সংসদ নির্বাচনে থাকছে না ইভিএম, কী ভাবছে আওয়ামী লীগ
- আপডেট সময় : ০৯:৪০:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০২৩ ৯২ বার পড়া হয়েছে
আগামী বছরের প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই নির্বাচন ইভিএমে হবে- সেই আলোচনায় চলছে দীর্ঘদিন ধরে। তবে সোমবার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম থাকছে না। ৩০০ আসনের সবকটিতেই ব্যালটে ভোট হবে।
কমিশনের এমন সিদ্ধান্তের পরপরই নানা রকম আলোচনা শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কী ভাবছে আওয়ামী লীগ?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ঢাকা মেইলকে বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন সংস্থা। তারা যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই চূড়ান্ত। এ বিষয়ে কথা বলার কিছু নাই।
একই বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, বাংলাদেশ আজকে আধুনিক ও সফল প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। সে ক্ষেত্রে ইভিএম একটি আধুনিক প্রযুক্তি পদ্ধতি এবং এই পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন হলে কেউ ভোট কারচুপির অভিযোগ আনতে পারবে না। এতে কারচুপি হয় না। জনগণ যাতে তার ভোট তার পছন্দের প্রার্থীকে দিতে পারে সে জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ইভিএম দাবি করেছে আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, কিন্তু সংবিধানে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ও কর্তব্য স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে আওয়ামী লীগ তা সমর্থন করবে এবং আওয়ামী লীগের প্রধান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন, জনগণ হচ্ছে ক্ষমতার উৎস এবং জনগণের আস্থা ভালোবাসা অর্জন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হবে।
পদ্ধতি যাই হোক, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের এই সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বলেন, আমরা জনগণের প্রতি আস্থাশীল। নির্বাচন যে পদ্ধতিতেই নির্বাচন কমিশন করুক, আমরা অংশ নিতে প্রস্তুত।
বিএনপি নির্বাচনে না আসতে অজুহাত খোঁজে উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, বিএনপি জানে তারা নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবে না। কারণ তাদের দলের প্রধান এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে জেলে আছেন। আর তাদের আরেক প্রধান বিভিন্ন অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে বসে আছেন। জনগণ তাদের অপকর্ম জানে। তাদের আমলের দুর্নীতির কথা জানে। যার কারণে জনগণ তাদের সাথে নাই। এ কারণে তারা মনে করে নির্বাচনে গেলে তারা জয়লাভ করতে পারবে না। এজন্য তারা বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচনে যাব না- এ কথা বলে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর ঘোষণা দেয়, আগামী নির্বাচনে তারা ইভিএমে ভোট করতে চায়। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের জুনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপে ইভিএম প্রসঙ্গ উঠে আসে। সংলাপে দেশের নিবন্ধিত ৩৯টি দলকে আমন্ত্রণ জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি ১১টি দল। যারা অংশ নিয়েছে তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ যেসব দল ইভিএমে আগামী নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে তার চেয়ে বেশি বিপক্ষে বলেছে। কেউ আবার জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনে প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছে।
নির্বাচনের জন্য নতুন করে ইভিএম কিনতে সরকারের কাছে প্রথমে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ চেয়ে পায়নি নির্বাচন কমিশন। পরে ইসির হাতে থাকা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) মেরামতে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী ১,২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাইলে তাতেও অসম্মতি জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়। এই টাকা দিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ইভিএম আগামী নির্বাচনের জন্য মেরামত করতে চেয়েছিল ইসি। তবে ৫০০ কোটি টাকা দিতে সম্মত হয় অর্থ মন্ত্রণালয়। যে কারণে জাতীয় নির্বাচনে স্বল্প পরিসরে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল ইসির। কিন্তু ১৭তম কমিশন সভায় পুরো ভোটেই ইভিএম ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন। সুত্রঃ ঢাকা মেইল