ঢাকা ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

দেশের প্রথম সিনেমা ‘মুখ ও মুখোশ’-এর অভিনেত্রীর মৃত্যু

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৭:১৬:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩ ১৩০ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের প্রথম সবাক চলচিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এর অন্যতম অভিনেত্রী পেয়ারী বেগম মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার (৩০ মে) বাদ এশা উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের জামে মসজিদে তার নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

পিয়ারী বেগমের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে রাবিউল আমিন। তিনি বলেন, মা গত মাসে অসুস্থ ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলাম। আম্মার হার্ট দুর্বল ছিল। ডাক্তারের পরামর্শে মাকে বাসায় আনা হয়।

‘গত দুদিন মায়ের শরীর দুর্বল ছিল। আজ বাসায় মারা গেছেন তিনি।’

জানাজা শেষে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে পিয়ারী বেগমকে সমাহিত করা হবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ১৯৫৬ সালে পুরাণ ঢাকার ‘রূপমহল’ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় বাংলাদেশের প্রথম বাংলা সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’। সিনেমাটিতে নাজমা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পেয়ারী বেগম।

‘রূপমহল’ সিনেমা হলে ‘মুখ ও মুখোশ’ ছবিটির উদ্বোধন করেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন আবদুল জব্বার খান। ১৯৫৩ সালের মার্চ মাসে ড. সাদেক একটি সভা আহ্বান করেছিলেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়েই ছিল সেই সভা। তখন পর্যন্ত এখানে চলত ভারতীয় বাংলা, হিন্দি, পশ্চিম পাকিস্তান ও হলিউডের ছবি। বাংলাদেশে তখন ছবি নির্মাণ করা হতো না। সেই সভায় গুলিস্তান সিনেমা হলের মালিক অবাঙালি খান বাহাদুর ফজল আহমেদ বলে দিলেন, পূর্ব পাকিস্তানের আর্দ্র আবহাওয়ায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করা সম্ভব নয়। এ কথার প্রতিবাদ করলেন আবদুল জব্বার খান। তিনি বললেন, এখানে তো ভারতীয় ছবির শুটিং হয়েছে। তবে কেন পূর্ণাঙ্গ একটি ছবি করা যাবে না? চ্যালেঞ্জ দিলেন তিনি। বললেন, ছবি করে দেখাবেন।

করলেন তো চ্যালেঞ্জ! কিন্তু চলচ্চিত্রের ‘চ’ও জানেন না আবদুল জব্বার খান। কী করে নির্মাণ করবেন ছবি? ১৯৫৩ সালে নিজের লেখা ‘ডাকাত’ নাটক নিয়েই তৈরি করলেন চিত্রনাট্য। কলকাতা থেকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে আনালেন পুরোনো মরচে ধরা এক ‘আইমো’ ক্যামেরা। শব্দ ধারণের জন্য ছিল একটি সাধারণ ফিলিপস টেপরেকর্ডার।

নারী অভিনয়শিল্পী তো পাওয়া যায় না। তাই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে শিল্পী খোঁজা হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের ছাত্রী জহরত আরা ও ইডেন কলেজের আইএর ছাত্রী পিয়ারী বেগম যোগাযোগ করলেন। কলকাতার শিল্পী পূর্ণিমা সেনগুপ্ত এগিয়ে এলেন। তিনিই হলেন নায়িকা (কুলসুম)। পিয়ারী নাম নিলেন নাজমা, অভিনয় করলেন নায়ক আফজালের বোন রাশিদার চরিত্রে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দেশের প্রথম সিনেমা ‘মুখ ও মুখোশ’-এর অভিনেত্রীর মৃত্যু

আপডেট সময় : ০৭:১৬:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩

বাংলাদেশের প্রথম সবাক চলচিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এর অন্যতম অভিনেত্রী পেয়ারী বেগম মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার (৩০ মে) বাদ এশা উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের জামে মসজিদে তার নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

পিয়ারী বেগমের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে রাবিউল আমিন। তিনি বলেন, মা গত মাসে অসুস্থ ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলাম। আম্মার হার্ট দুর্বল ছিল। ডাক্তারের পরামর্শে মাকে বাসায় আনা হয়।

‘গত দুদিন মায়ের শরীর দুর্বল ছিল। আজ বাসায় মারা গেছেন তিনি।’

জানাজা শেষে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে পিয়ারী বেগমকে সমাহিত করা হবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ১৯৫৬ সালে পুরাণ ঢাকার ‘রূপমহল’ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় বাংলাদেশের প্রথম বাংলা সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’। সিনেমাটিতে নাজমা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পেয়ারী বেগম।

‘রূপমহল’ সিনেমা হলে ‘মুখ ও মুখোশ’ ছবিটির উদ্বোধন করেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন আবদুল জব্বার খান। ১৯৫৩ সালের মার্চ মাসে ড. সাদেক একটি সভা আহ্বান করেছিলেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়েই ছিল সেই সভা। তখন পর্যন্ত এখানে চলত ভারতীয় বাংলা, হিন্দি, পশ্চিম পাকিস্তান ও হলিউডের ছবি। বাংলাদেশে তখন ছবি নির্মাণ করা হতো না। সেই সভায় গুলিস্তান সিনেমা হলের মালিক অবাঙালি খান বাহাদুর ফজল আহমেদ বলে দিলেন, পূর্ব পাকিস্তানের আর্দ্র আবহাওয়ায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করা সম্ভব নয়। এ কথার প্রতিবাদ করলেন আবদুল জব্বার খান। তিনি বললেন, এখানে তো ভারতীয় ছবির শুটিং হয়েছে। তবে কেন পূর্ণাঙ্গ একটি ছবি করা যাবে না? চ্যালেঞ্জ দিলেন তিনি। বললেন, ছবি করে দেখাবেন।

করলেন তো চ্যালেঞ্জ! কিন্তু চলচ্চিত্রের ‘চ’ও জানেন না আবদুল জব্বার খান। কী করে নির্মাণ করবেন ছবি? ১৯৫৩ সালে নিজের লেখা ‘ডাকাত’ নাটক নিয়েই তৈরি করলেন চিত্রনাট্য। কলকাতা থেকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে আনালেন পুরোনো মরচে ধরা এক ‘আইমো’ ক্যামেরা। শব্দ ধারণের জন্য ছিল একটি সাধারণ ফিলিপস টেপরেকর্ডার।

নারী অভিনয়শিল্পী তো পাওয়া যায় না। তাই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে শিল্পী খোঁজা হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের ছাত্রী জহরত আরা ও ইডেন কলেজের আইএর ছাত্রী পিয়ারী বেগম যোগাযোগ করলেন। কলকাতার শিল্পী পূর্ণিমা সেনগুপ্ত এগিয়ে এলেন। তিনিই হলেন নায়িকা (কুলসুম)। পিয়ারী নাম নিলেন নাজমা, অভিনয় করলেন নায়ক আফজালের বোন রাশিদার চরিত্রে।