ঢাকা ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিলিতে ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু, লোকশানে বর্গা চাষিরা

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৫:০৭:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪ ৫০ বার পড়া হয়েছে

দিনাজপুরের হিলিতে ইরি-বোরো ক্ষেতে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। প্রচন্ড তাপ দাহের মাঝে শুরু হয়েছে বোরো ধানের কাটা-মাড়াই। ব্যাস্ত সময় পার করছেন এখানকার কৃষক ও শ্রমিকরা। তবে ফলন ভালো হলেও দাম নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা। তারা বলছেন, গেলো বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হলেও ধানের যে দাম রয়েছে তাতে লোকশানে পড়তে হচ্ছে তাদের। স্যার কীটনাশক থেকে শুরু করে পানি সেচসহ সব কিছুরই দাম বেশি। সেই অনুযায়ী ধানের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তাদের। এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ভাল ফলনের পাশাপাশি দামও ভাল পাচ্ছেন কৃষকেরা।

শষ্য ভান্ডারখ্যাত উত্তর জনপদের জেলা দিনাজপুরের হিলি-হাকিমপুরে চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে যেসব কৃষক আগাম ধান রোপণ করেন তারা প্রথমদিকে ধান কাটা শুরু করে থাকেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, গেলো বছরের চেয়ে এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিবিঘা (৩৩) শতক জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে গড়ে ২০ থেকে ২২ মণ পর্যন্ত। তবে, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার পানি, সার, কীটনাশক ও ধান কাটার শ্রমিকের মজুরি বেশি। তাই উৎপাদন খরচ বেশি পড়েছে।

ডাংগাপাড়া গ্রামের কৃষক রহিম বলেন, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে প্রতিবিঘায় উৎপাদন খরচ পড়েছে ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা। আর বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২২ হাজার টাকা। এতে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রতিবিঘা জমিতে লাভ থাকছে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে বেশি লোকশানে পড়ছেন বর্গা চাষিরা। এতে তারা লোকশানে পড়ছে বলে ধানের দাম বাড়ানোর দাবি কৃষকদের।

এদিকে কয়েকজন শ্রমিক বলেন, দ্রব্যমূল্যের যে দাম তাতে ৪ হাজার টাকা দিয়ে ধান কাটতে অনিহা প্রকাশ করছেন শ্রমীকরা। তাদের দাবী এক বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমীক লাগে ৫ জন। এতে তাদের কোন লাভ থাকে না, ধান কাটার মুজরী বাড়ার দাবী শ্রমিকদের।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা. আরজেনা বেগম বলেন, চলতি ইরি- বোরো মৌসুমে এই উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৭ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে। আর আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৬১৬ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ধানের উৎপাদন সম্ভব্য ৫৪হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন, এতে চালের উৎপাদন হবে সম্ভব্য ৩৬হাজার ৫৫৬ মেট্রিক টন।

তিনি আরও বলেন, মাঠে বোরো ধানের ফলন এখন পর্যন্ত ভাল আছে। বিভিন্ন চিকোন জাতের ধান বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ২৬ মণ হচ্ছে। এছাড়াও উন্নত জাতের বীজ থেকে প্রতি শতকে ১ মণ করে কৃষক ধান কাটা-মাড়াই করছেন। আশা করছি আবহাওয়া ভাল থাকলে কৃষক তাদের কাঙ্খিত ফসল ঘরে তুলতে পারবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

হিলিতে ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু, লোকশানে বর্গা চাষিরা

আপডেট সময় : ০৫:০৭:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

দিনাজপুরের হিলিতে ইরি-বোরো ক্ষেতে দুলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। প্রচন্ড তাপ দাহের মাঝে শুরু হয়েছে বোরো ধানের কাটা-মাড়াই। ব্যাস্ত সময় পার করছেন এখানকার কৃষক ও শ্রমিকরা। তবে ফলন ভালো হলেও দাম নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা। তারা বলছেন, গেলো বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হলেও ধানের যে দাম রয়েছে তাতে লোকশানে পড়তে হচ্ছে তাদের। স্যার কীটনাশক থেকে শুরু করে পানি সেচসহ সব কিছুরই দাম বেশি। সেই অনুযায়ী ধানের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তাদের। এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ভাল ফলনের পাশাপাশি দামও ভাল পাচ্ছেন কৃষকেরা।

শষ্য ভান্ডারখ্যাত উত্তর জনপদের জেলা দিনাজপুরের হিলি-হাকিমপুরে চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে যেসব কৃষক আগাম ধান রোপণ করেন তারা প্রথমদিকে ধান কাটা শুরু করে থাকেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, গেলো বছরের চেয়ে এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিবিঘা (৩৩) শতক জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে গড়ে ২০ থেকে ২২ মণ পর্যন্ত। তবে, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার পানি, সার, কীটনাশক ও ধান কাটার শ্রমিকের মজুরি বেশি। তাই উৎপাদন খরচ বেশি পড়েছে।

ডাংগাপাড়া গ্রামের কৃষক রহিম বলেন, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে প্রতিবিঘায় উৎপাদন খরচ পড়েছে ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা। আর বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২২ হাজার টাকা। এতে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রতিবিঘা জমিতে লাভ থাকছে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে বেশি লোকশানে পড়ছেন বর্গা চাষিরা। এতে তারা লোকশানে পড়ছে বলে ধানের দাম বাড়ানোর দাবি কৃষকদের।

এদিকে কয়েকজন শ্রমিক বলেন, দ্রব্যমূল্যের যে দাম তাতে ৪ হাজার টাকা দিয়ে ধান কাটতে অনিহা প্রকাশ করছেন শ্রমীকরা। তাদের দাবী এক বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমীক লাগে ৫ জন। এতে তাদের কোন লাভ থাকে না, ধান কাটার মুজরী বাড়ার দাবী শ্রমিকদের।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা. আরজেনা বেগম বলেন, চলতি ইরি- বোরো মৌসুমে এই উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৭ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে। আর আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৬১৬ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ধানের উৎপাদন সম্ভব্য ৫৪হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন, এতে চালের উৎপাদন হবে সম্ভব্য ৩৬হাজার ৫৫৬ মেট্রিক টন।

তিনি আরও বলেন, মাঠে বোরো ধানের ফলন এখন পর্যন্ত ভাল আছে। বিভিন্ন চিকোন জাতের ধান বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ২৬ মণ হচ্ছে। এছাড়াও উন্নত জাতের বীজ থেকে প্রতি শতকে ১ মণ করে কৃষক ধান কাটা-মাড়াই করছেন। আশা করছি আবহাওয়া ভাল থাকলে কৃষক তাদের কাঙ্খিত ফসল ঘরে তুলতে পারবে।