নানা আয়োজনে রাজশাহীতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস উদ্যাপিত
- আপডেট সময় : ১২:২৮:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩ ৯৭ বার পড়া হয়েছে
নানা আয়োজনে মঙ্গলবার রাজশাহীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে তৃতীয়বারের মত যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৯টায় সিএন্ডবি মোড়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় ‘৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করা হয়। সেইসাথে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘৭ মার্চ : স্বাধীনতার জীয়নকাঠি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৭১ সালের এই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান)জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিকামী লাখো জনতার উদ্দেশ্যে একঐতিহাসিক ভাষণ দেন। তাই প্রতিবছর এই দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে স্মরণ করে বাঙালি জাতি। সারাদেশের মতো রাজশাহীতেও দিবসটি দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে উদ্যাপন করা হয়। এলক্ষে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি, আধা-সরকারি,স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সকাল দশ’টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে ‘৭ মার্চ : স্বাধীনতার জীয়নকাঠি’ শীর্ষক আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও পুরস্কার বিতরণী সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ্, এনডিসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার আনিসুর রহমান ও পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজশাহী মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন ও রাজশাহী নিউ গভ: ডিগ্রী কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ড. ওয়ালিউর রহমান।
সভায় প্রধান অতিখিসহ অন্যান্য বক্তাগণ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চারনেতা ও মহানমুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বাঙালি জাতির ২৩ বছরের বঞ্চনার ইতিহাস এবংঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা করেন। তাঁরা বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ অলিখিত ভাষণের মাধ্যমে বাঙালির হৃদস্পন্দনে প্রবেশ করেছিলেন। তিনি মুক্তিকামী, বঞ্চিত ও নিপীড়িত সাধারণমানুষের মনের ভাষা বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তিনি ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে মূলত স্বাধীনতার ডাক দিয়েবাঙালি জাতিকে ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তুলে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়ে নির্ভীক চিত্তে বলেছিলেন- এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।
তাঁরা আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৮ মিনিটের ভাষণে একটি জাতিকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়েদিশেহারা বাঙালি জাতি পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিনিয়ে আনে বাংলার স্বাধীনতা। তাঁরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রীর সঠিক দিকনির্দেশনায় দেশের প্রতিটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে মন্তব্য করে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে পরিণত হবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেন।
সভাশেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের হাতে অতিথিবৃন্দ পুরস্কার তুলে দেন। পুরস্কার বিতরণী শেষে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।