ঢাকা ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কৃষি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের অনন্য অবদান রয়েছে : শরীফ উদ্দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জে হঠাৎ করেই চালের বাজার অস্থির, কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৮ টাকা দুর্গাপুর সীমান্ত দিয়ে আরও ২১ জনকে বাংলাদেশে পুশইন রাজস্ব আদায় কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়ার নির্দেশ এনবিআর চেয়ারম্যানের পুরো সংসদীয় আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা চায় ইসি একযোগে ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠাল সরকার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে মাঠে নামছে বাংলাদেশ বাংলাদেশি-রোহিঙ্গা সন্দেহে ভারতে ৪৪৪ জনকে আটক সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশ বাস্তবায়নে ডিএমপির সহযোগিতা চেয়েছে জামায়াত নির্বাচনের প্রস্তুতির নির্দেশ, প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ ফখরুলের

প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরে কোনো অর্জন নেই: ফখরুল

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৬:২৮:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩ ১২০ বার পড়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদেশ সফরের কোনো অর্জন নেই দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। এরা মিথ্যা প্রচার করে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মিথ্যাচারকে তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বিশ্ব ব্যাংক এবং আইএমএফকে তারা মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে।’

বুধবার (৩ মে) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবৈধ অনির্বাচিত দখলদার সরকারের অধীনে বাংলাদেশ এখন প্রায় ধ্বংস রাষ্ট্রের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে পতিত হচ্ছে। সরকারের ব্যর্থতা ও দুর্নীতির কারণে আজ জনগণের জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দ্রব্যমূল্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশি অর্থ বিদেশি পাচার করে অর্থব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খাত, শিক্ষা খাত সবকিছুতেই একটি নৈরাজ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে আমাদের ন্যূনতম ভোট দেওয়ার যে অধিকার কথা বলার অধিকার, স্বাধীন মত প্রকাশের যে অধিকার তা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে অধিকারগুলো অর্জন করেছিলাম, সেই অধিকারগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। এর একটিমাত্র উদ্দেশ্য তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আবারও প্রতিষ্ঠা করতে চায় যেটা তারা করতে চেয়েছিল ১৯৭৫ সালে।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সত্যিকার অর্থে দেশে যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় সেই দলগুলোর সঙ্গে আমরা একজোট হয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য। আমাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে আমরা যে দাবিগুলো দিয়েছি তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগ। নির্বাচনের সময় দেখেছি এখানে নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে জনগণ ভোট দিতে পারে না। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের দুটি নির্বাচন দেখেছি যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন হতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে সেই দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে যারা আমাদের সহযোগিতা রয়েছেন, যে দলগুলো রয়েছে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। ইতোমধ্যে অনেকগুলো দলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আজকে কর্নেল আলী আহমেদ আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছেন। আজকের আলোচনাই শেষ নয়। আবার তার দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করব।

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বলেন, আমরা যুগপৎ আন্দোলন করে যাচ্ছি এই আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, এই আন্দোলন মন্ত্রী হওয়ার জন্য নয়। এই আন্দোলন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে মুক্ত করার আন্দোলন।

অলি আহমদ বলেন, দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছে না ঘরে বাইরে কোথাও। তারা শান্তিতে থাকতে পারছে না। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করতে পারছে না। সাংবাদিকরাও লিখতে পারে না। কারণ আইন করে তাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য দেশকে স্বাধীন করা হয়নি। এজন্য মুক্তিযুদ্ধ করি নাই। মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল প্রত্যেকটি মানুষ স্বাধীনভাবে বসবাস করবে এবং তারা ভোট দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করবে।

এলডিপি সভাপতি বলেন, এই আন্দোলন আমাদের জন্য নয়, এই দেশকে মুক্ত করার জন্য। দেশ যতদিন পর্যন্ত মুক্ত না হবে ততদিন পর্যন্ত সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য করে অলি আহমেদ বলেন, তারা চাচ্ছে যেকোনভাবে একটি নির্বাচন করার জন্য। আমরা চাই এ নির্বাচন সকলের অংশগ্রহণ থাকবে। অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। এই দাবিগুলো নিয়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগও আন্দোলন করছে, এটা নতুন কোন বিষয় নয়। এটা আওয়ামী লীগের পক্ষে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কারণ একদিন তাদের দাবিও এটাই ছিল। আমরা চাই প্রত্যেকে তাদের নিজের ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। আগামীতে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করবে। তাহলে অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি পাবে সামাজিকভাবে আমরা আমাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারব। মানুষ ন্যায়বিচার পাবে এক বিচার শাসন থেকে আমরা মুক্ত পাব।

বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানও উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরে কোনো অর্জন নেই: ফখরুল

আপডেট সময় : ০৬:২৮:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদেশ সফরের কোনো অর্জন নেই দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। এরা মিথ্যা প্রচার করে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মিথ্যাচারকে তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বিশ্ব ব্যাংক এবং আইএমএফকে তারা মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে।’

বুধবার (৩ মে) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবৈধ অনির্বাচিত দখলদার সরকারের অধীনে বাংলাদেশ এখন প্রায় ধ্বংস রাষ্ট্রের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে পতিত হচ্ছে। সরকারের ব্যর্থতা ও দুর্নীতির কারণে আজ জনগণের জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দ্রব্যমূল্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশি অর্থ বিদেশি পাচার করে অর্থব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খাত, শিক্ষা খাত সবকিছুতেই একটি নৈরাজ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে আমাদের ন্যূনতম ভোট দেওয়ার যে অধিকার কথা বলার অধিকার, স্বাধীন মত প্রকাশের যে অধিকার তা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে অধিকারগুলো অর্জন করেছিলাম, সেই অধিকারগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। এর একটিমাত্র উদ্দেশ্য তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আবারও প্রতিষ্ঠা করতে চায় যেটা তারা করতে চেয়েছিল ১৯৭৫ সালে।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সত্যিকার অর্থে দেশে যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় সেই দলগুলোর সঙ্গে আমরা একজোট হয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য। আমাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে আমরা যে দাবিগুলো দিয়েছি তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগ। নির্বাচনের সময় দেখেছি এখানে নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে জনগণ ভোট দিতে পারে না। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের দুটি নির্বাচন দেখেছি যেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন হতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে সেই দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে যারা আমাদের সহযোগিতা রয়েছেন, যে দলগুলো রয়েছে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। ইতোমধ্যে অনেকগুলো দলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আজকে কর্নেল আলী আহমেদ আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছেন। আজকের আলোচনাই শেষ নয়। আবার তার দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করব।

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বলেন, আমরা যুগপৎ আন্দোলন করে যাচ্ছি এই আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, এই আন্দোলন মন্ত্রী হওয়ার জন্য নয়। এই আন্দোলন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে মুক্ত করার আন্দোলন।

অলি আহমদ বলেন, দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছে না ঘরে বাইরে কোথাও। তারা শান্তিতে থাকতে পারছে না। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করতে পারছে না। সাংবাদিকরাও লিখতে পারে না। কারণ আইন করে তাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য দেশকে স্বাধীন করা হয়নি। এজন্য মুক্তিযুদ্ধ করি নাই। মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল প্রত্যেকটি মানুষ স্বাধীনভাবে বসবাস করবে এবং তারা ভোট দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করবে।

এলডিপি সভাপতি বলেন, এই আন্দোলন আমাদের জন্য নয়, এই দেশকে মুক্ত করার জন্য। দেশ যতদিন পর্যন্ত মুক্ত না হবে ততদিন পর্যন্ত সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য করে অলি আহমেদ বলেন, তারা চাচ্ছে যেকোনভাবে একটি নির্বাচন করার জন্য। আমরা চাই এ নির্বাচন সকলের অংশগ্রহণ থাকবে। অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। এই দাবিগুলো নিয়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগও আন্দোলন করছে, এটা নতুন কোন বিষয় নয়। এটা আওয়ামী লীগের পক্ষে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কারণ একদিন তাদের দাবিও এটাই ছিল। আমরা চাই প্রত্যেকে তাদের নিজের ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। আগামীতে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করবে। তাহলে অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি পাবে সামাজিকভাবে আমরা আমাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারব। মানুষ ন্যায়বিচার পাবে এক বিচার শাসন থেকে আমরা মুক্ত পাব।

বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানও উপস্থিত ছিলেন।