ঢাকা ০২:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী অভিযাত্রী ক্লাবকে বাঁচানোর দাবিতে মানববন্ধন

সোহরাব হোসেন সৌরভ, রাজশাহী ||
  • আপডেট সময় : ০৯:৪১:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩ ১০৫ বার পড়া হয়েছে

‘ষড়যন্ত্রের’ হাত থেকে রাজশাহী নগরীর ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া ও সমাজ কল্যাণমূলক যুব সংগঠন অভিযাত্রী ক্লাবকে বাঁচানোর দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় শহরের ঘোড়ামারা এলাকায় অভিযাত্রী ক্লাবের সামনের রাস্তায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ক্লাবের সদস্যবৃন্দ, বর্তমান-সাবেক খেলোয়ারসহ স্থানীয় এলাকাবাসী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে ক্লাব চত্বরে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্যে ক্লাবের সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু বলেন, রাজশাহী শহরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি অনুমোদিত ক্রীড়া সংগঠন এই অভিযাত্রী ক্লাব। ১৯৮১ সালে সরকারের কাছ থেকে বাৎসরিক লিজ নিয়ে গত ৪৩ বছর ধরে ক্লাব হিসেবে ব্যবহার ও ভোগদখল চলে আসছে। সর্বশেষ ২০২০ সাল পর্যন্ত ক্লাবের নামেই জমির বাৎসরিক কর বা খাজনা পরিশোধ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি কুচক্রি মহল ক্লাবের জমি দখলে নেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। তারা নিজেদের জমির প্রকৃত মালিকের আত্মীয় দাবি করছে। কিন্তু এটি কখনোই সম্ভব নয়! আমরা এলাকাবাসী যতদূর জানি, জমির মালিকের আত্মীয় তিনি নন। জমির মালিক একজন মারোয়ারি সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনি এখন ভারতে থাকেন। আর তার আত্মীয় দাবিকারী একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী। দু’টি আলাদা সম্প্রদায়ের নিজস্ব সত্বা অনুযায়ী কখনোই তারা আত্মীয় হতে পারেন না।

সুতরাং, বিষয়টি অত্যন্ত পরিষ্কার- ক্লাবের জমিটিকে হাতিয়ে নিতেই তারা এসব মিথ্যা নাটকের পায়তারা করছেন। মহামান্য আদালতে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে ক্লাবের জমি দখলের একটি রায়ও নিয়েছেন। আমরা ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত সদস্যরা ও এলাকাবাসী কখনোই এটি মেনে নিবো না। আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মহামান্য আদালনের রায়কে সম্মান জানিয়েই তা পুনঃনিরীক্ষণের দাবি জানাবো।

মানববন্ধনে অভিযাত্রী ক্লাবের সদস্য ও স্থানীয় এলাকাবাসী বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, আমরা অনেকেই শিশু-কিশোর বয়স থেকে ক্লাবটিকে দেখে আসছি। এর সঙ্গে আমাদের আবেগ-অনুভূতি সবকিছুই জড়িয়ে আছে। রাজশাহীর অনেক স্বনামধন্য খেলোয়ার এই ক্লাবের হয়ে জাতীয় পর্যায়ে খেলে শহরের জন্য সুনাম কুড়িয়ে এনেছেন। এখন কেউ একজন যদি হঠাৎ করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বৈধভাবে ক্লাবের নামে লিজ নেয়া জমিকে নিজের জমি হিসেবে দাবি করেন, তবে এলাকাবাসী তা মেনে নেবে না। জীবন দিয়ে হলেও সেটিকে প্রতিহত করবে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, মাননীয় নেত্রী; আপনি একজন ক্রীড়াবান্ধব রাষ্ট্রনায়ক। একদিকে যখন আপনি দেশের তরুণ-যুবকদের শৃঙ্খল করতে ক্রীড়াঙ্গনকে ঢেলে সাজাচ্ছেন, তাদের মাঠে ফেরানোর চেষ্টা করছেন; তখন অপরদিকে ষড়যন্ত্রকারীরা প্রতিষ্ঠিত একটি ক্লাববে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করবে, এটি হতে পারে না। আমরা আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করি। অনতিবিলম্বে ক্লাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ করা না হলে এলাকবাসী কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

ঘন্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুন নবী অনু, অভিযাত্রী ক্লাবের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ ইসলাম সুমন, সদস্য দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, শাহজাহান আলী, শহিদুল্লাহ খান জন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, সিরাজুর রহমান খানসহ সাবেক-বতর্মান খেলোয়ারেরা বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনে শেষে অভিযাত্রী ক্লাবকে বাঁচাতে সদস্যরা আদালতের দেয়া রায় পুনঃনিরীক্ষণের দাবি করে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন জানান। পরে জেলা প্রশাসক এটি পর্যালোচনা করার সম্মতি ব্যক্ত করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী অভিযাত্রী ক্লাবকে বাঁচানোর দাবিতে মানববন্ধন

আপডেট সময় : ০৯:৪১:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩

‘ষড়যন্ত্রের’ হাত থেকে রাজশাহী নগরীর ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া ও সমাজ কল্যাণমূলক যুব সংগঠন অভিযাত্রী ক্লাবকে বাঁচানোর দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় শহরের ঘোড়ামারা এলাকায় অভিযাত্রী ক্লাবের সামনের রাস্তায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ক্লাবের সদস্যবৃন্দ, বর্তমান-সাবেক খেলোয়ারসহ স্থানীয় এলাকাবাসী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে ক্লাব চত্বরে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্যে ক্লাবের সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু বলেন, রাজশাহী শহরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি অনুমোদিত ক্রীড়া সংগঠন এই অভিযাত্রী ক্লাব। ১৯৮১ সালে সরকারের কাছ থেকে বাৎসরিক লিজ নিয়ে গত ৪৩ বছর ধরে ক্লাব হিসেবে ব্যবহার ও ভোগদখল চলে আসছে। সর্বশেষ ২০২০ সাল পর্যন্ত ক্লাবের নামেই জমির বাৎসরিক কর বা খাজনা পরিশোধ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি কুচক্রি মহল ক্লাবের জমি দখলে নেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। তারা নিজেদের জমির প্রকৃত মালিকের আত্মীয় দাবি করছে। কিন্তু এটি কখনোই সম্ভব নয়! আমরা এলাকাবাসী যতদূর জানি, জমির মালিকের আত্মীয় তিনি নন। জমির মালিক একজন মারোয়ারি সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনি এখন ভারতে থাকেন। আর তার আত্মীয় দাবিকারী একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী। দু’টি আলাদা সম্প্রদায়ের নিজস্ব সত্বা অনুযায়ী কখনোই তারা আত্মীয় হতে পারেন না।

সুতরাং, বিষয়টি অত্যন্ত পরিষ্কার- ক্লাবের জমিটিকে হাতিয়ে নিতেই তারা এসব মিথ্যা নাটকের পায়তারা করছেন। মহামান্য আদালতে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে ক্লাবের জমি দখলের একটি রায়ও নিয়েছেন। আমরা ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত সদস্যরা ও এলাকাবাসী কখনোই এটি মেনে নিবো না। আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মহামান্য আদালনের রায়কে সম্মান জানিয়েই তা পুনঃনিরীক্ষণের দাবি জানাবো।

মানববন্ধনে অভিযাত্রী ক্লাবের সদস্য ও স্থানীয় এলাকাবাসী বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, আমরা অনেকেই শিশু-কিশোর বয়স থেকে ক্লাবটিকে দেখে আসছি। এর সঙ্গে আমাদের আবেগ-অনুভূতি সবকিছুই জড়িয়ে আছে। রাজশাহীর অনেক স্বনামধন্য খেলোয়ার এই ক্লাবের হয়ে জাতীয় পর্যায়ে খেলে শহরের জন্য সুনাম কুড়িয়ে এনেছেন। এখন কেউ একজন যদি হঠাৎ করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বৈধভাবে ক্লাবের নামে লিজ নেয়া জমিকে নিজের জমি হিসেবে দাবি করেন, তবে এলাকাবাসী তা মেনে নেবে না। জীবন দিয়ে হলেও সেটিকে প্রতিহত করবে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, মাননীয় নেত্রী; আপনি একজন ক্রীড়াবান্ধব রাষ্ট্রনায়ক। একদিকে যখন আপনি দেশের তরুণ-যুবকদের শৃঙ্খল করতে ক্রীড়াঙ্গনকে ঢেলে সাজাচ্ছেন, তাদের মাঠে ফেরানোর চেষ্টা করছেন; তখন অপরদিকে ষড়যন্ত্রকারীরা প্রতিষ্ঠিত একটি ক্লাববে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করবে, এটি হতে পারে না। আমরা আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করি। অনতিবিলম্বে ক্লাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ করা না হলে এলাকবাসী কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

ঘন্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুন নবী অনু, অভিযাত্রী ক্লাবের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ ইসলাম সুমন, সদস্য দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, শাহজাহান আলী, শহিদুল্লাহ খান জন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, সিরাজুর রহমান খানসহ সাবেক-বতর্মান খেলোয়ারেরা বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধনে শেষে অভিযাত্রী ক্লাবকে বাঁচাতে সদস্যরা আদালতের দেয়া রায় পুনঃনিরীক্ষণের দাবি করে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন জানান। পরে জেলা প্রশাসক এটি পর্যালোচনা করার সম্মতি ব্যক্ত করেন।