ঢাকা ০১:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুপ্রিম কোর্ট বারে নতুন করে নির্বাচন দাবি বিএনপির

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৯:২৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩ ৭৯ বার পড়া হয়েছে

পুনরায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তিনি।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ইস্যু নিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের ঘটনায় প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, তারই একটি প্রমাণ আবার দেখছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাব- বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য ন্যূনতম যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে সে প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করার জন্য সকলকে এগিয়ে আসা দরকার। অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টের যে তথাকথিত নির্বাচন তা বাতিল করে আবার নতুন করে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, আমরা বারবার বলেছি- আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচনই সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগের চরিত্রই হচ্ছে তারা বারবার জোর করে ক্ষমতায় যাবে। যখন তারা ক্ষমতায় থাকবে তাদের অধীনে যে নির্বাচন হবে সেটা তারা নিয়ন্ত্রণে নেবে। তাদের মতো করে তারা তাদের প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করবে। সুতরাং যারা মধ্যযুগীয় বর্বরতার মধ্যে চলে গেছে কোনোমতেই তাদের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে লক্ষ্য করেছি যে, দেশের অন্য সকল নির্বাচনের মতো সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সমিতির নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যে রাজনৈতিক চরিত্র, তার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

আইনগতভাবে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলেও নির্বাচনের নাটক সাজিয়ে একতরফাভাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের অবৈধভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।

ফখরুল বলেন, আমরা সবসময় বলে আসছি যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের ছত্র-ছায়ায় দেশের কোথাও কোনো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় নির্বাচনে ইতোপূর্বে বারবার প্রমাণিত হয়েছে। সর্বশেষ প্রমাণ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। এর আগে ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনেও একই ধরনের প্রহসনের নির্বাচন করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন সাব-কমিটির আহ্বায়ক মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের দুই দিন আগে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সভাপতি ও সম্পাদক পদপ্রার্থী তাকে দিয়ে তাদের অনৈতিক ভোট ডাকাতির নির্বাচনে সম্মত করাতে না পারলে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেন এবং তাদের একান্ত অনুগত একজন দলীয় আইনজীবীকে দিয়ে নির্বাচনি নাটক মঞ্চস্থ করার আয়োজন করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচন সাব-কমিটি পুনর্গঠন না করা পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান না করার জন্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা যখন দাবি জানান, তখনই আওয়ামী সমর্থিত সভাপতি শত শত পুলিশ নিয়ে গত ১৫ মার্চ সমিতির অডিটোরিয়ামে প্রবেশ করে এক নারকীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে।

ওই সময় আইনজীবীদের ওপর আক্রমণ করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশি আক্রমণে সমিতির সভাপতি পদপ্রার্থীসহ শতাধিক আইনজীবী আহত হন। নারী আইনজীবীরাও পুলিশি আক্রমণ ও নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি। পেশাগত দায়িত্ব পালনরত বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে বেদম প্রহার করে গুরুতর আহত করা হয়।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, এ ঘটনায় উল্টো ১২ জন বিজ্ঞ আইনজীবীর বিরুদ্ধে দু’টি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করা হয়েছে। একজন আইনজীবীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসবই তাদের ফ্যাসিস্ট চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আওয়ামী আইনজীবী ও পুলিশি তাণ্ডবে পরবর্তীতে আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। তা সত্ত্বেও নির্বাচনের নামে প্রহসন করা হয়েছে। এটা শুধুমাত্র আইনজীবী সমাজেরই নয়, পুরো জাতির জন্যই কলঙ্কজনক।

ফখরুল বলেন, রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ আজ এমন একটি দেউলিয়া দলে পরিণত হয়েছে যে, আইনজীবীদের একটি সমিতির নির্বাচনেও পুলিশ ও বহিরাগতদের ব্যবহার করে নিজেদের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করতে হয়। এটা বড় লজ্জার বিষয়। আমরা মনে করি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট ডাকাতিতে সিদ্ধহস্ত আওয়ামী লীগের মুখোশ আরেকবার উন্মোচিত হলো। দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দীন দিদার উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সুপ্রিম কোর্ট বারে নতুন করে নির্বাচন দাবি বিএনপির

আপডেট সময় : ০৯:২৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০২৩

পুনরায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (১৭ মার্চ) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তিনি।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ইস্যু নিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের ঘটনায় প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, তারই একটি প্রমাণ আবার দেখছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলকে আহ্বান জানাব- বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য ন্যূনতম যে প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে সে প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করার জন্য সকলকে এগিয়ে আসা দরকার। অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টের যে তথাকথিত নির্বাচন তা বাতিল করে আবার নতুন করে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, আমরা বারবার বলেছি- আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচনই সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগের চরিত্রই হচ্ছে তারা বারবার জোর করে ক্ষমতায় যাবে। যখন তারা ক্ষমতায় থাকবে তাদের অধীনে যে নির্বাচন হবে সেটা তারা নিয়ন্ত্রণে নেবে। তাদের মতো করে তারা তাদের প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করবে। সুতরাং যারা মধ্যযুগীয় বর্বরতার মধ্যে চলে গেছে কোনোমতেই তাদের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়।

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে লক্ষ্য করেছি যে, দেশের অন্য সকল নির্বাচনের মতো সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সমিতির নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যে রাজনৈতিক চরিত্র, তার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

আইনগতভাবে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলেও নির্বাচনের নাটক সাজিয়ে একতরফাভাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের অবৈধভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।

ফখরুল বলেন, আমরা সবসময় বলে আসছি যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের ছত্র-ছায়ায় দেশের কোথাও কোনো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় নির্বাচনে ইতোপূর্বে বারবার প্রমাণিত হয়েছে। সর্বশেষ প্রমাণ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। এর আগে ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনেও একই ধরনের প্রহসনের নির্বাচন করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন সাব-কমিটির আহ্বায়ক মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতাও সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের দুই দিন আগে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সভাপতি ও সম্পাদক পদপ্রার্থী তাকে দিয়ে তাদের অনৈতিক ভোট ডাকাতির নির্বাচনে সম্মত করাতে না পারলে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেন এবং তাদের একান্ত অনুগত একজন দলীয় আইনজীবীকে দিয়ে নির্বাচনি নাটক মঞ্চস্থ করার আয়োজন করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচন সাব-কমিটি পুনর্গঠন না করা পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান না করার জন্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা যখন দাবি জানান, তখনই আওয়ামী সমর্থিত সভাপতি শত শত পুলিশ নিয়ে গত ১৫ মার্চ সমিতির অডিটোরিয়ামে প্রবেশ করে এক নারকীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে।

ওই সময় আইনজীবীদের ওপর আক্রমণ করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশি আক্রমণে সমিতির সভাপতি পদপ্রার্থীসহ শতাধিক আইনজীবী আহত হন। নারী আইনজীবীরাও পুলিশি আক্রমণ ও নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি। পেশাগত দায়িত্ব পালনরত বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে বেদম প্রহার করে গুরুতর আহত করা হয়।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, এ ঘটনায় উল্টো ১২ জন বিজ্ঞ আইনজীবীর বিরুদ্ধে দু’টি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করা হয়েছে। একজন আইনজীবীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসবই তাদের ফ্যাসিস্ট চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আওয়ামী আইনজীবী ও পুলিশি তাণ্ডবে পরবর্তীতে আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। তা সত্ত্বেও নির্বাচনের নামে প্রহসন করা হয়েছে। এটা শুধুমাত্র আইনজীবী সমাজেরই নয়, পুরো জাতির জন্যই কলঙ্কজনক।

ফখরুল বলেন, রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ আজ এমন একটি দেউলিয়া দলে পরিণত হয়েছে যে, আইনজীবীদের একটি সমিতির নির্বাচনেও পুলিশ ও বহিরাগতদের ব্যবহার করে নিজেদের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করতে হয়। এটা বড় লজ্জার বিষয়। আমরা মনে করি, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট ডাকাতিতে সিদ্ধহস্ত আওয়ামী লীগের মুখোশ আরেকবার উন্মোচিত হলো। দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দীন দিদার উপস্থিত ছিলেন।