ঢাকা ০১:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ’কে দুই শর্ত জাপার

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১২:১৪:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ১২৭ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় পার্টির দুর্গ বলে পরিচিত রংপুর। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন এবং বর্জন দুই ধরনের প্রস্তুতি গ্রহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি। নির্বাচনে অংশ নিলে জাতীয় পার্টিকে ১০০ আসন ১০ জন মন্ত্রী এবং রংপুরের ২২টি আসন ছেড়ে দিতে হবে বলে শর্ত জুড়ে দিয়েছে। অন্যথায় নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করার ঘোষনা দিয়েছে জাপা।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জরুরী বর্ধিত সভা শেষে এ ঘোষনা দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সিটি করপোরেশন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। সভায় রংপুর মহানগর জাপার ৩৩টি ওয়ার্ড এবং জেলা জাপার সকল উপজেলার সভাপতি সাধারন সম্পাদক সহ জেলা ও মহানগর জাপার সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির আহাম্মেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুর সিটি মেয়র মহানগর সভাপতি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

বক্তব্য দেন পীরগজ্ঞ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি যাদু হোসেন, মহানগর জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য লোকমান আহাম্মেদ, জাতীয় পার্টির নেতা আলা উদ্দিন মিয়া, জাতীয় যুব সংহতির মহানগর সভাপতি শাহিন হোসেন জাকির, জেলা সভাপতি নাজিম আহাম্মেদ সহ ৩২ জন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪ ঘন্টা ব্যাপি সভায় সকল বক্তাই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করে বলেন ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে অথচ তারা জাতীয় পার্টিকে কখনই মুল্যায়ন করেনি। দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত চেয়ারম্যান এরশাদের প্রতি চরম অবমাননা করা হয়েছে। তার প্রতি সুবিচার করা তো দূরের কথা তাকে পদে পদে অপমান করা হয়েছে। তারা আরো অভিযোগ করেন এরশাদ ঢাকায় সন্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধিন থাকা কালে এক বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে দেখতে পর্যন্ত যাননি।

অথচ এরশাদের জন্যই তিনি দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসতে পেরেছেন। এরপর জাতীয় পার্টির সমর্থন না পেলে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পেরেছে। তারা বলেন আওয়ামী লীগের কোন কৃতজ্ঞতা বোধ নেই। তাদের কারনে জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের বি টীম বলে আখ্যায়িত করে দালাল বলে গালাগাল শুনতে হয়। তৃনমুল পর্যায়ের নেতারা বর্তমান সরকারের অধিনে অতীতেওকোন নির্বাচন নিরপেক্ষ সুষ্ঠু হয়নি আগামী নির্বাচনও হবেনা। ফলে এ সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে অংশ নেয়া দলের জন্য আত্মঘাতি বলে তারা মনে করেন। সেই সাথে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে ভেবে চিন্তে নির্বাচনে অংশ নেবার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার আহবান জানান তারা।

সভা শেষে সিটি মেয়র মোস্তফা বলেন জাতীয় পার্টি আর দালাল হিসেবে আখ্যায়িত হতে চায়না। স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করতে চায়। তবে দলের তৃনমুল পর্যায়ের নেতা কর্মীরা নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে। তিনি বলেন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ , বিএনপি, জাতীয় পার্টি , ইসলামী আন্দোলন আর জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বাকী দল গুলোর কোন ভোট নেই। বিএনপি সহ প্রধান দল গুলো নির্বাচন বর্জন করেছে।

সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জন করলে বর্তমান সরকার যে কোন ভাবে নির্বাচন করে নিতে পারবে সরকারও হয়তো গঠন করতে পারবে কিন্তু সেই নির্বাচন জনগন ও বিশ্ববাসির কাছে গ্রহন যোগ্য হবেনা। সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টিকে চিন্তা ভাবনা করেই নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর যদি আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন করতে হলে জাতীয় পার্টিকে ১০০ আসন , ১০ মন্ত্রী এবং রংপুর অঞ্চলের ২২টি আসনে ছাড় দেবার ঘোষনা দিতে হবে জানান তিনি। অন্যথায় আন্দোলন করার জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি আমাদের আছে বলেও জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আওয়ামী লীগ’কে দুই শর্ত জাপার

আপডেট সময় : ১২:১৪:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩

জাতীয় পার্টির দুর্গ বলে পরিচিত রংপুর। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন এবং বর্জন দুই ধরনের প্রস্তুতি গ্রহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি। নির্বাচনে অংশ নিলে জাতীয় পার্টিকে ১০০ আসন ১০ জন মন্ত্রী এবং রংপুরের ২২টি আসন ছেড়ে দিতে হবে বলে শর্ত জুড়ে দিয়েছে। অন্যথায় নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করার ঘোষনা দিয়েছে জাপা।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জরুরী বর্ধিত সভা শেষে এ ঘোষনা দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সিটি করপোরেশন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। সভায় রংপুর মহানগর জাপার ৩৩টি ওয়ার্ড এবং জেলা জাপার সকল উপজেলার সভাপতি সাধারন সম্পাদক সহ জেলা ও মহানগর জাপার সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির আহাম্মেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুর সিটি মেয়র মহানগর সভাপতি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

বক্তব্য দেন পীরগজ্ঞ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি যাদু হোসেন, মহানগর জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য লোকমান আহাম্মেদ, জাতীয় পার্টির নেতা আলা উদ্দিন মিয়া, জাতীয় যুব সংহতির মহানগর সভাপতি শাহিন হোসেন জাকির, জেলা সভাপতি নাজিম আহাম্মেদ সহ ৩২ জন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪ ঘন্টা ব্যাপি সভায় সকল বক্তাই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করে বলেন ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে অথচ তারা জাতীয় পার্টিকে কখনই মুল্যায়ন করেনি। দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত চেয়ারম্যান এরশাদের প্রতি চরম অবমাননা করা হয়েছে। তার প্রতি সুবিচার করা তো দূরের কথা তাকে পদে পদে অপমান করা হয়েছে। তারা আরো অভিযোগ করেন এরশাদ ঢাকায় সন্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধিন থাকা কালে এক বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে দেখতে পর্যন্ত যাননি।

অথচ এরশাদের জন্যই তিনি দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসতে পেরেছেন। এরপর জাতীয় পার্টির সমর্থন না পেলে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পেরেছে। তারা বলেন আওয়ামী লীগের কোন কৃতজ্ঞতা বোধ নেই। তাদের কারনে জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের বি টীম বলে আখ্যায়িত করে দালাল বলে গালাগাল শুনতে হয়। তৃনমুল পর্যায়ের নেতারা বর্তমান সরকারের অধিনে অতীতেওকোন নির্বাচন নিরপেক্ষ সুষ্ঠু হয়নি আগামী নির্বাচনও হবেনা। ফলে এ সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে অংশ নেয়া দলের জন্য আত্মঘাতি বলে তারা মনে করেন। সেই সাথে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে ভেবে চিন্তে নির্বাচনে অংশ নেবার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার আহবান জানান তারা।

সভা শেষে সিটি মেয়র মোস্তফা বলেন জাতীয় পার্টি আর দালাল হিসেবে আখ্যায়িত হতে চায়না। স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করতে চায়। তবে দলের তৃনমুল পর্যায়ের নেতা কর্মীরা নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে। তিনি বলেন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ , বিএনপি, জাতীয় পার্টি , ইসলামী আন্দোলন আর জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বাকী দল গুলোর কোন ভোট নেই। বিএনপি সহ প্রধান দল গুলো নির্বাচন বর্জন করেছে।

সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জন করলে বর্তমান সরকার যে কোন ভাবে নির্বাচন করে নিতে পারবে সরকারও হয়তো গঠন করতে পারবে কিন্তু সেই নির্বাচন জনগন ও বিশ্ববাসির কাছে গ্রহন যোগ্য হবেনা। সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টিকে চিন্তা ভাবনা করেই নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর যদি আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন করতে হলে জাতীয় পার্টিকে ১০০ আসন , ১০ মন্ত্রী এবং রংপুর অঞ্চলের ২২টি আসনে ছাড় দেবার ঘোষনা দিতে হবে জানান তিনি। অন্যথায় আন্দোলন করার জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি আমাদের আছে বলেও জানান তিনি।