ঢাকা ০৭:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩৮৪ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় স্লো করা হলো ইন্টারনেট

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৯:১৭:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩ ৮৭ বার পড়া হয়েছে

বকেয়া বিল আদায়ে দেশের ৩৪টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রতিষ্ঠানের ১৯টির ব্যান্ডউইথ ডাউন করে দিয়েছে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি। এতে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকরা অনেকে ধীর গতির ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন।

জানা যায়, ১৯টি আইআইজি’র কাছে ৩৮৪ কোটি টাকা পাওনা আছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি)। বকেয়া পরিশোধ না করায় বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) মধ্যরাতের পরে বিএসসিপিএলসি আইআইজিগুলোর গড়ে ২৫ শতাংশ ব্যান্ডউইথ তথা ৬২৫ জিবিপিএস ডাউন (সীমিত) করে দেওয়া হয়। এর প্রভাবে ধীর গতির ইন্টারনেট সেবার পাচ্ছেন অনেক ব্যবহারকারী।

প্রসঙ্গত, দেশের মোট ব্যবহৃত (৫১০০ জিবিপিএস) ব্যান্ডউইথের মধ্যে ২৫০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে বিএসসিপিএলসি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইটিসির (ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল ক্যাবল) ব্যাকআপ থাকায় ইন্টারনেটে সেবায় ধীরগতির প্রভাব খুব একটা বোঝা যাচ্ছে না। ছুটির দিন হওয়াও প্রভাব পড়ছে কম। কারণ শুক্র-শনি অনেক অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় ইন্টারনেট কম ব্যবহার হয়। এর মূল প্রভাব বোঝা যাবে রোববার।

এ প্রসঙ্গে বিএসসিপিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মির্জা কামাল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আইটিসির (ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল ক্যাবল) ব্যাকআপ থাকায় খুব একটা প্রভাব পড়ছে বলে আমাদের মনে হয় না।

তিনি জানান, সরকারের নির্দেশে ব্যান্ডউইথ ডাউন করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, এত টাকা বকেয়া রেখে ব্যান্ডউইথ সরবরাহে আমাদের কঠোর হতে বলা হয়। একটি আইআইজি বকেয়া আপডেট করায় তাদের সার্ভিস রিস্টোর করা (আগের অবস্থায়) হয়েছে। আমরা নেটওয়ার্কস নামের একটি আইআইজির কাছে ৬১ কোটি টাকা পাবো। দীর্ঘদিন বলার পরও তারা বকেয়া পরিশোধ না করায় তাদের ব্যান্ডউইথের বেশি অংশ ডাউন করা হয়েছে।

আগামী রোববারের মধ্যে আইআইজিগুলো বকেয়া পরিশোধ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘কোম্পানিগুলোর কাছে অনেকবার বকেয়া চাওয়া হয়েছে। তারা দেয়নি। গ্রাহকদের কাছ থেকে তারা টাকা আদায় করে। সরকারকে রাজস্ব কেন দেবে না?’

আরও পড়ুন- আজ থেকে তিন দিনের মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজ বন্ধ
জানা যায়, আইআইজিদের কাছ থেকে পাওনা আদায়ে গত ১৩ জুলাই বিএসসিপিএলসি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ৯ আগস্ট টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসিকে চিঠি দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, বিভিন্ন অপারেটরের কাছে বিএসসিপিএলসির বকেয়ার পরিমাণ ৩৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯টি অপারেটরের কাছেই তারা পায় ১৮১ কোটি টাকা।

আরও জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী এক মাসের বিল বিএসসিপিএলসিতে বকেয়া রাখা যাবে। বিএসসিপিএলসি যে হিসাব দিয়েছে তাতে দেখা গেছে আইআইজিগুলোর প্রায় ৮ মাসের বিল বকেয়া রয়েছে।

এদিকে ইন্টারনেট–সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর সূত্রে জানা গেছে, হঠাৎ করে ব্যান্ডউইডথ সীমিত হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে তারা। গ্রাহকদের অনেকেই ধীরগতির ইন্টারনেট সমস্যায় ভুগছেন।

উল্লেখ্য, সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির কাছ থেকে ব্যান্ডউইথ কেনে কয়েকটি আইএসপি ও আইআইজিগুলো। আইআইজি থেকে ব্যান্ডউইথ কিনে সরাসরি গ্রাহককে সেবা দেয় ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) ও মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

৩৮৪ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় স্লো করা হলো ইন্টারনেট

আপডেট সময় : ০৯:১৭:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৩

বকেয়া বিল আদায়ে দেশের ৩৪টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রতিষ্ঠানের ১৯টির ব্যান্ডউইথ ডাউন করে দিয়েছে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি। এতে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকরা অনেকে ধীর গতির ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন।

জানা যায়, ১৯টি আইআইজি’র কাছে ৩৮৪ কোটি টাকা পাওনা আছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি)। বকেয়া পরিশোধ না করায় বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) মধ্যরাতের পরে বিএসসিপিএলসি আইআইজিগুলোর গড়ে ২৫ শতাংশ ব্যান্ডউইথ তথা ৬২৫ জিবিপিএস ডাউন (সীমিত) করে দেওয়া হয়। এর প্রভাবে ধীর গতির ইন্টারনেট সেবার পাচ্ছেন অনেক ব্যবহারকারী।

প্রসঙ্গত, দেশের মোট ব্যবহৃত (৫১০০ জিবিপিএস) ব্যান্ডউইথের মধ্যে ২৫০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে বিএসসিপিএলসি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইটিসির (ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল ক্যাবল) ব্যাকআপ থাকায় ইন্টারনেটে সেবায় ধীরগতির প্রভাব খুব একটা বোঝা যাচ্ছে না। ছুটির দিন হওয়াও প্রভাব পড়ছে কম। কারণ শুক্র-শনি অনেক অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় ইন্টারনেট কম ব্যবহার হয়। এর মূল প্রভাব বোঝা যাবে রোববার।

এ প্রসঙ্গে বিএসসিপিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মির্জা কামাল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আইটিসির (ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল ক্যাবল) ব্যাকআপ থাকায় খুব একটা প্রভাব পড়ছে বলে আমাদের মনে হয় না।

তিনি জানান, সরকারের নির্দেশে ব্যান্ডউইথ ডাউন করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, এত টাকা বকেয়া রেখে ব্যান্ডউইথ সরবরাহে আমাদের কঠোর হতে বলা হয়। একটি আইআইজি বকেয়া আপডেট করায় তাদের সার্ভিস রিস্টোর করা (আগের অবস্থায়) হয়েছে। আমরা নেটওয়ার্কস নামের একটি আইআইজির কাছে ৬১ কোটি টাকা পাবো। দীর্ঘদিন বলার পরও তারা বকেয়া পরিশোধ না করায় তাদের ব্যান্ডউইথের বেশি অংশ ডাউন করা হয়েছে।

আগামী রোববারের মধ্যে আইআইজিগুলো বকেয়া পরিশোধ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘কোম্পানিগুলোর কাছে অনেকবার বকেয়া চাওয়া হয়েছে। তারা দেয়নি। গ্রাহকদের কাছ থেকে তারা টাকা আদায় করে। সরকারকে রাজস্ব কেন দেবে না?’

আরও পড়ুন- আজ থেকে তিন দিনের মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজ বন্ধ
জানা যায়, আইআইজিদের কাছ থেকে পাওনা আদায়ে গত ১৩ জুলাই বিএসসিপিএলসি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ৯ আগস্ট টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসিকে চিঠি দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, বিভিন্ন অপারেটরের কাছে বিএসসিপিএলসির বকেয়ার পরিমাণ ৩৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯টি অপারেটরের কাছেই তারা পায় ১৮১ কোটি টাকা।

আরও জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী এক মাসের বিল বিএসসিপিএলসিতে বকেয়া রাখা যাবে। বিএসসিপিএলসি যে হিসাব দিয়েছে তাতে দেখা গেছে আইআইজিগুলোর প্রায় ৮ মাসের বিল বকেয়া রয়েছে।

এদিকে ইন্টারনেট–সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর সূত্রে জানা গেছে, হঠাৎ করে ব্যান্ডউইডথ সীমিত হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে তারা। গ্রাহকদের অনেকেই ধীরগতির ইন্টারনেট সমস্যায় ভুগছেন।

উল্লেখ্য, সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির কাছ থেকে ব্যান্ডউইথ কেনে কয়েকটি আইএসপি ও আইআইজিগুলো। আইআইজি থেকে ব্যান্ডউইথ কিনে সরাসরি গ্রাহককে সেবা দেয় ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) ও মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো