ঢাকা ০৮:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিসংখ্যান ব্যবস্থার উন্নয়ন,স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন”

লেখকঃ অতনু সরকার
  • আপডেট সময় : ০৩:১৭:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ৩১৩ বার পড়া হয়েছে

লেখকঃ অতনু সরকার

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চৌকস নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আজ আমরা এই স্বাধীন সোনার বাংলা অর্জন করেছি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধাহত বাংলাদেশে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, উন্নয়ন ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিসংখ্যান কার্যক্রমে নিয়োজিত চারটি পৃথক সংস্থাকে একীভূত ও সুসমন্বিত করে ১৯৭৪ সালে বিবিএস প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে বিবিএস-এর সার্বিক কর্মকাণ্ড সমন্বয়, তত্ত্বাবধান ও সাচিবিক সহযোগিতা দেওয়ার জন্য ১৯৭৫ সালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠা করা হয় পরিসংখ্যান বিভাগ।
সময়োচিত, বস্তুনিষ্ঠ ও মানসম্মত পরিসংখ্যান সরবরাহের লক্ষ্যে “ পরিসংখ্যান আইন-২০১৩” ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মহান জাতীয় সংসদে পাশ করা হয় । যার ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ৮ জুন মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রতিবছর ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে পরিসংখ্যান দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বাংলাদেশে পরিসংখ্যানের গুরুত্বের সহায়ক স্বরূপ আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে সমগ্র বাংলাদেশে একযোগে “পরিসংখ্যান ব্যবস্থার উন্নয়ন,স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন” শ্লোগানকে সামনে রেখে তৃতীয় বারের মত পালিত হচ্ছে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস।
“পরিসংখ্যান আইন-২০১৩” এর বদৌলতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপর অর্পিত অফিসিয়াল পরিসংখ্যান প্রণয়নের দায়িত্ব আরো বেশি গুরুত্ব পায়। সঠিক পরিসংখ্যান একটি দেশের উন্নয়ন ও পরিকল্পনাকে ত্বরান্বিত করে। সঠিক ও মান সম্পন্ন পরিসংখ্যান ব্যতীত দেশের উন্নয়নকল্পে গৃহীত পরিকল্পনা ফলপ্রসু করা সম্ভব নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের যে সংকল্প নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার তার অন্যতম সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে আসছে বিবিএস। বিবিএস প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ০৬ (ছয়) টি জনশুমারি, ০৪ (চার) টি কৃষিশুমারি, ০৩ (তিন) টি অর্থনৈতিকশুমারি, ০১ (এক) টি তাঁতশুমারি ও বিভিন্ন জরিপকার্যক্রম সম্পাদন করে আসছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের ১ম ডিজিটাল শুমারি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০২২ খ্রিস্টাব্দে অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছে। “জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২” এর কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় “Computer Assisted Personal Interviewing (CAPI)” পদ্ধতিতে, যার মাধ্যমে সঠিক, সময়োচিত ও বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যান প্রদানে বিবিএস আরো একধাপ এগিয়ে গিয়েছে। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের দ্বারা মাঠ পর্যায় হতে সংগ্রহীত গুনগত পরিসংখ্যান খুবই অল্প সময়ের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রধান ভূমিকা রাখতে প্রদান করা হয়েছে। সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরতে ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি)-২০১৫ অর্জনে বিবিএস ইতোমধ্যে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ (এসআইডি) সরকারকে এসডিজি’র ২৩২ টি সূচকের মধ্যে ১৫৬টি সূচক এর তথ্য সরবারহ করছে।
আধুনিক ও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১২ ডিসেম্বর ২০২২ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে প্রধান অতিথির ভাষণে সর্ব প্রথম “স্মার্ট বাংলাদেশ” গড়ার কথা বলেন। আমরা সময়োপযোগী সঠিক পরিসংখ্যানের সাহায্যে ২০৪১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো সঠিক, সময়োচিত ও বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যান প্রদানে ইতোপূর্বে কাজ শুরু করে দিয়েছে এর সাথে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি। ভবিষ্যতে বিবিএস মানসম্মত নিখুঁত পরিসংখ্যান প্রণয়ন করে উন্নয়নে ও অগ্রগতিতে অধিকতর ভূমিকা রাখবে মহান সৃষ্টি কর্তার কাছে এই কামনাই করছি।

লেখকঃ অতনু সরকার
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পরিসংখ্যান ব্যবস্থার উন্নয়ন,স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন”

আপডেট সময় : ০৩:১৭:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চৌকস নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আজ আমরা এই স্বাধীন সোনার বাংলা অর্জন করেছি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধাহত বাংলাদেশে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, উন্নয়ন ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিসংখ্যান কার্যক্রমে নিয়োজিত চারটি পৃথক সংস্থাকে একীভূত ও সুসমন্বিত করে ১৯৭৪ সালে বিবিএস প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে বিবিএস-এর সার্বিক কর্মকাণ্ড সমন্বয়, তত্ত্বাবধান ও সাচিবিক সহযোগিতা দেওয়ার জন্য ১৯৭৫ সালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠা করা হয় পরিসংখ্যান বিভাগ।
সময়োচিত, বস্তুনিষ্ঠ ও মানসম্মত পরিসংখ্যান সরবরাহের লক্ষ্যে “ পরিসংখ্যান আইন-২০১৩” ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মহান জাতীয় সংসদে পাশ করা হয় । যার ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ৮ জুন মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রতিবছর ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে পরিসংখ্যান দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বাংলাদেশে পরিসংখ্যানের গুরুত্বের সহায়ক স্বরূপ আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে সমগ্র বাংলাদেশে একযোগে “পরিসংখ্যান ব্যবস্থার উন্নয়ন,স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন” শ্লোগানকে সামনে রেখে তৃতীয় বারের মত পালিত হচ্ছে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস।
“পরিসংখ্যান আইন-২০১৩” এর বদৌলতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপর অর্পিত অফিসিয়াল পরিসংখ্যান প্রণয়নের দায়িত্ব আরো বেশি গুরুত্ব পায়। সঠিক পরিসংখ্যান একটি দেশের উন্নয়ন ও পরিকল্পনাকে ত্বরান্বিত করে। সঠিক ও মান সম্পন্ন পরিসংখ্যান ব্যতীত দেশের উন্নয়নকল্পে গৃহীত পরিকল্পনা ফলপ্রসু করা সম্ভব নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের যে সংকল্প নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার তার অন্যতম সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে আসছে বিবিএস। বিবিএস প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ০৬ (ছয়) টি জনশুমারি, ০৪ (চার) টি কৃষিশুমারি, ০৩ (তিন) টি অর্থনৈতিকশুমারি, ০১ (এক) টি তাঁতশুমারি ও বিভিন্ন জরিপকার্যক্রম সম্পাদন করে আসছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের ১ম ডিজিটাল শুমারি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০২২ খ্রিস্টাব্দে অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছে। “জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২” এর কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় “Computer Assisted Personal Interviewing (CAPI)” পদ্ধতিতে, যার মাধ্যমে সঠিক, সময়োচিত ও বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যান প্রদানে বিবিএস আরো একধাপ এগিয়ে গিয়েছে। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের দ্বারা মাঠ পর্যায় হতে সংগ্রহীত গুনগত পরিসংখ্যান খুবই অল্প সময়ের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রধান ভূমিকা রাখতে প্রদান করা হয়েছে। সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরতে ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি)-২০১৫ অর্জনে বিবিএস ইতোমধ্যে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ অর্জনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ (এসআইডি) সরকারকে এসডিজি’র ২৩২ টি সূচকের মধ্যে ১৫৬টি সূচক এর তথ্য সরবারহ করছে।
আধুনিক ও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১২ ডিসেম্বর ২০২২ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে প্রধান অতিথির ভাষণে সর্ব প্রথম “স্মার্ট বাংলাদেশ” গড়ার কথা বলেন। আমরা সময়োপযোগী সঠিক পরিসংখ্যানের সাহায্যে ২০৪১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো সঠিক, সময়োচিত ও বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যান প্রদানে ইতোপূর্বে কাজ শুরু করে দিয়েছে এর সাথে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি। ভবিষ্যতে বিবিএস মানসম্মত নিখুঁত পরিসংখ্যান প্রণয়ন করে উন্নয়নে ও অগ্রগতিতে অধিকতর ভূমিকা রাখবে মহান সৃষ্টি কর্তার কাছে এই কামনাই করছি।

লেখকঃ অতনু সরকার
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।