ঢাকা ০৭:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওষুধের দাম আরও বাড়াতে চায় উৎপাদনকারীরা

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১০:২৭:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪ ৩৪ বার পড়া হয়েছে

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল দেশবাসীর জন্য ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ওষুধের দাম। তবে ওষুধ কোম্পানিগুলোর দাবি, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ওষুধ উৎপাদন খরচ অন্তত ৩৫ শতাংশ বেড়েছে, তবে তার বিপরীতে বাজারে ওষুধের দাম ৫ শতাংশ বেড়েছে। এ অবস্থায় টিকে থাকতে ওষুধের দাম বাড়ানো ছাড়া কোনো উপায় দেখছেন না তারা।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের কার্যালয়ে ‘উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তরণে ওষুধ শিল্পে চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে ওষুধ শিল্প সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মুক্তাদির এ কথা জানান।

আব্দুল মুক্তাদির বলেন, গত তিন বছরে ক্রমবর্ধমান হারে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে। ডলার ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে। আমাদের কিনতে হচ্ছে আরও বেশি দিয়ে। এতে বিদেশ থেকে আমদানি করা কাঁচামালের খরচ প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। একইভাবে গ্যাস-বিদ্যুৎ বা জ্বালানি খরচ দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। যেমন— আগে যেখানে ৯ কোটি টাকা জ্বালানি খরচ ছিল সেখানে বর্তমানে ১৯ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। কর্মীদের বেতন ৭০ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যাংক ঋণের সুদ ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে। এতে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাজারে থাকা ওষুধের দাম কত শতাংশ বাড়ানো হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৫ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়েছে। তবে গত পাঁচ বছরে ওষুধের মার্কেট ৬০ শতাংশ বাড়ার কারণে খরচের সংকুলান করতে পারছেন তারা।

এসময় উপস্থিত সাংবাদিকরা কোম্পানিগুলোর আগ্রাসী মার্কেটিংয়ের কথা উল্লেখ করেন। ওষুধের মার্কেটিংয়ের ব্যয় কমিয়ে ওষুধের দাম কমানো যায় কিনা জানতে চাইলে আব্দুল মুক্তাদির বলেন, চিকিৎসকদের সে অর্থে কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না। তবে চিকিৎসকদের বড় কোনো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে মার্কেটিং ব্যয় অনেক বেশি হয়ে থাকে। এটা লভ্যাংশ থেকে চলে যায়।

ওষুধের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২২ সালে দেশের ওষুধের বাজার ছিল তিন বিলিয়ন ডলারের ওপরে। সেটা এখন তিন বিলিয়নের অনেক নিচে নেমে এসেছে। তবে আমরা আশাবাদী, ২০২৪ সালে ওষুধ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াবে। একইসঙ্গে দেশের অর্থনীতি আরও বেগবান হবে।

ওষুধ শিল্প সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি জানান, দেশের মানুষের প্রয়োজনীয় ৯৮ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে স্থানীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। যদি এসব ওষুধ আমদানি করতে হতো তাহলে ওষুধের পেছনে তিন থেকে চার গুণ বেশি অর্থ খরচ করতে হতো। অর্থাৎ বছরে এক লাখ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।

উন্নয়নশীল দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ও ওষুধের মেধাস্বত্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধের রেজিস্ট্রেশনের জন্য মূল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে ফিস দিতে হয়। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ ব্যান্ড জেনেরিক আমাদের রয়েছে। তবে অনেক ওষুধ নতুন করে আবিষ্কার হচ্ছে, যেগুলো ২০২৬ সালের পরে পৃথিবীতে আসবে। সে ওষুধগুলো রয়েলেটি দেওয়া ছাড়া বাংলাদেশে তৈরি করতে পারবে না। সুতরাং এ ক্ষেত্রে এসব ওষুধের দাম, অনেক বেশি হবে। যা আমাদের দেশের অনেক মানুষ কেনার সামর্থ্য থাকবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ওষুধের দাম আরও বাড়াতে চায় উৎপাদনকারীরা

আপডেট সময় : ১০:২৭:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল দেশবাসীর জন্য ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ওষুধের দাম। তবে ওষুধ কোম্পানিগুলোর দাবি, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ওষুধ উৎপাদন খরচ অন্তত ৩৫ শতাংশ বেড়েছে, তবে তার বিপরীতে বাজারে ওষুধের দাম ৫ শতাংশ বেড়েছে। এ অবস্থায় টিকে থাকতে ওষুধের দাম বাড়ানো ছাড়া কোনো উপায় দেখছেন না তারা।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের কার্যালয়ে ‘উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তরণে ওষুধ শিল্পে চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে ওষুধ শিল্প সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মুক্তাদির এ কথা জানান।

আব্দুল মুক্তাদির বলেন, গত তিন বছরে ক্রমবর্ধমান হারে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে। ডলার ৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে। আমাদের কিনতে হচ্ছে আরও বেশি দিয়ে। এতে বিদেশ থেকে আমদানি করা কাঁচামালের খরচ প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। একইভাবে গ্যাস-বিদ্যুৎ বা জ্বালানি খরচ দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। যেমন— আগে যেখানে ৯ কোটি টাকা জ্বালানি খরচ ছিল সেখানে বর্তমানে ১৯ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। কর্মীদের বেতন ৭০ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যাংক ঋণের সুদ ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে। এতে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাজারে থাকা ওষুধের দাম কত শতাংশ বাড়ানো হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৫ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়েছে। তবে গত পাঁচ বছরে ওষুধের মার্কেট ৬০ শতাংশ বাড়ার কারণে খরচের সংকুলান করতে পারছেন তারা।

এসময় উপস্থিত সাংবাদিকরা কোম্পানিগুলোর আগ্রাসী মার্কেটিংয়ের কথা উল্লেখ করেন। ওষুধের মার্কেটিংয়ের ব্যয় কমিয়ে ওষুধের দাম কমানো যায় কিনা জানতে চাইলে আব্দুল মুক্তাদির বলেন, চিকিৎসকদের সে অর্থে কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না। তবে চিকিৎসকদের বড় কোনো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে মার্কেটিং ব্যয় অনেক বেশি হয়ে থাকে। এটা লভ্যাংশ থেকে চলে যায়।

ওষুধের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২২ সালে দেশের ওষুধের বাজার ছিল তিন বিলিয়ন ডলারের ওপরে। সেটা এখন তিন বিলিয়নের অনেক নিচে নেমে এসেছে। তবে আমরা আশাবাদী, ২০২৪ সালে ওষুধ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াবে। একইসঙ্গে দেশের অর্থনীতি আরও বেগবান হবে।

ওষুধ শিল্প সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি জানান, দেশের মানুষের প্রয়োজনীয় ৯৮ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে স্থানীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। যদি এসব ওষুধ আমদানি করতে হতো তাহলে ওষুধের পেছনে তিন থেকে চার গুণ বেশি অর্থ খরচ করতে হতো। অর্থাৎ বছরে এক লাখ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।

উন্নয়নশীল দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ও ওষুধের মেধাস্বত্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধের রেজিস্ট্রেশনের জন্য মূল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে ফিস দিতে হয়। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ ব্যান্ড জেনেরিক আমাদের রয়েছে। তবে অনেক ওষুধ নতুন করে আবিষ্কার হচ্ছে, যেগুলো ২০২৬ সালের পরে পৃথিবীতে আসবে। সে ওষুধগুলো রয়েলেটি দেওয়া ছাড়া বাংলাদেশে তৈরি করতে পারবে না। সুতরাং এ ক্ষেত্রে এসব ওষুধের দাম, অনেক বেশি হবে। যা আমাদের দেশের অনেক মানুষ কেনার সামর্থ্য থাকবে না।