ঢাকা ০২:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের অনন্য অবদান রয়েছে : শরীফ উদ্দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জে হঠাৎ করেই চালের বাজার অস্থির, কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৮ টাকা দুর্গাপুর সীমান্ত দিয়ে আরও ২১ জনকে বাংলাদেশে পুশইন রাজস্ব আদায় কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়ার নির্দেশ এনবিআর চেয়ারম্যানের পুরো সংসদীয় আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা চায় ইসি একযোগে ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠাল সরকার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ বাংলাদেশি-রোহিঙ্গা সন্দেহে ভারতে ৪৪৪ জনকে আটক সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশ বাস্তবায়নে ডিএমপির সহযোগিতা চেয়েছে জামায়াত নির্বাচনের প্রস্তুতির নির্দেশ, প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ ফখরুলের

স্মার্টলি লুটপাটের বাজেট দিয়েছে সরকার : আমির খসরু

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৭:২৭:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩ ১০৯ বার পড়া হয়েছে

সরকার লুটপাটের জন্য ঋণ করে ঘি খাওয়ার বড় বাজেট দিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আওয়ামী অর্থনীতি বাস্তবায়নে স্মার্টলি লুটপাটের জন্য বাজেট দিয়েছে সরকার। ঋণ করে ঘি খাওয়ার জন্য এত বড় বাজেট দেওয়া হয়েছে। এর বোঝা জনগণকে বইতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেলে রাজধানীর বনানীর নিজ বাড়িতে তাৎক্ষণিক এক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি।

সাংবাদিকদের বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় তার বাড়িতে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা অবস্থান করছেন জানিয়ে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আমির খসরু।

তিনি বলেন, এ ধরনের একটা সরকার দেশের জন্য কী ধরনের বাজেট দেবে তা বোঝাই যাচ্ছে। বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়া শুনতেও রাজি নয় তারা।

সরকার লাখ-লাখ কোটি টাকা বিদেশে প্রচার করছে বলে দাবি করে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, অথচ দেশে রিজার্ভের টাকা নেই।

সাধারণ মানুষ অনেকে আজ ঋণ করে চলছেন দাবি করে খসরু বলেন, তাদের সঞ্চয় শেষ হয়ে গেছে। অনেকে দুই বেলার জায়গায় একবেলা খেয়ে থাকছে।

নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও বাড়াবে দাবি করে তিনি বলেন, এই বাজেট হচ্ছে প্যাট্রন ক্লাইন্ট রিলেশনশিপ অর্থাৎ পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতি। রেনসিংকি অর্থাৎ ভাড়া দিতে হবে, চাঁদা দিতে হবে, কমিশন দিতে হবে… এর মাধ্যমে অর্থনীতি চলতে হবে। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে লুটপাটের জন্য সংঘটিতভাবে তৈরি করে দিয়েছে, এরাও লুটপাটের অংশীদার হয়ে গেছে।

প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য কি না– প্রশ্ন করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, এই বাজেট সরকার দিচ্ছে না আইএমএফ দিচ্ছে সেটাও তো দেখার বিষয়। আইএমএফ যে গাইড লাইনগুলো দিচ্ছে তারা তো সুনিশ্চিতভাবে বলেছে, কি কি করতে হবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি কি কারণে আজ নিম্ন পর্যায় এসে নেমেছে।

আমির খসরু বলেন, এসব কারেক্ট করার জন্য আইএমএফের যে শর্ত, এই শর্ত মেনে চলছে। মূলত আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী তাদেরকে বাজেট দিতে হবে। আবার তার বাইরে যদি তারা অব্যাহতভাবে লুটপাটের অর্থনীতি, পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতি যদি চলতে থাকে, সেটা অন্যকথা। সরকার তো বিপদে আছে… আইএমএফের শর্ত না মানলে এদিকে বাজেট সাপোর্ট থাকে না, আইএমএফের শর্ত মানলে তাদের লুটপাটের পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতি বাধাগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় সরকার অর্থনীতিকে যে জায়গায় নিয়ে গেছে, সেখান থেকে বের হতে হলে এটার রাজনৈতিক সমাধান হতে হবে। রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত একটি সংসদ, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে ও জবাবদিহি থাকবে।

সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ খাতে প্রস্তাবিত বরাদ্দ যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন তিনি। বলেন, বাজেট কী? বাজেট হচ্ছে জনগণের চিন্তার প্রতিফলন, বাজেট কী? বাজেট হচ্ছে রাজনীতির চিন্তার প্রতিফলন। আজ যেখানে অবৈধ দখলদার সরকার বসে আছে, তাদের তো রাজনীতির চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে না। তাদের নিজেদের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে, তাদের তো সাধারণ মানুষের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে না।

আমির খসরু বলেন, আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতিতে গত ৩০ বছরে যে স্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছিলাম সেটা এই সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। একটা দলীয় চিন্তার ভিত্তিতে পৃষ্ঠপোষকতার লুটপাটের অর্থনীতির মডেল তৈরি করে এটা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, আজ ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শিরোনামে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিকেল ৩টায় তিনি ডিজিটাল উপস্থাপনার মাধ্যমে বাজেট পেশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন।

প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঠিক করা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

স্মার্টলি লুটপাটের বাজেট দিয়েছে সরকার : আমির খসরু

আপডেট সময় : ০৭:২৭:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩

সরকার লুটপাটের জন্য ঋণ করে ঘি খাওয়ার বড় বাজেট দিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আওয়ামী অর্থনীতি বাস্তবায়নে স্মার্টলি লুটপাটের জন্য বাজেট দিয়েছে সরকার। ঋণ করে ঘি খাওয়ার জন্য এত বড় বাজেট দেওয়া হয়েছে। এর বোঝা জনগণকে বইতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেলে রাজধানীর বনানীর নিজ বাড়িতে তাৎক্ষণিক এক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি।

সাংবাদিকদের বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় তার বাড়িতে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা অবস্থান করছেন জানিয়ে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আমির খসরু।

তিনি বলেন, এ ধরনের একটা সরকার দেশের জন্য কী ধরনের বাজেট দেবে তা বোঝাই যাচ্ছে। বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়া শুনতেও রাজি নয় তারা।

সরকার লাখ-লাখ কোটি টাকা বিদেশে প্রচার করছে বলে দাবি করে সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, অথচ দেশে রিজার্ভের টাকা নেই।

সাধারণ মানুষ অনেকে আজ ঋণ করে চলছেন দাবি করে খসরু বলেন, তাদের সঞ্চয় শেষ হয়ে গেছে। অনেকে দুই বেলার জায়গায় একবেলা খেয়ে থাকছে।

নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও বাড়াবে দাবি করে তিনি বলেন, এই বাজেট হচ্ছে প্যাট্রন ক্লাইন্ট রিলেশনশিপ অর্থাৎ পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতি। রেনসিংকি অর্থাৎ ভাড়া দিতে হবে, চাঁদা দিতে হবে, কমিশন দিতে হবে… এর মাধ্যমে অর্থনীতি চলতে হবে। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে লুটপাটের জন্য সংঘটিতভাবে তৈরি করে দিয়েছে, এরাও লুটপাটের অংশীদার হয়ে গেছে।

প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য কি না– প্রশ্ন করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, এই বাজেট সরকার দিচ্ছে না আইএমএফ দিচ্ছে সেটাও তো দেখার বিষয়। আইএমএফ যে গাইড লাইনগুলো দিচ্ছে তারা তো সুনিশ্চিতভাবে বলেছে, কি কি করতে হবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি কি কারণে আজ নিম্ন পর্যায় এসে নেমেছে।

আমির খসরু বলেন, এসব কারেক্ট করার জন্য আইএমএফের যে শর্ত, এই শর্ত মেনে চলছে। মূলত আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী তাদেরকে বাজেট দিতে হবে। আবার তার বাইরে যদি তারা অব্যাহতভাবে লুটপাটের অর্থনীতি, পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতি যদি চলতে থাকে, সেটা অন্যকথা। সরকার তো বিপদে আছে… আইএমএফের শর্ত না মানলে এদিকে বাজেট সাপোর্ট থাকে না, আইএমএফের শর্ত মানলে তাদের লুটপাটের পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতি বাধাগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় সরকার অর্থনীতিকে যে জায়গায় নিয়ে গেছে, সেখান থেকে বের হতে হলে এটার রাজনৈতিক সমাধান হতে হবে। রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত একটি সংসদ, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে ও জবাবদিহি থাকবে।

সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ খাতে প্রস্তাবিত বরাদ্দ যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন তিনি। বলেন, বাজেট কী? বাজেট হচ্ছে জনগণের চিন্তার প্রতিফলন, বাজেট কী? বাজেট হচ্ছে রাজনীতির চিন্তার প্রতিফলন। আজ যেখানে অবৈধ দখলদার সরকার বসে আছে, তাদের তো রাজনীতির চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে না। তাদের নিজেদের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে, তাদের তো সাধারণ মানুষের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে না।

আমির খসরু বলেন, আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতিতে গত ৩০ বছরে যে স্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছিলাম সেটা এই সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। একটা দলীয় চিন্তার ভিত্তিতে পৃষ্ঠপোষকতার লুটপাটের অর্থনীতির মডেল তৈরি করে এটা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, আজ ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শিরোনামে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিকেল ৩টায় তিনি ডিজিটাল উপস্থাপনার মাধ্যমে বাজেট পেশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন।

প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঠিক করা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ।