ঢাকা ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ত্রিশালে বৃদ্ধার লালসার শিকারে ১২ বছরের কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা

আরিফ রববানী , ময়মনসিংহ ||
  • আপডেট সময় : ১০:৪৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩ ৭৬ বার পড়া হয়েছে

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বৃদ্ধের ধর্ষণে ১২ বছর বয়সী কিশোরী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের নিজবাখাইল গ্রামে এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীর নাম সুরাইয়া আক্তার (১২)। সে নিজবাখাইল গ্রামের আমর আলীর কন্যা ও নিজবাখাইল উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী। স্কুল ছাত্রী সুরাইয়া একজন প্রতিবন্ধী ও তার বাবা আমর আলী পেশায় একজন আইসক্রিম বিক্রেতা। এব্যাপারে কিশোরী সুরাইয়ার মা দিনারা বেগম বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বাদীর অভিযোগে জানা গেছে-উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের নিজবাখাইল গ্রামে ৪ মাস আগে গত ১৪ডিসেম্বর-২২ তারিখে নিজবাখাইল উত্তরপারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়েের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী ও স্কুলের পাশ্ববর্তী বাড়ীর আমর আলীর মেয়ে সুরাইয়া (১২) স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলের পিছনে কচুর লতি তুলতে গেলে সেখানে তাকে একা পেয়ে মজার লোভ দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক করতে চায় একই এলাকার সফুর উদ্দিনের পুত্র বৃদ্ধ আঃ লতিফ। পরে সুরাইয়া তার দেওয়া মজায় কু প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জোরপূর্বক একই এলাকার শামীমের গোয়ালঘরে নিয়ে কিশোরী সুমাইয়াকে ধর্ষণ করে লতিফ। এই ঘটনা কাউকে জানালে জানে মেরে ফেলা হবে লতিফের এমন হুমকির ভয়ে সুরাইয়া ঘটনাটি কাউকে না জানায়নি।

এ ঘটনার পরও প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে একাধিকবার মেয়েটিকে ধর্ষণ করে লতিফ। সম্প্রতি শিশুটির শারীরিক গঠনের পরিবর্তন দেখা দিলে তার পরিবারের সদস্যদের চাপে ঘটনা খুলে বলে। এরপর ভিকটিমের মাতা দিনারা বেগম তাকে ভালুকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করে অবগত হয় তার মেয়ে ৪মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এই ঘটনা লতিফের ভাই মুঞ্জুরুল হক,দুলু মতিন ও শামীমকে অবগত করলেও তারা কোন কর্ণপাত না করে উল্টো ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। অপরদিকে শামীম সরকারী কর্মকর্তা হওয়ায় তার ক্ষমতার দাপটে অভিযুক্ত লতিফকে এলাকা থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে থাকতে সহযোগীতা করেছে বলেও অভিঢ়োগে জানা গেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য কারো কাছে কোন বিচার না পেয়ে অবশেষে মা দিনারা নেগম ত্রিশাল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। দিনারা অভিযোগ করেছেন ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে সুরাইয়া গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করার জন্য আর্থিক প্রলোভনসহ তাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।

এব্যাপারে অভিযুক্ত লতিফের বাড়ীতে গিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে লতিফসহ বাড়ীতে কাউকে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন জানান-এবিষয়ে তাকে সুরাইয়ার পরিবার থেকে কোন কিছু জানানো হয়নি।

এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বিল্লাল হোসেন এর বক্তব্য জানতে থানায় গিয়ে তাকে না পেয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে- তিনি জানান আমি বাইরে আছি,নরসিংদী সাক্ষী দিতে আসছি,আপনি আগামীকাল যোগাযোগ কইরেন,
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন-এটা তদন্তের বিষয়, তদন্ত করতে হবে। অথচ বাদী পক্ষ জানান ৩ দিন হয়েছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের ভাষ্য মতে একটা ধর্ষনের অভিযোগ ৩দিনেও তদন্ত করা হয়নি। অভিযোগ উঠেছে আসামীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে বাদী পক্ষকে মামলা তুলে নেওয়াসহ বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।

এব্যাপারে ত্রিশাল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মাইন উদ্দিন জানান-অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কার্যক্রম চলছে।তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ত্রিশালে বৃদ্ধার লালসার শিকারে ১২ বছরের কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা

আপডেট সময় : ১০:৪৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ মে ২০২৩

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বৃদ্ধের ধর্ষণে ১২ বছর বয়সী কিশোরী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের নিজবাখাইল গ্রামে এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীর নাম সুরাইয়া আক্তার (১২)। সে নিজবাখাইল গ্রামের আমর আলীর কন্যা ও নিজবাখাইল উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী। স্কুল ছাত্রী সুরাইয়া একজন প্রতিবন্ধী ও তার বাবা আমর আলী পেশায় একজন আইসক্রিম বিক্রেতা। এব্যাপারে কিশোরী সুরাইয়ার মা দিনারা বেগম বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বাদীর অভিযোগে জানা গেছে-উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের নিজবাখাইল গ্রামে ৪ মাস আগে গত ১৪ডিসেম্বর-২২ তারিখে নিজবাখাইল উত্তরপারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়েের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী ও স্কুলের পাশ্ববর্তী বাড়ীর আমর আলীর মেয়ে সুরাইয়া (১২) স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলের পিছনে কচুর লতি তুলতে গেলে সেখানে তাকে একা পেয়ে মজার লোভ দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্ক করতে চায় একই এলাকার সফুর উদ্দিনের পুত্র বৃদ্ধ আঃ লতিফ। পরে সুরাইয়া তার দেওয়া মজায় কু প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জোরপূর্বক একই এলাকার শামীমের গোয়ালঘরে নিয়ে কিশোরী সুমাইয়াকে ধর্ষণ করে লতিফ। এই ঘটনা কাউকে জানালে জানে মেরে ফেলা হবে লতিফের এমন হুমকির ভয়ে সুরাইয়া ঘটনাটি কাউকে না জানায়নি।

এ ঘটনার পরও প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে একাধিকবার মেয়েটিকে ধর্ষণ করে লতিফ। সম্প্রতি শিশুটির শারীরিক গঠনের পরিবর্তন দেখা দিলে তার পরিবারের সদস্যদের চাপে ঘটনা খুলে বলে। এরপর ভিকটিমের মাতা দিনারা বেগম তাকে ভালুকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করে অবগত হয় তার মেয়ে ৪মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এই ঘটনা লতিফের ভাই মুঞ্জুরুল হক,দুলু মতিন ও শামীমকে অবগত করলেও তারা কোন কর্ণপাত না করে উল্টো ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। অপরদিকে শামীম সরকারী কর্মকর্তা হওয়ায় তার ক্ষমতার দাপটে অভিযুক্ত লতিফকে এলাকা থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে থাকতে সহযোগীতা করেছে বলেও অভিঢ়োগে জানা গেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য কারো কাছে কোন বিচার না পেয়ে অবশেষে মা দিনারা নেগম ত্রিশাল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। দিনারা অভিযোগ করেছেন ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে সুরাইয়া গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করার জন্য আর্থিক প্রলোভনসহ তাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।

এব্যাপারে অভিযুক্ত লতিফের বাড়ীতে গিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে লতিফসহ বাড়ীতে কাউকে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন জানান-এবিষয়ে তাকে সুরাইয়ার পরিবার থেকে কোন কিছু জানানো হয়নি।

এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বিল্লাল হোসেন এর বক্তব্য জানতে থানায় গিয়ে তাকে না পেয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে- তিনি জানান আমি বাইরে আছি,নরসিংদী সাক্ষী দিতে আসছি,আপনি আগামীকাল যোগাযোগ কইরেন,
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন-এটা তদন্তের বিষয়, তদন্ত করতে হবে। অথচ বাদী পক্ষ জানান ৩ দিন হয়েছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের ভাষ্য মতে একটা ধর্ষনের অভিযোগ ৩দিনেও তদন্ত করা হয়নি। অভিযোগ উঠেছে আসামীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে বাদী পক্ষকে মামলা তুলে নেওয়াসহ বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।

এব্যাপারে ত্রিশাল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মাইন উদ্দিন জানান-অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কার্যক্রম চলছে।তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।