তানোরে ভরাট করা হচ্ছে ৬৫ বিঘা পুকুর, হুমকিতে পরিবেশ
- আপডেট সময় : ০৬:২৬:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০২৩ ২১১ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীর তানোরে ৬৫ বিঘা পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। অপর দিকে কেটে ফেলা হচ্ছে পুকুর পাড়ের গাছপালা।
পুকুর ভরাট ও এসব গাছ কেটে পার্ক নির্মান করা হবে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।
তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া হাড়দহ বিলে ঘটছে এমন ঘটনা। এতে করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
জরুরী ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যেই পুকুর ভরাট ও হাছ কাটা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এছাড়াও বিভিন্ন এলাকার পুকুরের মাটি ওই পাকা রাস্তা দিয়ে বহন করার ফলে পাকা রাস্তাটি মাটির রাস্তায় রুপ নিয়েছে।
এসব বিষয়ে প্রশাসনের উদাসিনতাকেই দায়ি করছেন স্থানীয় জনসাধারণ। তারা বলছেন প্রকাশ্যে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে।
একই সাথে পাকা রাস্তা দিয়ে মাটি বহন করে রাস্তা নষ্ট করলেও রহস্যজনক কারনে নিরব ভূমিকা পালন করছেন প্রশাসন।
মাটি ভরাটের দায়িত্বে থাকা আলিমের ০১৭৬৩ ৩৫৬৭০৬ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জায়গার মালিক বড় মাপের ব্যক্তি সে সবায়কে ম্যানেজ করে কাজ করছেন।
তাছাড়া প্রকাশ্যে এভাবে কাজ করা যাবে না। কোন দপ্তর থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সেটা আমাদের বিষয়, যখন কাজ করব তখন কথা হবে।
কারো ক্ষমতা নেই বন্ধ করার, ডিসি, এসপি ও ইউএনওকে ম্যানেজ করা আছে বলে প্রচুর দম্ভক্তি প্রকাশ করেন তিনি।
রাজশাহী পরিবেশ দপ্তরের সহকারি পরিচালক কবির হোসেন জানান, জমির শ্রেণী কি সেটা দেখে বলা যাবে।
শ্রেণী কৃষি শহরের হাসান নামের একব্যক্তি পুকুর ও পার্ক তৈরি করেছেন ও তিনি পুকুরগুলো আরেকজনের কাছে বিক্রি করেছেন তিনি ভরাট করছেন অবহিত করা হলে তিনি জানান এভাবে ভরাট করা যাবে না।
সরেজমিনে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউপির হাড়দহ বিলে ও তানোর টু রাজশাহী রাস্তার দক্ষিণে ৬৫ বিঘা পুকুরে মাটি ভরাট কাজ চলছে। মাটি টেনে সমান করার মেশিন রয়েছে।
ওই বিলে শহরের হাসান নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘ কয়েক যুগ আগে ১৩০ বিঘা কৃষি জমিতে পুকুর করেন। পরে নাইস গার্ডেন নামে পার্ক তৈরি করেন। অবশ্য পার্ক করলেও হাসান কোন পুকুর ভরাট করেননি।
কিন্তু হাসান পার্কের পশ্চিম দিকে ৬৫ বিঘা পুকুর বিক্রি করেন নওগাঁ জেলার পত্নীতলা এলাকার প্রভাবশালী জুয়েল নামের এক ব্যক্তির কাছে।
তিনি ওই পুকুর গুলো কিনে পুকুর ভরাট ও শতশত বিভিন্ন প্রজাতির গাছ নিধন করছেন। প্রায় অর্ধেক ভরাট হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবারে কাজ বন্ধ ছিল।
স্থানীয়রা জানান, বিলের জমি এক দুটি করে চাষাবাদ হত। সেই সব জমিগুলো কিনে হাসান পুকুর করেছিলেন পরে পার্ক করেন। কিন্তু কোন পুকুর ভরাট হয়নি।
অথচ জুয়েল দেদারসে শতশত গাছপালা নিধন ও পুকুর ভরাট করছেন। যার কারনে খা খা অবস্থা হয়ে পড়েছে আশপাশের এলাকা। যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।
এমনকি হেরো ট্যাক্টরে করে মাটি বহনের কারনে পাকা রাস্তা চরম ঝুকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। অথচ পুরাতন পুকুরের মাটি বহন করতে দেয় না প্রশাসন।
একই প্রশাসনের কেন দ্বি মূখী আচরন হবে এমন নানা প্রশ্ন এলাকাবাসীর। তার পাশ্বে পার্ক ও আবাসিক হোটেল হলে অনৈতিক কাজ বেড়েই যাবে।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য দ্রুত একাজ বন্ধ করা উচিৎ। শুধু এখানেই শেষ না রাস্তার সরকারী নয়নজলিও ভরাট করা হয়েছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তানোর উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও সঞ্জয় কুমার মোহন্ত জানান, পরিবেশের ক্ষতি করে পুকুর ভরাটের কোন সুযোগ নেই। দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) আব্দুল জলিল জানান, পুকুর ভরাট করার সুযোগ নাই, লোকেসান কোথায় জানতে চান তিনি, জানানো হয় চান্দুড়িয়া ইউপি হাড়দহ বিলে, জেনে জানান দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে।