ময়মনসিংহের বিদ্যাগঞ্জ বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে হামলা ভাংচুর-লুটপাটের অভিযোগ
- আপডেট সময় : ০৪:৫৩:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ৯৫ বার পড়া হয়েছে
ময়মনসিংহের সদরে পুর্বশত্রুতার জের ধরে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীর দোকানে ঢুকে ব্যবসায়ীকে মারধর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর- লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিবাদ করায় ব্যবসায়ীকেও মারধর করে আহত করেছে হামলাকারীরা। এব্যাপারে ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার (২০এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে উপজেলার কুষ্টিয়া ইউনিয়নের বিদ্যাগঞ্জ বাজারে ব্যবসায়ী তাজুল ইসলামের সুপার এন্টারপ্রাইজ ও ডিজিটাল স্টুডিও নামক দোকানে এ ঘটনা ঘটে। এসময় তাজুল ইসলামের ছেলে আসিফ হাসান ব্যবসায়ী কাজে দোকানে অবস্থানরত ছিলো,আসিফ হামলাকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে হামলাকারী আসিফকেও মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্বার করেন। এ নিয়ে এলাকায় দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তজেনা বিরাজ করছে। অপর দিকে একটা বাজারে প্রকাশ্যে দিবালোকে একজন ব্যবসায়ীর উপর হামলা,ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝেও চরম ক্ষোভ সমালোচনা দেখা দিয়েছে।
প্রাপ্ত অভিযোগ ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে জানা গেছে- গত বৃহস্পতিবার রাতে কুষ্টিয়া ইউনিয়নের বিদ্যাগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী তাজুল ইসলামের সুপার এন্টারপ্রাইজ ও ডিজিটাল স্টুডিও নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। স্টুডিও টিতে তাজুল ইসলাম এর পুত্র আসিফ হাসান ব্যবসায় পরিচালনা করে আসছে। আসিফের সাথে পুর্ব শত্রুতার জেরে ঘটনার দিন রাত ৯টায় স্থানীয় চকপাড়া এলাকার দুলালের পুত্র তন্ময়(২৫),বেলায়েত এর পুত্র রিয়াদ হোসেন(২০),হাসেন আলীর পুত্র শফিক (২৫), সাজু মিয়ার পুত্র মোতালেব হোসেন (২৫),আমিন মিয়ার পুত্র নাঈম হাসান (২৪),মোকলেস এর পুত্র সৌরভ (২২) সহ অজ্ঞাত আরো ৪-৫জনের একটি সন্ত্রাসী বাহীনী দোকানে ঢুকে অতর্কিত হামলা,ভাংচুর ও লুটপাটের তান্ডব চালায়। এতে ক্যামেরা,কম্পিউটারসহ মুল্যবান আসবাবপত্র ভেঙে প্রায় ২লক্ষ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসময় আসিফ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে হামলাকারীরা আসিফকেও মারধর করে। পরে আসিফের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে হামলাকারীরা ঠিকাদারি কাজের লেবার বেতনের ২.৫০.০০০ টাকা ও ল্যআপটপসহ দোকানের ক্যাশবাক্সে থাকা নগদ প্রায় ৩লক্ষ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।
হামলা ও লুটপাটের শিকার ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম বলেন, এলাকার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী পুর্ব শত্রুতার জেরে পুর্ব পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। চুরি, চাঁদাবাজী ও মাদক ব্যবসায় জড়িত এই দলের সদস্যরা। এ সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে বর্তমানে আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পরিবার পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
অভিযুক্ত প্রধান আসামি তন্ময় এর নামে নারী ধর্ষন সহ একাধিক মামলা রয়েছে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে।
বিদ্যাগঞ্জ বাজার কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাল ফকির হামলার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন-প্রধান আসামী তন্ময় ছেলেটা প্রায়ই এলাকায় ত্রাশ করে বেড়ায়,এর আগেও স্কুল মার্কেটের একটি দোকানসহ কয়েকস্থানে একরকম ঘটনা ঘটিয়ে এলাকায় আতংকের সৃষ্টি করেছে বলেও জানান তিনি।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল সরকার জানান-হামলার বিষয়টা আমি জেনেছি,সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি এবং কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সাহেবের সাথেও যোগাযোগ করে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছি। তিনি ঘটনাটিকে ন্যাক্কারজনক বলে দাবী করেন।
বাবুল সরকার বলেন-আসিফ একজন নম্র ভদ্র ছেলে। তাকে মারধর করায় আমি নিন্দা জানাচ্ছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আনছার আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ঘটনাটিকে ন্যাক্কারজনক বলে দাবী করে এব্যাপারে স্টুডিও’র মালিক তাজুল ইসলামকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান।
এব্যাপারে মিন্টু কলেজের সাবেক ভিপি কামরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন-এই ছেলেগুলো আসলেই খারাপ প্রকৃতির। সব কাজেই তারা দাঙ্গা হাঙ্গামার সৃষ্টি করে। এর আগেও শেখ কামাল স্পোর্টসের একটা জাতীয় খেলা এই তন্ময়ের কারণে অবশেষে বন্ধ হয়ে যায়। তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
তবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হক কালু অসুস্থ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জানান-এব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের পক্রিয়া চলছে। দ্রুতই আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে নলে জানান তিনি।