দেশি জাত ছেড়ে হাইব্রিড ধান আবাদে ঝুঁকছেন কৃষক
- আপডেট সময় : ০৮:০৩:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৩ ১২২ বার পড়া হয়েছে
রাজবাড়ীতে প্রতিবছরই বোরো ধানের আবাদ হয়। এবছরও জেলায় বোরোর আবাদ চলমান রয়েছে। তবে ধানের আবাদ খরচ বেড়ে যাওয়ায় দেশি জাতের ধানে লোকসানের কারণে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের আবাদ ব্যাপক ভাবে বেড়েছে। চলতি বছর আবাদি বোরো ধানের ৯৮ শতাংশ ধানই উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের ধান আবাদেও লক্ষমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে, যা চলমান রয়েছে।
রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলা, গোয়ালন্দ, পাংশা, কালুখালী ও বালিয়াকান্দি এই পাঁচটি উপজেলাতে চলতি বছর ব্যাপকভাবে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ও হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের আবাদ চলমান রয়েছে। যা মোট আবাদি বোরো ধানের ৯৮ শতাংশ। দেশি ও উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদে একই খরচ হলেও দেশি ধানে ফলন কম হওয়ায় চাষিরা চরম লোকসানে পড়েন। আর উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড ধান আবাদ করে দেশি ধানের দ্বিগুণেরও বেশি ফলন পাওয়া যায় বলে এ ধানের আবাদ ব্যাপক ভাবে বেড়েছে। এক বিঘা দেশি ধান ক্ষেত থেকে ১০/১২ মণ ফলন হলেও উফশী ধানে ২৫ থেকে ৩০ মণ পর্যন্ত ফলন হওয়ায় এ ধান আবাদে চাষিদের আগ্রহ বেড়েছে।
এছাড়া খাদ্য ঘাটতি কমাতে চাষিদের উফশী জাতের ধানের বীজ সহায়তা দিয়েছে সরকার। সার, বীজ কীটনাশক, চাষাবাদ, তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও দিন মজুরের অত্যাধিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশি ধান আবাদ করলে চরম লোকসানে পড়তে হয় চাষিদের। তাই লোকসান কমাতে উফশী ও হাইব্রিড জাতের এ ধান আবাদ করছেন ব্যাপক ভাবে। চলতি বছর ১৩ হাজার ১৫০ হেক্টর বোরো ধানের মধ্যে ১২ হাজার ৮৫০ হেক্টর উপশী ও হাইব্রিড বোরো ধান আবাদের সম্ভাবনা রয়েছে। যা রোপণ কার্যক্রম চলনান রয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ১২ হাজার ৯৫০ হেক্টর। এবার হাইব্রিড জাতের ধান চাষ ২শ হেক্টর বেড়েছে। এ পর্যন্ত ৬০ শতাংশ জমিতে ধান আবাদ হয়েছে জেলায়।
রাজবাড়ী জেলা সদরের পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ধান চাষি মাসুদ মুন্সি বলেন, তিনি আগে দেশি জাতের ধানের আবাদ বেশি করতেন। তবে গত দুই বছর সার, কীটনাশক, বীজ, তেল ও দিনমজুরসহ ধান আবাদের সব ধরনের সরঞ্জাম অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ায় এবং দেশি ধান আবাদে লোকসানের কারণে দেশি ধানের আবাদ বাদ দিয়েছেন। এ ধানের চাইতে উফশী ও হাইব্রিড ধান আবাদে দ্বিগুণেরও বেশি ফলন পাওয়া যায় এবং আবাদ খরচ একই হওয়ায় এখন উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধান আবাদ করছেন তিনি।
একই এলাকার আক্তার হোসেন জানান, তিনি এবছর বেশ কয়েক বিঘা উফশী ও হাইব্রিড ধান আবাদ করেছেন।এক বিঘা আবাদ খরচ আগের চাইতে বেড়ে ৫/৬ হাজার টাকা লাগছে। দেশি ধান আবাদ করলে তার আবাদেও খরচ ওঠে না । তাই তিনি উফশী বোরো ধান আবাদ করেছেন সব জমিতে। তাদের মত আরও চাষিরা এসব উচ্চ ফলনশীল জাতের বোরো ধান আবাদে ব্যস্ত রয়েছেন।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস এম সহীদ নুর আকবর বলেন, চলতি বছর জেলায় ১৩ হাজার ১৫০ হেক্টর বোরো ধান আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৮ শতাংশ উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড ৯০ ও ৯২ জাতের। লাভের কারণে দিন দিন এ জাতের ধান আবাদ বাড়ছে জেলায়।