বোরো ধান কাটার শুরুতেই শ্রমিক সংকট
- আপডেট সময় : ১০:২১:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৩ ৮৮ বার পড়া হয়েছে
খাদ্য শস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিস্তৃর্ণ ফসলী মাঠে পুরো দমে নতুন বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। বর্তমানে নারী এবং পুরুষ কৃষি শ্রমিকরা ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাশাপাশি ধানের বাম্পার ফলনও হওয়ায় বোরো চাষী কৃষকও খুশি। তবে ধান কাটা শুরুতেই ধানকাটা শ্রমিক সংকটের মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় ২৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ব্রি ২৯, ব্রি ২৮, ব্রি-৮৯, ব্রি-৯০, ব্রি কাটারীভোগ, সুবললতা, স্থানীয় জাত আব্দুল গুটি সহ বিভিন্ন জাতের বোরো ধান চাষ করা হয়েছে।
মূলতঃ সার, ডিজেল, বিদ্যুতের কোন সমস্যা না হওয়ায় তাড়াশ উপজেলার কৃষক এ বছর নির্বিঘ্নে বোরো ধানের আবাদ করতে পেরেছেন। বর্তমানে বৈশাখের দ্বিতীয় সপ্তাহেই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ফসলী মাঠে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা ও কৃষকের বাড়ির উঠানে নতুন বোরো ধান মাড়াই শুরু হয়েছে। সেই সাথে বাম্পার ফলনও মিলছে বলে জানান, পাড়িল গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক। এছাড়া তিনি আরো জানান, হাট বাজারে নতুন উঠা কাঁচা ভেজা ধানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
উপজেলার উত্তর শ্যামপুর গ্রামের আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, প্রতি বিঘাতে ব্রি-৯০, কাটারীভোগসহ বর্তমানে যে সকল জাতের ধান কাটা হচ্ছে তা প্রকার ভেদে প্রতি বিঘায় ১৮-২৬ মণ হারে ফলন হচ্ছে। অবশ্য কৃষকদের দাবী হাইব্রীড সহ কয়েকটি জাতের ধানের ফলন আরোও বেশি। তবে ঈদ এবং গরমের কারণে ধানকাটা শ্রমিকের সংকটও রয়েছে এলাকায় এ কথাও জানান তিনি।
এ দিকে জমিতে ধান পেঁকে উঠায় দ্রুত কাটার জন্য ধানকাটার শুরুতেই উপজেলার কৃষকেরা শ্রমিক সংকটের মুখে পড়েছেন। আর শ্রমিক সংকট মোকাবেলায় স্থানীয় অনেকে কৃষকেরা ধানকাটা শ্রমিকের খোঁজে নেমে পড়েছেন। তাঁরা বিশেষ করে রংপুর, চাপাইনবগঞ্জ, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, সাথিয়া, নাকালিয়া বেড়া, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, শাহাজাদপুর এলাকাসহ যেসব এলাকায় ধানকাটা শ্রমিক পাওয়া যায়। সেখানে খোঁজ খবর লাগিয়ে ধানকাটার জন্য শ্রমিকদের সাথে অগ্রিম টাকা বায়না করছেন।
অপর দিকে তালম ইউনিয়নের পাড়িল গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ সরকার জানান, বর্তমানে কৃষকের বাড়ি থেকে জমির দুরত্ব ভেদে মণ প্রতি ৫ থেকে ৭ কেজি ধান পারিশ্রমিক হিসেবে দিয়ে ধানকাটা শুরু করেছে। আর টাকায় ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা বিঘায় ধান কাটাচ্ছেন। কিন্তু উপজেলায় হারবেষ্টার মেশিন দিয়েও বিঘায় ২ হাজার টাকা খরচে ধান কাটা গেলেও বেশির ভাগ খড় নষ্ট হওয়ায় গবাদি পশুর খাদ্যের কথা চিন্তা করে অনেকেই কৃষি শ্রমিক দিয়ে ধান কাটাচ্ছেন। তাই কৃষি শ্রমিকের চাহিদাও বেশি।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ্ আল মামুন জানান, উপজেলায় আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। আর ঈদের কারণে শ্রমিকদের আসতে দেরি হলেও তিন চার দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় শ্রমিক পাওয়া যাবে।
তিনি আরো জানান, আমরা কৃষকদের কে দ্রুত পাঁকা ধান কাটার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি এবং এখন পর্যন্ত যে সকল জমিতে বোরো ধান কাটা চলছে সেখানে কৃষক বোরো ধানের বাম্পার ফলনও পাচ্ছেন। আমরা আশা করছি চলতি বোরো মৌসুমে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত খাদ্য শস্য উৎপাদন হবে উপজেলায়।