নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের ধান দ্রুত কাটার পরামর্শ
![](https://desherawaj.com/wp-content/uploads/2024/04/desherawaj.jpg)
- আপডেট সময় : ০২:১৯:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪ ৫৫ বার পড়া হয়েছে
অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কায় নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের বোরো ধান দ্রুত কাটার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। একই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পক্ষ থেকেও।
আগামী ৩ মে থেকে দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কায় নেত্রকোনায় হাওরসহ নিম্নাঞ্চলে দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও কৃষি বিভাগ কৃষকদের দ্রুত খেত থেকে পাকা ধান কেটে বাড়িতে আনার পরামর্শ দিচ্ছে। অবশ্য কৃষি বিভাগ বলছে, এরই মধ্যে হাওরের অধিকাংশ খেতের ধান কাটা হয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বলেন, আবহাওয়া তথ্য অনুযায়ী আগামী ৩ মে থেকে দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। তাই বৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে হাওরে বোরো ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। যেসব ধান ৮০ শতাংশ পরিপক্ব হয়েছে, তা দ্রুত কেটে নিরাপদ ও শুকনা স্থানে রাখার জন্য বলা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৮০ শতাংশ খেতের ধান কাটা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পাউবোর নেত্রকোনা কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক সারওয়ার জাহান বলেন, ৩ মে থেকে নেত্রকোনা এবং এর উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে মাঝারি থেকে প্রবল বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড় থেকে নেমে আসা পানির প্রভাবে জেলার নদ-নদী, হাওরসহ নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়বে। এ জন্য হাওরের ধান কেটে দ্রুত ঘরে তোলার জন্য বলা হচ্ছে। এ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচার করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনায় এ বছর ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাওরাঞ্চলে রয়েছে ৪১ হাজার ৭০ হেক্টর। বেশির ভাগ ধান ব্রি-২৮ ও ব্রি-৮৮-সহ উচ্চফলনশীল হাইব্রিড জাতের। এ পর্যন্ত প্রায় পর্যন্ত ৮০ শতাংশ খেতের ধান কাটা হয়েছে। শ্রমিকের পাশাপাশি সাত শতাধিক কম্বাইন হার্ভেস্টারে ধান কাটা চলছে।
খালিয়াজুরির পুরানহাটি গ্রামের কৃষক আজহারুল ইসলাম বলেন, এখন প্রায় সব ধানই পেকে গেছে। সকাল থেকে মাইকে দ্রুত ধান কাটার ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। পানি আসার আশঙ্কায় আমরা ধান কেটে ফেলছি।
মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী গ্রামপর কৃষক শামছু মিয়া বলেন, এ বছর প্রচণ্ড রোদ থাকায় নিরাপদে ধান কাটা ও শুকানো যাচ্ছে। গবাদিপশুর খড়ও শুকিয়ে জমা করা হচ্ছে।
মোহনগঞ্জের ডিঙ্গাপোঁতা হাওরপারের বড়বেথাম গ্রামের মতিউর রহমান বলেন, হাওরের ৮০ ভাগের বেশি ধান কাটা হয়ে গেছে। কিছু জমির ধান পাকতে দেরি হচ্ছে বলে এখনও কাটা হয়নি। পর্যাপ্ত হারভেস্টার মেশিন থাকায় ধান কাটতে কোনো সমস্যা হয়নি। এবার রোদ থাকায় ধান কাটার পর গবাদি পশুর জন্য খড়ও শুকিয়ে ঘরে তোলা যাচ্ছে। আর কয়দিন সময় পেলে হাওরে আর কোনো ধান থাকবে না। সবই কাটা হয়ে যাবে। যদিও এখন বন্যার আশঙ্কায় ৮০ ভাগ পাকা ধান কেটে ফেলা হচ্ছে।