ঢাকা ০১:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তাপদাহ কমাতে গাছ লাগানোর বিকল্প নেই- মিজাবে রহমত

ময়মনসিংহ প্রতিবেদক :
  • আপডেট সময় : ০৬:১৮:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩ ১২৬ বার পড়া হয়েছে

তীব্র তাপদাহ আর দুর্যোগ থেকে বাঁচতে এবং বায়ুমণ্ডল থেকে ক্ষতিকর উপাদান শোষণের মাধ্যমে সুন্দর জীবন ও উন্নত পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে বেশী বেশী গাছ লগাতে সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজাবে রহমত।

তিনি বলেন-একটা সময় ছিল বাড়ির আঙ্গিনায় মৌসুমী ফল আম, জাম, জামরুল, কদবেল, আতা, কাঁঠাল, নারকেল, তাল, তরমুজ, আমড়া, কামরাঙ্গা, বেল, পেয়ারা, কলাসহ হরেক রকম ফল লাগানো হতো। যা খেয়ে আমরা আমাদের চাহিদা পূরণ করতাম। এইসব ফলের মধ্যে কোনো ফরমালিন ছিল না, শরীর থাকতো সুস্থ। এখন তো বাজার থেকে ফরমালিনযুক্ত ফল কিনে খেতে হয়। আগে বাজার থেকে কিনে খেতাম লিচু, আপেল, কমলা, আঙ্গুর এই জাতীয় ফল।

তিনি আরো জানান-চলছে তীব্র তাপদাহ । প্রচণ্ড এই তাপদাহের কারণে সারাবিশ্বের তাপমাত্রা দিনকে দিন বেড়েই চলছে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। তাপদাহ কমাতে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে। আমরা জানি, কোনো দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় মোট ভূ-খণ্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের দেশে প্রয়োজনের তুলনায় বনভূমির পরিমাণ অনেক কম। ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশেও উষ্ণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব দুর্যোগ থেকে বাঁচতে সামনে গাছ লাগানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বায়ুমণ্ডল থেকে ক্ষতিকর উপাদান শোষণ করতে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো উচিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাপদাহ নিয়ন্ত্রণে নানামূখী কর্মসূচী ঘোষনা করেছেন এবং পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে সামাজিক বনায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। কেননা যতবেশি গাছ লাগানো হবে ততবেশি কার্বন শোষিত হবে। চলছে বর্ষা ঋতু গাছ লাগানোর মৌসুম, তাই এখনই প্রস্তুতি নিন, কে কয়টি গাছ লাগাবেন? গাছ লাগানোতে প্রতিযোগিতা শুরু করা উচিত। কে কয়টি গাছ লাগাতে পারে! তবেই আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি তীব্র তাবদাহ থেকে রক্ষা পাবে। শুধু নিজে একটি বা দুটি গাছ লাগালেই হবে না, গাছ লাগানোর এই মানসিকতা ছড়িয়ে দিতে হবে সব জায়গায়, তৈরি করতে হবে জনসচেতনতা, উদ্বুদ্ধ করতে হবে তরুণ সমাজকে। আসুন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সবাই গাছ লাগাই।

ইউএনও মিজাবে রহমত বলেন- আগে বৃষ্টির দিনে বজ্রপাত হলে তার আঘাত মানুষের ওপর তেমন আসতো না। কারণ বাড়ি, রাস্তাঘাট, বাজার সব বড় বড় গাছ জায়গায় থাকতো। বজ্রপাতের আঘাত ওই সব বড় গাছের ওপর দিয়ে চলে যেত। মানুষের ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর সংখ্যা কম হতো।

এখন বড় বড় গাছ না থাকার জন্য বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা প্রতি বছর বেড়েই চলছে। সেই সাথে জলবায়ু পরিবর্তন বিকট আকার ধারণ করছে। দেশের আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও যেখানে গরমের সময় মে, জুন, জুলাই, আগস্টে দেশের তাপমাত্রা রেকর্ড হতো ৩০ থেকে ৩৮ এর মধ্যে। এখন সেই তাপমাত্রা ৪০ ঊর্ধ্বে। গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন-সবচেয়ে ভালো হয়, জনপ্রতিনিধি, সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, মানবাধিকার সংস্থা, সমাজসেবক ও দেশপ্রেমিক প্রতিটি নাগরিককে সাথে নিয়ে যার যতটুকু জায়গা আছে সেই জায়গায় নিজেদের প্রয়োজন মতো সব ধরনের ফলের গাছ ও কাঠের জন্য গাছ লাগানো।

গাছ দেখে রাখার দায়িত্ব দেশের প্রতিটি জনগণের। যত বেশি গাছ লাগাবেন, দেশ তত বেশি নিরাপদে থাকবেন। গাছ আপনার বিপদের বন্ধু। বেশি করে গাছ লাগান আপনার সন্তানের জন্য। যত বেশি গাছ লাগাবেন আপনার সন্তান ততবেশি নিরাপদ থাকবে। গাছ আপনাকে তাপদাহ থেকে বাঁচাবে। গাছ আপনাকে বজ্রপাতের হাত থেকে বাঁচাবে। গাছ আপনাকে সুস্থ থাকার জন্য ফল দেবে, বাড়ি ও আসবাবপত্র তৈরির জন্য কাঠ দেবে। বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা কমবে, নিরাপদ একটা দেশ পাবেন। সুস্থ জীবনের জন্য গাছ প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন। গাছ আপনার সন্তানের সমতুল্য। সামনে আষাঢ়-শ্রাবণ মাস। গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়। গাছ লাগাবো পরিবেশ বাঁচাবো,- এই হোক আমাদের অঙ্গীকার

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তাপদাহ কমাতে গাছ লাগানোর বিকল্প নেই- মিজাবে রহমত

আপডেট সময় : ০৬:১৮:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩

তীব্র তাপদাহ আর দুর্যোগ থেকে বাঁচতে এবং বায়ুমণ্ডল থেকে ক্ষতিকর উপাদান শোষণের মাধ্যমে সুন্দর জীবন ও উন্নত পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে বেশী বেশী গাছ লগাতে সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজাবে রহমত।

তিনি বলেন-একটা সময় ছিল বাড়ির আঙ্গিনায় মৌসুমী ফল আম, জাম, জামরুল, কদবেল, আতা, কাঁঠাল, নারকেল, তাল, তরমুজ, আমড়া, কামরাঙ্গা, বেল, পেয়ারা, কলাসহ হরেক রকম ফল লাগানো হতো। যা খেয়ে আমরা আমাদের চাহিদা পূরণ করতাম। এইসব ফলের মধ্যে কোনো ফরমালিন ছিল না, শরীর থাকতো সুস্থ। এখন তো বাজার থেকে ফরমালিনযুক্ত ফল কিনে খেতে হয়। আগে বাজার থেকে কিনে খেতাম লিচু, আপেল, কমলা, আঙ্গুর এই জাতীয় ফল।

তিনি আরো জানান-চলছে তীব্র তাপদাহ । প্রচণ্ড এই তাপদাহের কারণে সারাবিশ্বের তাপমাত্রা দিনকে দিন বেড়েই চলছে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। তাপদাহ কমাতে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে। আমরা জানি, কোনো দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় মোট ভূ-খণ্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের দেশে প্রয়োজনের তুলনায় বনভূমির পরিমাণ অনেক কম। ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশেও উষ্ণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব দুর্যোগ থেকে বাঁচতে সামনে গাছ লাগানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বায়ুমণ্ডল থেকে ক্ষতিকর উপাদান শোষণ করতে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো উচিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাপদাহ নিয়ন্ত্রণে নানামূখী কর্মসূচী ঘোষনা করেছেন এবং পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে সামাজিক বনায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। কেননা যতবেশি গাছ লাগানো হবে ততবেশি কার্বন শোষিত হবে। চলছে বর্ষা ঋতু গাছ লাগানোর মৌসুম, তাই এখনই প্রস্তুতি নিন, কে কয়টি গাছ লাগাবেন? গাছ লাগানোতে প্রতিযোগিতা শুরু করা উচিত। কে কয়টি গাছ লাগাতে পারে! তবেই আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি তীব্র তাবদাহ থেকে রক্ষা পাবে। শুধু নিজে একটি বা দুটি গাছ লাগালেই হবে না, গাছ লাগানোর এই মানসিকতা ছড়িয়ে দিতে হবে সব জায়গায়, তৈরি করতে হবে জনসচেতনতা, উদ্বুদ্ধ করতে হবে তরুণ সমাজকে। আসুন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সবাই গাছ লাগাই।

ইউএনও মিজাবে রহমত বলেন- আগে বৃষ্টির দিনে বজ্রপাত হলে তার আঘাত মানুষের ওপর তেমন আসতো না। কারণ বাড়ি, রাস্তাঘাট, বাজার সব বড় বড় গাছ জায়গায় থাকতো। বজ্রপাতের আঘাত ওই সব বড় গাছের ওপর দিয়ে চলে যেত। মানুষের ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যুর সংখ্যা কম হতো।

এখন বড় বড় গাছ না থাকার জন্য বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা প্রতি বছর বেড়েই চলছে। সেই সাথে জলবায়ু পরিবর্তন বিকট আকার ধারণ করছে। দেশের আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও যেখানে গরমের সময় মে, জুন, জুলাই, আগস্টে দেশের তাপমাত্রা রেকর্ড হতো ৩০ থেকে ৩৮ এর মধ্যে। এখন সেই তাপমাত্রা ৪০ ঊর্ধ্বে। গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন-সবচেয়ে ভালো হয়, জনপ্রতিনিধি, সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, মানবাধিকার সংস্থা, সমাজসেবক ও দেশপ্রেমিক প্রতিটি নাগরিককে সাথে নিয়ে যার যতটুকু জায়গা আছে সেই জায়গায় নিজেদের প্রয়োজন মতো সব ধরনের ফলের গাছ ও কাঠের জন্য গাছ লাগানো।

গাছ দেখে রাখার দায়িত্ব দেশের প্রতিটি জনগণের। যত বেশি গাছ লাগাবেন, দেশ তত বেশি নিরাপদে থাকবেন। গাছ আপনার বিপদের বন্ধু। বেশি করে গাছ লাগান আপনার সন্তানের জন্য। যত বেশি গাছ লাগাবেন আপনার সন্তান ততবেশি নিরাপদ থাকবে। গাছ আপনাকে তাপদাহ থেকে বাঁচাবে। গাছ আপনাকে বজ্রপাতের হাত থেকে বাঁচাবে। গাছ আপনাকে সুস্থ থাকার জন্য ফল দেবে, বাড়ি ও আসবাবপত্র তৈরির জন্য কাঠ দেবে। বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা কমবে, নিরাপদ একটা দেশ পাবেন। সুস্থ জীবনের জন্য গাছ প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন। গাছ আপনার সন্তানের সমতুল্য। সামনে আষাঢ়-শ্রাবণ মাস। গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়। গাছ লাগাবো পরিবেশ বাঁচাবো,- এই হোক আমাদের অঙ্গীকার