-মেয়ে ধরে নিয়ে গেছে। এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের কৌশল। যে কোনও মূল্যে হোক তারা বিরোধী দলকে কর্মসূচি করতে দিবে না। ভিন্নমত সহ্য করবে না। আর নিজেদেরটা করতেই থাকবে। সেক্ষেত্রে তারা রাষ্ট্রের সমস্ত যন্ত্রগুলোকে ব্যবহার করবে।’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্যান্য দলগুলো বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করার কারণে তা অবশ্যই ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। মানুষের মধ্যে আস্থা পেয়েছে যে বিভিন্ন দলগুলো একসঙ্গে হয়ে মানুষের অধিকার আদায়ে লড়াই করছে। তারা এখানে সম্পৃক্ত হচ্ছে।’

বৈঠকে চলমান আন্দোলন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ভবিষ্যৎ কর্মসূচি কি হওয়া উচিত, আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য, জনগণকে সম্পৃক্ত করার জন্য কি ধরণের কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে সেই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছি। আমরা একমত হয়েছি যুগপৎ আন্দোলনকে জোরদার করে আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা।’

বিএনপির জনসভার সময় ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়, আর প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দেওয়ার জন্য ৭ টি বিশেষ ট্রেন রাখা হয়েছে- সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে বেশি কথা বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। গোটা জনগণের কাছে আওয়ামী লীগ সরকারের চরিত্র, তাদের কর্মকাণ্ড স্পষ্ট হয়ে গেছে।’

আওয়ামী লীগ সব সময় ডাবল স্ট্যান্ডার্ড পার্ট বলে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তারা সব সময় মুখে এক কথা বলে, আর করে আরেকটা। আওয়ামী লীগ এদেশে সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে, দেশের মানুষের যে চরিত্র, বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, বহুমাত্রিক যে সমাজ ব্যবস্থা, সেটাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।’

বৈঠকে ১২ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে অংশ নেয়-জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান মে.জে. (অব:) সৈয়দ মুহম্মাদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ জাতীয় দল চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপি চেয়ারম্যান মো: আবু তাহের, জমিয়তে ওলামায় ইসলামের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপা সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ইসলামি ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের যুগ্ম মহাসচিব মো. তফাজ্জল হোসেন।

আর বিএনপি লিয়াঁজো কমিটির সদস্য স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ শাহজাহান ও আব্দুল আউয়াল মিন্টু অংশ নেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিশিষ্টজনদের কথা বলার আহ্বান ফখরুলের

আপডেট সময় : ০৪:০৪:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৩

দেশের বিশিষ্টজন ও রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। এর আগে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনকারী ১২ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে ও বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

ফখরুল বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, আজকে একটি ওয়েবিনারে বিশিষ্টজনরাও বলেছে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচন ব্যবস্থা এটা দেশের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা ছিলো। ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ যেদিন সংসদে এই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করেছিলো, সেইদিন বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলো-বাংলাদেশে চিরস্থায়ীভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। দেশে একটা অস্থিতিশীলতা, অনিশ্চতার দ্বার উম্মুক্ত করা হলো। আজকে সেই কথা প্রমাণিত হয়েছে। আজকে আওয়ামী লীগ গোটা দেশ-জাতিকে অশান্তকর অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এই দেশের মানুষ জানে যে কি হবে। দেশের মানুষ জানে না তার ভোট দিতে পারবে কিনা।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা অতীতে যে কাজগুলো করেছে, তাতে প্রমাণ হয়েছে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। দুই, এখানে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না। এই জিনিসগুলো আমাদেরকে বলতে হচ্ছে। আমরা আরও খুশি হতাম- যদি এই জিনিসগুলো নিয়ে দেশের আরও বিশিষ্টজন, রাজনৈতিক দল, সংগঠনগুলো সত্যিকার অর্থে কথা বলতেন। তাদেরকে আহ্বান জানাবো কথা বলেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনের দিকে নেওয়ার জন্য।’
আওয়ামী লীগ সব সময় বিএনপির প্রোগ্রামের তিন দিন আগে থেকে ধর্মঘট করে দেয় বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘তিন দিন আগে থেকে পুলিশকে নামিয়ে দিয়ে রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে মোবাইল পর্যন্ত চেক করতে থাকে। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের আগে তারা ১৫ দিন বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় রেট করে হাজার-হাজার ছেলে-মেয়ে ধরে নিয়ে গেছে। এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের কৌশল। যে কোনও মূল্যে হোক তারা বিরোধী দলকে কর্মসূচি করতে দিবে না। ভিন্নমত সহ্য করবে না। আর নিজেদেরটা করতেই থাকবে। সেক্ষেত্রে তারা রাষ্ট্রের সমস্ত যন্ত্রগুলোকে ব্যবহার করবে।’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্যান্য দলগুলো বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করার কারণে তা অবশ্যই ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। মানুষের মধ্যে আস্থা পেয়েছে যে বিভিন্ন দলগুলো একসঙ্গে হয়ে মানুষের অধিকার আদায়ে লড়াই করছে। তারা এখানে সম্পৃক্ত হচ্ছে।’

বৈঠকে চলমান আন্দোলন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ভবিষ্যৎ কর্মসূচি কি হওয়া উচিত, আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য, জনগণকে সম্পৃক্ত করার জন্য কি ধরণের কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে সেই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছি। আমরা একমত হয়েছি যুগপৎ আন্দোলনকে জোরদার করে আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা।’

বিএনপির জনসভার সময় ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়, আর প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দেওয়ার জন্য ৭ টি বিশেষ ট্রেন রাখা হয়েছে- সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে বেশি কথা বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। গোটা জনগণের কাছে আওয়ামী লীগ সরকারের চরিত্র, তাদের কর্মকাণ্ড স্পষ্ট হয়ে গেছে।’

আওয়ামী লীগ সব সময় ডাবল স্ট্যান্ডার্ড পার্ট বলে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তারা সব সময় মুখে এক কথা বলে, আর করে আরেকটা। আওয়ামী লীগ এদেশে সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে, দেশের মানুষের যে চরিত্র, বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, বহুমাত্রিক যে সমাজ ব্যবস্থা, সেটাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।’

বৈঠকে ১২ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে অংশ নেয়-জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান মে.জে. (অব:) সৈয়দ মুহম্মাদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ জাতীয় দল চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপি চেয়ারম্যান মো: আবু তাহের, জমিয়তে ওলামায় ইসলামের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপা সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ইসলামি ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের যুগ্ম মহাসচিব মো. তফাজ্জল হোসেন।

আর বিএনপি লিয়াঁজো কমিটির সদস্য স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ শাহজাহান ও আব্দুল আউয়াল মিন্টু অংশ নেয়।