ঢাকা ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বের ৪২ ট্রিলিয়ন সম্পদের ৬৭ শতাংশের মালিকানা ১% ধনীর হাতে

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৯:৩০:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩ ১২৩ বার পড়া হয়েছে

বিশ্বে ২০২০ সালের পর তৈরি হওয়া ৪২ ট্রিলিয়ন ডলারের নতুন সম্পদের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ বা ৬৭ শতাংশের মালিকানা বিশ্বের মাত্র ১ শতাংশ শীর্ষ ধনীর হাতে চলে গেছে। সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনের আগে সোমবার আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফামের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

অক্সফামের ‘সারভাইভাল অব দ্য রিচেস্ট’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের মাত্র ১ শতাংশ শীর্ষ ধনীর হাতে চলে যাওয়া এই সম্পদের পরিমাণ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৯৯ শতাংশের প্রাপ্ত সম্পদের প্রায় দ্বিগুণ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিলিওনেয়ারদের সম্পদ দৈনিক প্রায় ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, বিশ্বে বর্তমানে ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন কর্মী এমন সব দেশে বসবাস করছেন, যেখানে তাদের মজুরির হারের তুলনায় মুল্যস্ফীতি বেশি বেড়েছে।

অক্সফাম বলছে, একই সময়ে বিশ্বের বিলিওনেয়াররা যেসব দেশে বসবাস করছেন, সেসব দেশে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদের ওপর তাদের সরাসরি কোনও কর দিতে হয় না। এর ফলে উত্তরসূরিদের কাছে বিলিওনেয়াররা ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ রেখে যেতে পারবেন; যা পুরো আফ্রিকার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) চেয়েও বেশি।

আন্তর্জাতিক এই দাতব্য সংস্থা বলেছে, বিশ্বের শীর্ষ মাল্টি-মিলিওনেয়ার ও বিলিওনেয়ারদের ওপর ৫ শতাংশ কর আরোপ করা হলে তা বছরে ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের তহবিল হবে। আর এই অর্থ দিয়ে বিশ্বের ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করা যাবে।

অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার বলেছেন, ‘সাধারণ মানুষ যখন খাবারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড়ে ত্যাগ স্বীকার করছেন, তখন অতি-ধনীরা তাদের বুনো স্বপ্নকেও ছাড়িয়ে গেছেন। মাত্র দুই বছরের মধ্যে এই দশকটি বিলিওনেয়ারদের জন্য সেরা দশকে পরিণত হতে চলেছে— বিশ্বের অতী ধনীদের জন্য একটি গর্জনশীল দশক।’

‘‘বিশ্বের অতি-ধনী আর বড় বড় কর্পোরেশনের ওপর কর আরোপ করা হলে আজকের সঙ্কটের সমাধানের দরজা খুলে যাবে। সেই সুবিধাজনক মিথ ভেঙে ফেলার সময় এসেছে। যে মিথের ওপর ভর করে অতি-ধনীদের লাভের জন্য কর কাটছাঁট করে তাদের সম্পদকে কোনও না কোনোভাবে বাড়িয়ে তোলা হয় আর অন্য সবার ‘কমিয়ে দেয়’। বিশ্বে অতি-ধনীদের জন্য বিগত চল্লিশ বছরের কর কাটছাঁট দেখিয়েছে যে, ক্রমবর্ধমান কোনও স্রোত সব জাহাজকে তুলে নেয় না— কেবল সুপারইয়াটগুলোকে তুলে নেয়।’’

সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক এই সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা উপস্থিত হয়ে বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। চলতি বছরের এই সম্মেলন সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এবারের এই শীর্ষ সম্মেলনে ৫২ জন রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রায় ৬০০ জন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অংশ নেবেন। সূত্র-আলজাজিরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিশ্বের ৪২ ট্রিলিয়ন সম্পদের ৬৭ শতাংশের মালিকানা ১% ধনীর হাতে

আপডেট সময় : ০৯:৩০:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩

বিশ্বে ২০২০ সালের পর তৈরি হওয়া ৪২ ট্রিলিয়ন ডলারের নতুন সম্পদের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ বা ৬৭ শতাংশের মালিকানা বিশ্বের মাত্র ১ শতাংশ শীর্ষ ধনীর হাতে চলে গেছে। সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনের আগে সোমবার আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফামের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

অক্সফামের ‘সারভাইভাল অব দ্য রিচেস্ট’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের মাত্র ১ শতাংশ শীর্ষ ধনীর হাতে চলে যাওয়া এই সম্পদের পরিমাণ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৯৯ শতাংশের প্রাপ্ত সম্পদের প্রায় দ্বিগুণ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিলিওনেয়ারদের সম্পদ দৈনিক প্রায় ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, বিশ্বে বর্তমানে ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন কর্মী এমন সব দেশে বসবাস করছেন, যেখানে তাদের মজুরির হারের তুলনায় মুল্যস্ফীতি বেশি বেড়েছে।

অক্সফাম বলছে, একই সময়ে বিশ্বের বিলিওনেয়াররা যেসব দেশে বসবাস করছেন, সেসব দেশে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদের ওপর তাদের সরাসরি কোনও কর দিতে হয় না। এর ফলে উত্তরসূরিদের কাছে বিলিওনেয়াররা ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ রেখে যেতে পারবেন; যা পুরো আফ্রিকার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) চেয়েও বেশি।

আন্তর্জাতিক এই দাতব্য সংস্থা বলেছে, বিশ্বের শীর্ষ মাল্টি-মিলিওনেয়ার ও বিলিওনেয়ারদের ওপর ৫ শতাংশ কর আরোপ করা হলে তা বছরে ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের তহবিল হবে। আর এই অর্থ দিয়ে বিশ্বের ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করা যাবে।

অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার বলেছেন, ‘সাধারণ মানুষ যখন খাবারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড়ে ত্যাগ স্বীকার করছেন, তখন অতি-ধনীরা তাদের বুনো স্বপ্নকেও ছাড়িয়ে গেছেন। মাত্র দুই বছরের মধ্যে এই দশকটি বিলিওনেয়ারদের জন্য সেরা দশকে পরিণত হতে চলেছে— বিশ্বের অতী ধনীদের জন্য একটি গর্জনশীল দশক।’

‘‘বিশ্বের অতি-ধনী আর বড় বড় কর্পোরেশনের ওপর কর আরোপ করা হলে আজকের সঙ্কটের সমাধানের দরজা খুলে যাবে। সেই সুবিধাজনক মিথ ভেঙে ফেলার সময় এসেছে। যে মিথের ওপর ভর করে অতি-ধনীদের লাভের জন্য কর কাটছাঁট করে তাদের সম্পদকে কোনও না কোনোভাবে বাড়িয়ে তোলা হয় আর অন্য সবার ‘কমিয়ে দেয়’। বিশ্বে অতি-ধনীদের জন্য বিগত চল্লিশ বছরের কর কাটছাঁট দেখিয়েছে যে, ক্রমবর্ধমান কোনও স্রোত সব জাহাজকে তুলে নেয় না— কেবল সুপারইয়াটগুলোকে তুলে নেয়।’’

সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক এই সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা উপস্থিত হয়ে বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। চলতি বছরের এই সম্মেলন সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এবারের এই শীর্ষ সম্মেলনে ৫২ জন রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রায় ৬০০ জন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অংশ নেবেন। সূত্র-আলজাজিরা।