ঢাকা ০৪:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ৯ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঘায় সাংবাদিক কে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক//
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৪:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ৪৮ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহীর বাঘায় সরকারি গাছ কাটতে বাধা দেওয়ার জেরে সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ কে হাত-পা বেঁধে নির্মম ভাবে নির্যাতনের পর রাস্তার পাশে খাদে ফেলে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত ২১ শে ফেব্রুয়ারি রাত্রি আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় উপজেলার আড়ানী মহা শ্মশামের পাশ থেকে সাংবাদিক তন্ময় কে উদ্ধার করে স্থানীয় পথচারীরা । পরে তাঁকে চিকিৎসার জন্য বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ জাতীয় দৈনিক স্বাধীন দেশ পত্রিকার রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি ও বাঘা রিপোটার্স ক্লাবের সদস্য।।

এ ঘটনায় সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ বাদী হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত কয়েক জনের বিরুদ্ধে বাঘা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়, রাত্রি আনুমানিক সাড়ে ৯ টার দিকে আড়ানী বাজার থেকে নিজ বাড়িতে ( যোতরঘু) আড়ানী পৌরসভা ২নং ওয়ার্ড যোতরঘু গ্রামের মৃত হজরতের ছেলে ইসলাম তাকে দাঁড় করিয়ে কথা শুরু করে এবং কথ বলার এক পর্যায়ে রাশিদুল ,ইমদাদুল , নান্টু ও রায়হান সেখানে আসে এবং সে কিছু বুঝে উঠার আগেই একই গ্রামের মৃত ইসতাহিন এর ছেলে রাশিদুল তার মুখ চেপে ধরে (যাতে চিৎকার করতে না পারে)।এরপর অন্যরা সবাই মিলে জোরপূর্বক তন্ময়ের গায়ের জ্যাকেট খুলে নেয় এবং সেই জ্যাকেট ছিড়ে তাকে পিচমোরা দিয়ে দুই হাত ও পরে পা দুইটা বেধে মুখের মধ্যে মাথায় থাকা টুপি ঢুকিয়ে দেয়। এরপর রাস্তার পাশে খাদের জঙ্গলে নিয়ে বুকে-পিঠে মাজায় কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ পর রাস্তার উপরে থাকা নাম না জানা আরও কয়েকজন তাদেরকে রাস্তায় পথচারীর উপস্থিতির কথা জানালে তারা তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যাই। সাংবাদিক তন্ময়ও অচেতন হয়ে পরে।

এই ঘটনায় পথচারী সান্টু আলী জানান, আমি দোকান বন্ধ করে বাসায় যাওয়ার সময় লোকজনের হট্টগোল দেখে দাঁড়িয়ে পরি এবং দেখি সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ হাত-পা বাধা অবস্থায় উপুর হয়ে মাটিতে পড়ে রয়েছে । আমরা তখন তার হাত-পায়ের বাঁধন কেটে তাকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় এবং চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি।

তন্ময় দেবনাথ বলেন, আমি পেশায় একজন সাংবাদিক। ৯ ফেব্রুয়ারির আমাদের বাড়ির পাশের রাস্তার সরকারি একটি গাছ কাটতে লাগে ইমদাদুল। আমি ইমদাদুল কে বলি গাছটি সরকারি আপনি কাটছেন কেন। এই কথা শুনে সে আমাকে মারার জন্য তেরে আসে। এরপর এ বিষয়ে বন বিভাগ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। এছাড়াও সে আগে থেকেই বিভিন্ন ভাবে আমাকে মারার জন্য ভয়ভীতি দেখায়তো। শেষ মেষ তারা আমাকে মেরেই ফেলতে লেগেছিল। আমি আমার উপর করা এই নির্মম নির্যাতনের সুষ্ঠ বিচার চাই।

এদিকে সাংবাদিক নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে ঘটনার তদন্ত ও সাংবাদিকের নিরাপত্তা দাবি করেছেন বাঘা রিপোটার্স ক্লাবের সদস্যরা।

বাঘা রিপোটার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইসলাম দিলদার জানিয়েছেন, যারা তন্ময় দেবনাথ কে নির্মম ভাবে নির্যাতন করেছে অবিলম্বে এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হোক।

এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে খুব দ্রুত আইনিপদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বাঘায় সাংবাদিক কে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, থানায় অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৩:৪৪:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

রাজশাহীর বাঘায় সরকারি গাছ কাটতে বাধা দেওয়ার জেরে সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ কে হাত-পা বেঁধে নির্মম ভাবে নির্যাতনের পর রাস্তার পাশে খাদে ফেলে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত ২১ শে ফেব্রুয়ারি রাত্রি আনুমানিক সাড়ে ১১ টার দিকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় উপজেলার আড়ানী মহা শ্মশামের পাশ থেকে সাংবাদিক তন্ময় কে উদ্ধার করে স্থানীয় পথচারীরা । পরে তাঁকে চিকিৎসার জন্য বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ জাতীয় দৈনিক স্বাধীন দেশ পত্রিকার রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি ও বাঘা রিপোটার্স ক্লাবের সদস্য।।

এ ঘটনায় সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ বাদী হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত কয়েক জনের বিরুদ্ধে বাঘা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়, রাত্রি আনুমানিক সাড়ে ৯ টার দিকে আড়ানী বাজার থেকে নিজ বাড়িতে ( যোতরঘু) আড়ানী পৌরসভা ২নং ওয়ার্ড যোতরঘু গ্রামের মৃত হজরতের ছেলে ইসলাম তাকে দাঁড় করিয়ে কথা শুরু করে এবং কথ বলার এক পর্যায়ে রাশিদুল ,ইমদাদুল , নান্টু ও রায়হান সেখানে আসে এবং সে কিছু বুঝে উঠার আগেই একই গ্রামের মৃত ইসতাহিন এর ছেলে রাশিদুল তার মুখ চেপে ধরে (যাতে চিৎকার করতে না পারে)।এরপর অন্যরা সবাই মিলে জোরপূর্বক তন্ময়ের গায়ের জ্যাকেট খুলে নেয় এবং সেই জ্যাকেট ছিড়ে তাকে পিচমোরা দিয়ে দুই হাত ও পরে পা দুইটা বেধে মুখের মধ্যে মাথায় থাকা টুপি ঢুকিয়ে দেয়। এরপর রাস্তার পাশে খাদের জঙ্গলে নিয়ে বুকে-পিঠে মাজায় কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ পর রাস্তার উপরে থাকা নাম না জানা আরও কয়েকজন তাদেরকে রাস্তায় পথচারীর উপস্থিতির কথা জানালে তারা তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যাই। সাংবাদিক তন্ময়ও অচেতন হয়ে পরে।

এই ঘটনায় পথচারী সান্টু আলী জানান, আমি দোকান বন্ধ করে বাসায় যাওয়ার সময় লোকজনের হট্টগোল দেখে দাঁড়িয়ে পরি এবং দেখি সাংবাদিক তন্ময় দেবনাথ হাত-পা বাধা অবস্থায় উপুর হয়ে মাটিতে পড়ে রয়েছে । আমরা তখন তার হাত-পায়ের বাঁধন কেটে তাকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় এবং চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি।

তন্ময় দেবনাথ বলেন, আমি পেশায় একজন সাংবাদিক। ৯ ফেব্রুয়ারির আমাদের বাড়ির পাশের রাস্তার সরকারি একটি গাছ কাটতে লাগে ইমদাদুল। আমি ইমদাদুল কে বলি গাছটি সরকারি আপনি কাটছেন কেন। এই কথা শুনে সে আমাকে মারার জন্য তেরে আসে। এরপর এ বিষয়ে বন বিভাগ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। এছাড়াও সে আগে থেকেই বিভিন্ন ভাবে আমাকে মারার জন্য ভয়ভীতি দেখায়তো। শেষ মেষ তারা আমাকে মেরেই ফেলতে লেগেছিল। আমি আমার উপর করা এই নির্মম নির্যাতনের সুষ্ঠ বিচার চাই।

এদিকে সাংবাদিক নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে ঘটনার তদন্ত ও সাংবাদিকের নিরাপত্তা দাবি করেছেন বাঘা রিপোটার্স ক্লাবের সদস্যরা।

বাঘা রিপোটার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইসলাম দিলদার জানিয়েছেন, যারা তন্ময় দেবনাথ কে নির্মম ভাবে নির্যাতন করেছে অবিলম্বে এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হোক।

এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে খুব দ্রুত আইনিপদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।