ঢাকা ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শহীদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ, জুতা পায়ে পুরস্কার দিলেন অতিথিরা

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ৯৮ বার পড়া হয়েছে

শহীদ মিনারের বেদিতে স্কুলের ক্রীড়া অনুষ্ঠানের মঞ্চ করে জুতা পায়ে দিয়ে উঠলেন জামালপুর-৫ সদর আসনের এমপি মোজাফফর হোসেন ও শিক্ষকসহ অতিথিরা।

জামালপুর সদর উপজেলার বটতলা উচ্চবিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শহীদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ বানিয়ে শনিবার বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ভাষার মাসে এমন ঘটনায় উপস্থিত অনেককেই ক্ষুদ্ধ হয়ে সমালোচনা করতে দেখা যায়।

তবে সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘সেটা যে শহীদ মিনার, আমি বুঝতেই পারিনি। আমি ভেবেছি-সেটা একটি ভাঙা মঞ্চ। কেউ যদি আমাকে বলতো, সেটা শহূদ মিনার, তাহলে আমি জুতা নিয়ে উঠতাম না। প্রয়োজনে আমি সেখান থেকে নেমে যেতাম।’

অনুষ্ঠান উপস্থিত কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিদ্যালয়ের মাঠে শহীদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ বানানো হয়েছে। সেখানে মূল শহীদ মিনারটি কাপড় দিয়ে ঢেকে পেছনে ফেলা হয়েছে। আর বেদিতে মঞ্চ করা হয়েছে। অতিথিদের সামনে বিশাল টেবিল এবং চেয়ার দেয়া হয়েছে। পাশেই বক্তব্য দেয়ার জন্যে মাইকের স্ট্যান্ড দেয়া হয়েছে।

দুপুর একটার দিকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো.মোজাফফর হোসেনসহ সব অতিথি একে একে সবাই জুতা পায়ে মঞ্চে উঠে চেয়ারে বসেন। বেদিতে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যান্য লোকজনকেও জুতা পায়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে দেখা যায়। অনুষ্ঠানটি দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে শেষ হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল আলম।

বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেন।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো.আব্দুল জলিল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এ. কে আজাদ বাদল ও সদস্য মো. আবুল খায়ের খোকা মাস্টার, বাঁশচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল আলীম, সহসভাপতি মো. মাহমুদুল হাসান বাচ্চু, সহসভাপতি মো. শাহজাহান আলী, সহসভাপতি মো. সরোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল লতিফ প্রমুখ।

জামালপুরের ভাষা ও মুক্তিসংগ্রাম গবেষণা কেন্দ্রের সদস্য জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারিতে শদীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়া অন্যকোন অনুষ্ঠান করা যাবে না। জুতা নিয়ে শহীদ মিনারে পদচারণা করা ভাষা শহীদদের প্রতি অবমাননা এবং আইন অমান্য করা। যাঁরা এ ধরনের আচরণ করবে, তাঁদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া উচিৎ।’

জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল আলম বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেখানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। আর সবাইতো সেখানে জুতা পায়ে দিয়ে উঠেছে, তাই আমিও উঠেছি।

বটতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা বলেন, ‘প্রত্যেক বছরই সেখানে অনুষ্ঠান করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় সেখানে করা হয়েছে। প্রধান অতিথিরাই যদি ওঠে, তাহলে আর কি।   ’সুত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

শহীদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ, জুতা পায়ে পুরস্কার দিলেন অতিথিরা

আপডেট সময় : ০১:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

শহীদ মিনারের বেদিতে স্কুলের ক্রীড়া অনুষ্ঠানের মঞ্চ করে জুতা পায়ে দিয়ে উঠলেন জামালপুর-৫ সদর আসনের এমপি মোজাফফর হোসেন ও শিক্ষকসহ অতিথিরা।

জামালপুর সদর উপজেলার বটতলা উচ্চবিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শহীদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ বানিয়ে শনিবার বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ভাষার মাসে এমন ঘটনায় উপস্থিত অনেককেই ক্ষুদ্ধ হয়ে সমালোচনা করতে দেখা যায়।

তবে সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘সেটা যে শহীদ মিনার, আমি বুঝতেই পারিনি। আমি ভেবেছি-সেটা একটি ভাঙা মঞ্চ। কেউ যদি আমাকে বলতো, সেটা শহূদ মিনার, তাহলে আমি জুতা নিয়ে উঠতাম না। প্রয়োজনে আমি সেখান থেকে নেমে যেতাম।’

অনুষ্ঠান উপস্থিত কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিদ্যালয়ের মাঠে শহীদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ বানানো হয়েছে। সেখানে মূল শহীদ মিনারটি কাপড় দিয়ে ঢেকে পেছনে ফেলা হয়েছে। আর বেদিতে মঞ্চ করা হয়েছে। অতিথিদের সামনে বিশাল টেবিল এবং চেয়ার দেয়া হয়েছে। পাশেই বক্তব্য দেয়ার জন্যে মাইকের স্ট্যান্ড দেয়া হয়েছে।

দুপুর একটার দিকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো.মোজাফফর হোসেনসহ সব অতিথি একে একে সবাই জুতা পায়ে মঞ্চে উঠে চেয়ারে বসেন। বেদিতে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যান্য লোকজনকেও জুতা পায়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে দেখা যায়। অনুষ্ঠানটি দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে শেষ হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল আলম।

বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেন।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো.আব্দুল জলিল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এ. কে আজাদ বাদল ও সদস্য মো. আবুল খায়ের খোকা মাস্টার, বাঁশচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল আলীম, সহসভাপতি মো. মাহমুদুল হাসান বাচ্চু, সহসভাপতি মো. শাহজাহান আলী, সহসভাপতি মো. সরোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল লতিফ প্রমুখ।

জামালপুরের ভাষা ও মুক্তিসংগ্রাম গবেষণা কেন্দ্রের সদস্য জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারিতে শদীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়া অন্যকোন অনুষ্ঠান করা যাবে না। জুতা নিয়ে শহীদ মিনারে পদচারণা করা ভাষা শহীদদের প্রতি অবমাননা এবং আইন অমান্য করা। যাঁরা এ ধরনের আচরণ করবে, তাঁদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া উচিৎ।’

জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল আলম বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেখানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। আর সবাইতো সেখানে জুতা পায়ে দিয়ে উঠেছে, তাই আমিও উঠেছি।

বটতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা বলেন, ‘প্রত্যেক বছরই সেখানে অনুষ্ঠান করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় সেখানে করা হয়েছে। প্রধান অতিথিরাই যদি ওঠে, তাহলে আর কি।   ’সুত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল