ঢাকা ০১:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসী আয় এলো ১৬ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০১:২৩:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩ ৮৫ বার পড়া হয়েছে

ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসী আয় অর্থাৎ রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (এক ডলার সমান ১০৭ টাকা ধরে) প্রায় ১৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। এটি তার আগের মাস জানুয়ারির চেয়ে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলার কম। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির চেয়ে চলতি বছরের একই সময়ে ৬ কোটি ৬৮ লাখ ডলার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

বুধবার (০১ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে জানা গেছে, এ বছরের সদ্য বিদায়ী মাস ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। সে হিসাবে আলোচ্য মাসে প্রতিদিন আসে প্রায় ৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার বা প্রায় ৫৯৬ কোটি টাকার বেশি। আগের মাস জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স আসে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। সে হিসাবে জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলার কম এসেছে। তবে গত বছরের একই মাসের চেয়ে ৬ কোটি ৬৮ লাখ ডলার বেশি এসেছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ফেব্রুয়ারি মাসে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৭ কোটি ৫৭ লাখ ১০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১২৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। পাশাপাশি বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

আলোচিত সময়ে সাত ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব, বেসরকারি খাতের বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, কমিউনিটি ব্যাংক লিমিটেড, বিদেশি হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ। তবে আগামীতে দুইটি বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা রয়েছে। এ কারণে আগামীতে রেমিট্যান্স বেশি পরিমাণ আসবে।

অন্যদিকে ডলার সংকট কাটাতে রিজার্ভ থেকে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) প্রায় ৯৮০ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের ইতিহাসে পুরো অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে এত পরিমাণ ডলার বিক্রি হয়নি। মূলত জরুরি আমদানির দায় মেটাতে রিজার্ভ থেকে এসব ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই থেমে যায়। অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।

দুই মাস দুই বিলিয়ন ডলার করে এলেও পরের মাস থেকে কমতে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ। যা দেড় বিলিয়ন বা তার কাছাকাছি চলে আসে। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। এরপর নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে আসে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার। এর পরের মাস জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স আসে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার। সদ্য বিদায়ী ফেব্রুয়ারি মাসে এলো ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।

গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসী আয় এলো ১৬ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা

আপডেট সময় : ০১:২৩:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩

ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসী আয় অর্থাৎ রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (এক ডলার সমান ১০৭ টাকা ধরে) প্রায় ১৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। এটি তার আগের মাস জানুয়ারির চেয়ে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলার কম। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির চেয়ে চলতি বছরের একই সময়ে ৬ কোটি ৬৮ লাখ ডলার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

বুধবার (০১ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে বিষয়টি জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে জানা গেছে, এ বছরের সদ্য বিদায়ী মাস ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। সে হিসাবে আলোচ্য মাসে প্রতিদিন আসে প্রায় ৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার বা প্রায় ৫৯৬ কোটি টাকার বেশি। আগের মাস জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স আসে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। সে হিসাবে জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলার কম এসেছে। তবে গত বছরের একই মাসের চেয়ে ৬ কোটি ৬৮ লাখ ডলার বেশি এসেছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ফেব্রুয়ারি মাসে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৭ কোটি ৫৭ লাখ ১০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১২৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। পাশাপাশি বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

আলোচিত সময়ে সাত ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব, বেসরকারি খাতের বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, কমিউনিটি ব্যাংক লিমিটেড, বিদেশি হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বা বিএফআইইউ। তবে আগামীতে দুইটি বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা রয়েছে। এ কারণে আগামীতে রেমিট্যান্স বেশি পরিমাণ আসবে।

অন্যদিকে ডলার সংকট কাটাতে রিজার্ভ থেকে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) প্রায় ৯৮০ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের ইতিহাসে পুরো অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে এত পরিমাণ ডলার বিক্রি হয়নি। মূলত জরুরি আমদানির দায় মেটাতে রিজার্ভ থেকে এসব ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই থেমে যায়। অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।

দুই মাস দুই বিলিয়ন ডলার করে এলেও পরের মাস থেকে কমতে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ। যা দেড় বিলিয়ন বা তার কাছাকাছি চলে আসে। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। এরপর নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে আসে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার। এর পরের মাস জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স আসে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার। সদ্য বিদায়ী ফেব্রুয়ারি মাসে এলো ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।

গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।