ঢাকা ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ময়মনসিংহে আলোচিত ৪খন্ড লাশের রহস্য উদ্‌ঘাটন, মূল হত্যাকারীসহ গ্রেপ্তার ৩

ময়মনসিংহ প্রতিবেদকঃ
  • আপডেট সময় : ১০:১১:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪ ৩৯ বার পড়া হয়েছে

ময়মনসিংহে বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী ওমর ফারুক ওরফে সৌরভ (২২) হত্যাকাণ্ডের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন এবং মূল হত্যাকারীসহ জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই তিনজনের মধ্যে ওমর ফারুকের চাচা ইলিয়াস উদ্দিন (৫৫) রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। বাকী দুজন হলো- ঈশ্বরগঞ্জের হোসেনপুর এলাকার মৃত আক্তারুজ্জামান এর পুত্র আহাদুজ্জামান ফারুক(৩০) ও লাশ বহনকারী গাড়ীর ড্রাইভার নান্দাইলের চান্দুরা এলাকার আব্দুল হান্নান আকন্দ (৬৫)।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৪জুন) দুপুর দেড়টায় ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভূইয়া। হত্যাকাণ্ডের পর লাশ গুমে ব্যবহৃত প্রাইভেট কারও উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান-গত ০২ জুন সকাল অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার সময় কোতোয়ালী মডেল থানাধীন মনতলাস্থ সুতিয়া নদীর ব্রীজের নিচে পানিতে ভাসমান অবস্থায় একটি লাগেজ ও পাশেই স্থলভাগে একটি মানুষের মাথা দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মানুষের মাথা ও পাশেই পানিতে ভাসমান লাগেজ উদ্ধার করে লাগেজ খুলে চার টুকরা পুরুষের খন্ডিত অংশ উদ্ধার করে।

তবে তাৎক্ষণিক লাশের পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। লাশের পরিচয় সনাক্তের জন্য বিভিন্ন ইলেট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ জেলা পুলিশ অফিসিয়াল ফেসবুকে সংবাদ পোষ্ট করা হয়। ঘটনাস্থলে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতসহ আনুষক্সিগক অন্যান্য কার্যাদি সম্পন্ন করে লাশের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহের নিমিত্তে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হত্যাকান্ডের বিষয়ে সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ভিকটিমের আত্মীয়-স্বজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে উপস্থিত হয়ে ভিকটিম এর মুখমন্ডল, পড়নের কাপড়-চোপড় এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট দেখে পরিচয় সনাক্ত করেন। সনাক্তকৃতদের পরিচয় থেকে জানা যায় ভিকটিমের নাম ওমর ফারুক সৌরভ (২৪)। তার বাবার নাম -ইফছুফ আলী,সে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারাটি এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ সুপার জানান- নিহত ওমর ফারুকের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারাটি গ্রামে। তবে তাঁর পরিবার স্থায়ীভাবে ঢাকায় মতিঝিলে বসবাস করে। তাঁর বাবার নাম ইউসুফ আলী। ওমর ফারুক গুলশানের বেসরকারি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত রোববার সকালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মনতলা এলাকায় সেতুর নিচে মাথা ও দুই পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ওমর ফারুকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার রাতে গ্রামের বাড়িতে ওমর ফারুকের মরদেহ দাফন করা হয়।

ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইউসুফ আলী বাদী হয়ে গত রবিবার রাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন,মামলা নং-০৬, তারিখ-০২/০৬/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩০১/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০ রুজু করা হয়। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

পরে জেলা পুলিশ সুপারের দিক-নির্দেশনা মোতাবেক কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ওসি ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকশ টিম উক্ত ঘটনার রহস্য উন্মোচন ও আসামী গ্রেফতারের জন্য মাঠে নামেন।তথ্য প্রযুুক্তি ও নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে ৪জুন ঢাকা ও ময়মনসিংহ ধোবাউড়া থানা এলাকা থেকে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যাকান্ডের মূল হত্যাকারী সহ তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভূইয়া।

গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামী ইলিয়াছ ও ডিসিষ্ট ওমর ফারুক সৌরভ পরস্পর আপন চাচা- ভাতিজা। আসাামি ইলিয়াছ এর মেয়ে ইভা আক্তারকে ডিসিষ্ট ওমর ফারুক সৌরভ (২৪) গোপনে বিবাহ করে। ইভার ডিসিষ্ট ওমর ফারুক সৌরভ এর সাথে বিবাহের পূর্বে অন্যত্র বিবাহ হয়েছিল। বিষয়টি পরবর্তীতে ইভার বাবা মা জানলে তাহার চরম ক্ষিপ্ত হয় এবং এই বিবাহ কোনক্রমেই মেনে নিবে না বলে জানায়। এই ঘটনা নিয়ে ইলিয়াছ এর আপন ভাই ইউসুফ (ডিসিষ্ট এর বাবা) এর সাথে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। দুইজনের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয় এবং ওমর ফারুক সৌরভকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আসামী ইলিয়াছ তার মেয়ে ইভাকে গত মে মাসের মাঝামাঝি পড়াশুনার জন্য কানাডা পাঠায়। গত ২রা জুন বিকালে ডিসিষ্ট ওমর ফারুক সৌরভ ময়মনসিংহে আসে এবং চাচাতো ভাই মৃদুল (১৭) (আসামী ইলিয়াছ এর ছেলে) কে ফোন দিলে, মৃদুল সৌরভকে কোতোয়ালী মডেল থানাধীন গোহাইলকান্দি (প্রাইমার স্কুল সংলগ্ন) বাসায় আসতে বলে। সৌরভ বাসায় গেলে চাচা ইলিয়াছ বাসার নিচ তলায় একটি ভাড়া করা কক্ষে নিয়ে হাত পা বাঁধে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ইলিয়াছ এর শ্যালক আহাদুজ্জামান ফারুক (৩০) কে ফোন করে ময়মনসিংহ বাসায় ডেকে নিয়ে আসে এবং এক পর্যায়ে দুজন মিলে সৌরভকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে মাথায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে লাশ বাথরুমে রাখে। লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা মাফিক ময়মনসিংহ গাঙ্গীনারপাড় হতে ট্রলি ব্যাগ (লাগেজ), পলিথিন ও হ্যান্ডগ্লোভস কিনে বাসায় নিয়ে যায়। বাথরুমে রাখা সৌরভ এর মৃত দেহের শরীর হতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা এবং দুই পায়ের ঊরু বিচ্ছিন্ন করে পলিথিনে প্যাকেট করে লাগেজের মধ্যে রাখে। মাথাটি স্বচ্ছ পলিথিনে মুড়িয়ে একটি শপিং ব্যাগে রাখে। ২রা জুন রাত অনুমান ১২.৩০ ঘটিকার সময় লাগেজ ও শপিং ব্যাগে রাখা মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে আসামী ইলিয়াছ আলী ও আহাদুজ্জামান ফারুক একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে প্রাইভেটকারের ব্যাগ ডালার ভিতরে নিয়ে কোতোয়ালী মডেল থানাধীন মনতলা ব্রীজের উপর হতে সুতিয়া নদীতে ফেলে দেয়। মামলাটি কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ময়মনসিংহে আলোচিত ৪খন্ড লাশের রহস্য উদ্‌ঘাটন, মূল হত্যাকারীসহ গ্রেপ্তার ৩

আপডেট সময় : ১০:১১:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

ময়মনসিংহে বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী ওমর ফারুক ওরফে সৌরভ (২২) হত্যাকাণ্ডের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন এবং মূল হত্যাকারীসহ জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই তিনজনের মধ্যে ওমর ফারুকের চাচা ইলিয়াস উদ্দিন (৫৫) রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। বাকী দুজন হলো- ঈশ্বরগঞ্জের হোসেনপুর এলাকার মৃত আক্তারুজ্জামান এর পুত্র আহাদুজ্জামান ফারুক(৩০) ও লাশ বহনকারী গাড়ীর ড্রাইভার নান্দাইলের চান্দুরা এলাকার আব্দুল হান্নান আকন্দ (৬৫)।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৪জুন) দুপুর দেড়টায় ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভূইয়া। হত্যাকাণ্ডের পর লাশ গুমে ব্যবহৃত প্রাইভেট কারও উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান-গত ০২ জুন সকাল অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার সময় কোতোয়ালী মডেল থানাধীন মনতলাস্থ সুতিয়া নদীর ব্রীজের নিচে পানিতে ভাসমান অবস্থায় একটি লাগেজ ও পাশেই স্থলভাগে একটি মানুষের মাথা দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মানুষের মাথা ও পাশেই পানিতে ভাসমান লাগেজ উদ্ধার করে লাগেজ খুলে চার টুকরা পুরুষের খন্ডিত অংশ উদ্ধার করে।

তবে তাৎক্ষণিক লাশের পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। লাশের পরিচয় সনাক্তের জন্য বিভিন্ন ইলেট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ জেলা পুলিশ অফিসিয়াল ফেসবুকে সংবাদ পোষ্ট করা হয়। ঘটনাস্থলে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতসহ আনুষক্সিগক অন্যান্য কার্যাদি সম্পন্ন করে লাশের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহের নিমিত্তে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হত্যাকান্ডের বিষয়ে সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ভিকটিমের আত্মীয়-স্বজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে উপস্থিত হয়ে ভিকটিম এর মুখমন্ডল, পড়নের কাপড়-চোপড় এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট দেখে পরিচয় সনাক্ত করেন। সনাক্তকৃতদের পরিচয় থেকে জানা যায় ভিকটিমের নাম ওমর ফারুক সৌরভ (২৪)। তার বাবার নাম -ইফছুফ আলী,সে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারাটি এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ সুপার জানান- নিহত ওমর ফারুকের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারাটি গ্রামে। তবে তাঁর পরিবার স্থায়ীভাবে ঢাকায় মতিঝিলে বসবাস করে। তাঁর বাবার নাম ইউসুফ আলী। ওমর ফারুক গুলশানের বেসরকারি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত রোববার সকালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মনতলা এলাকায় সেতুর নিচে মাথা ও দুই পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ওমর ফারুকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার রাতে গ্রামের বাড়িতে ওমর ফারুকের মরদেহ দাফন করা হয়।

ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইউসুফ আলী বাদী হয়ে গত রবিবার রাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন,মামলা নং-০৬, তারিখ-০২/০৬/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩০১/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০ রুজু করা হয়। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

পরে জেলা পুলিশ সুপারের দিক-নির্দেশনা মোতাবেক কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ওসি ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকশ টিম উক্ত ঘটনার রহস্য উন্মোচন ও আসামী গ্রেফতারের জন্য মাঠে নামেন।তথ্য প্রযুুক্তি ও নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে ৪জুন ঢাকা ও ময়মনসিংহ ধোবাউড়া থানা এলাকা থেকে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যাকান্ডের মূল হত্যাকারী সহ তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভূইয়া।

গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামী ইলিয়াছ ও ডিসিষ্ট ওমর ফারুক সৌরভ পরস্পর আপন চাচা- ভাতিজা। আসাামি ইলিয়াছ এর মেয়ে ইভা আক্তারকে ডিসিষ্ট ওমর ফারুক সৌরভ (২৪) গোপনে বিবাহ করে। ইভার ডিসিষ্ট ওমর ফারুক সৌরভ এর সাথে বিবাহের পূর্বে অন্যত্র বিবাহ হয়েছিল। বিষয়টি পরবর্তীতে ইভার বাবা মা জানলে তাহার চরম ক্ষিপ্ত হয় এবং এই বিবাহ কোনক্রমেই মেনে নিবে না বলে জানায়। এই ঘটনা নিয়ে ইলিয়াছ এর আপন ভাই ইউসুফ (ডিসিষ্ট এর বাবা) এর সাথে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। দুইজনের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয় এবং ওমর ফারুক সৌরভকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আসামী ইলিয়াছ তার মেয়ে ইভাকে গত মে মাসের মাঝামাঝি পড়াশুনার জন্য কানাডা পাঠায়। গত ২রা জুন বিকালে ডিসিষ্ট ওমর ফারুক সৌরভ ময়মনসিংহে আসে এবং চাচাতো ভাই মৃদুল (১৭) (আসামী ইলিয়াছ এর ছেলে) কে ফোন দিলে, মৃদুল সৌরভকে কোতোয়ালী মডেল থানাধীন গোহাইলকান্দি (প্রাইমার স্কুল সংলগ্ন) বাসায় আসতে বলে। সৌরভ বাসায় গেলে চাচা ইলিয়াছ বাসার নিচ তলায় একটি ভাড়া করা কক্ষে নিয়ে হাত পা বাঁধে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ইলিয়াছ এর শ্যালক আহাদুজ্জামান ফারুক (৩০) কে ফোন করে ময়মনসিংহ বাসায় ডেকে নিয়ে আসে এবং এক পর্যায়ে দুজন মিলে সৌরভকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে মাথায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে লাশ বাথরুমে রাখে। লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা মাফিক ময়মনসিংহ গাঙ্গীনারপাড় হতে ট্রলি ব্যাগ (লাগেজ), পলিথিন ও হ্যান্ডগ্লোভস কিনে বাসায় নিয়ে যায়। বাথরুমে রাখা সৌরভ এর মৃত দেহের শরীর হতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা এবং দুই পায়ের ঊরু বিচ্ছিন্ন করে পলিথিনে প্যাকেট করে লাগেজের মধ্যে রাখে। মাথাটি স্বচ্ছ পলিথিনে মুড়িয়ে একটি শপিং ব্যাগে রাখে। ২রা জুন রাত অনুমান ১২.৩০ ঘটিকার সময় লাগেজ ও শপিং ব্যাগে রাখা মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে আসামী ইলিয়াছ আলী ও আহাদুজ্জামান ফারুক একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে প্রাইভেটকারের ব্যাগ ডালার ভিতরে নিয়ে কোতোয়ালী মডেল থানাধীন মনতলা ব্রীজের উপর হতে সুতিয়া নদীতে ফেলে দেয়। মামলাটি কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানান পুলিশ সুপার।