ঢাকা ০১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তানোরে গ্রাহকের ১০ লাখ টাকা নিয়ে আশার মাঠকর্মী উধাও

আশরাফুল আলম, তানোর থেকেঃ
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৯:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩ ১৪৭ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার আশা ব্রাঞ্চের অর্ধশত গ্রাহকের পরিশোধিত ঋণ ও সঞ্চয়ের প্রায় ১০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন গোলাম রাব্বনী নামের এক মাঠকর্মী। গত বৃহস্পতিবার তিনি মুন্ডুমালা ব্রাঞ্চ হতে উধাও হয়েছেন।

বিষয়টি রোববার জানাজানি হলে মুন্ডুমালা শাখা এলাকার কয়েক হাজার গ্রাহক তাদের জমানো সঞ্চয়পত্র নিয়ে বেশ আতঙ্কে রয়েছে। অনেক সদস্য ব্রাঞ্চে এসে তাদের আমনত ঠিক আছে কিনা তা যাছাই বাছাই করছেন।

এ ঘটনায় রবিবার বিকালে এ ব্রাঞ্চের ম্যানেজার সিহাব উদ্দিন তানোর থানায় মাঠকর্মী গোলাম রাব্বানী বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়ে সাধারণ ডাইরি করেছেন। আর একই দিনে রাজশাহী জেলা আশা অফিস থেকে দুইজন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ও দুইজন আরএম দিয়ে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ তদন্ত কমিটি সোমবার সরেজমিন মুন্ডুমালা আশা ব্রাঞ্চে এসে গ্রাহক/সদস্যদের সঞ্চয় ও পরিশোধীত ঋণ যাছাই বাছাই শুরু করেছেন।

সোমবার প্রথম দিনেই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি মুন্ডুমালা ব্রাঞ্চের সদস্যদের পরিশোধীত ঋণে টাকা ও সঞ্চয় নিয়ে মাঠকর্মী অফিসে জমা দেখাইনি এমন ১২ থেকে ১৫ জনের তালিকা পেয়েছে। তাতে পাঁচ লাখ ৫২ হাজার ৫২০ টাকা খোয়া যাওয়া বিষয়টি সত্যতা পেয়েছেন বলে তদন্ত কমিটি এক সদস্য নাম প্রকাশ না করা শর্তে এ প্রতিবেদক জানিয়েছেন।

এদিকে গতকাল সোমাবার মুন্ডুমালা আশা ব্রাঞ্চে ২৫ থেকে ৩০ জন সদস্য এসেছিলেন তাদের আমনতের জমানো সঞ্চয় ঠিক আছেন কিনা তা জানতে। এর মধ্যে কথা হয় উপজেলার বাধাইড় ইউপির খাড়িকল্ল্যা গ্রামের সিমা নামের এক সদস্য। তিনি জানান গত এক সপ্তহ আগে মাঠকর্মী গোলাম রাব্বানী হাতে ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা ঋণ পরিশোধের জন্য দিয়েছে। কিন্ত অফিসের খাতা তা জমা হয়নি।

মুন্ডুমালা গ্রামের সাফিউল ইসলাম নামের এক সদস্য জানান, তিনি ৬ মাস মেয়াদী ঋণের এক লাখ টাকা মাঠকর্মীর হাতে দিয়েছেন। এখন দেখি অফিসের খাতায় তা জমা হয়নি।

তবে,আশা ব্রাঞ্চের এক মাঠকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,আশা সংস্থা একটি মানের সংস্থা। এখানে সদস্যদের আমনতের টাকা খোয়া যাওয়ার কোন সুয়োগ নাই। কিন্ত রাজশাহী জেলা ম্যানেজা আব্দুল রাজ্জাক শাখা ব্রাঞ্চগুলোর ম্যানেজার থেকে মাঠকর্মীদে বিনা দোষে নাজেহাল করে থাকেন। তাকে বিভিন্ন ভাবে সস্তষ করতে না পারলেই সে কর্মীকে বদলী করে পাঠান বিভিন্ প্রান্তে। এমন আচারণে ক্ষিপ্ত হয়ে গোলাম রাব্বানী এমন কাজ করতে পারে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাঠকর্মী গোলাম রাব্বানীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাই।

আশা ব্রাঞ্চ মুন্ডুমালা শাখার ম্যানেজার সিহাব উদ্দিন জানান, তার ব্রাঞ্চের মাঠ কর্মী গোলাম রাব্বানীকে গোদাগাড়ী উপজেলার পালপুল ব্রাঞ্চে বদলী করা হয়েছিল। ২ মার্চ তিনি এ ব্রাঞ্চ হতে ছাড়পত্র নিয়ে বিদায় হয়েছে। কিন্ত সেখানে তিনি যোগদান করেনি। পরে আমরা জানতে পারলাম এ ব্রাঞ্চের অনেক সদস্যদের টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। তার মোবাইল ফোন ও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে রবিবার তানোর থানায় জিডি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক জানান,মাঠকর্মী গোলাম রাব্বানীর বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত কমিটি সোমবার পর্যন্ত ১০ সদস্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার নিয়ে গেছে এমন সত্যতা পেয়েছেন। আমরা মাঠকর্মী গোলাম রাব্বানীর বাড়ি জেলার বাগমারা উপজেলায় খোজ নিয়ে তার পরিবারে সাথে কথা বলেছি। টাকা উদ্ধার চেষ্টা চলছে। তবে বিষয়টি সামান্য এটা নিয়ে লেখা লেখির কিছু নেই। আর মাঠকর্মীদের সাথে খারাপ আচারণ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তানোরে গ্রাহকের ১০ লাখ টাকা নিয়ে আশার মাঠকর্মী উধাও

আপডেট সময় : ০৪:৪৯:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩

রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার আশা ব্রাঞ্চের অর্ধশত গ্রাহকের পরিশোধিত ঋণ ও সঞ্চয়ের প্রায় ১০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন গোলাম রাব্বনী নামের এক মাঠকর্মী। গত বৃহস্পতিবার তিনি মুন্ডুমালা ব্রাঞ্চ হতে উধাও হয়েছেন।

বিষয়টি রোববার জানাজানি হলে মুন্ডুমালা শাখা এলাকার কয়েক হাজার গ্রাহক তাদের জমানো সঞ্চয়পত্র নিয়ে বেশ আতঙ্কে রয়েছে। অনেক সদস্য ব্রাঞ্চে এসে তাদের আমনত ঠিক আছে কিনা তা যাছাই বাছাই করছেন।

এ ঘটনায় রবিবার বিকালে এ ব্রাঞ্চের ম্যানেজার সিহাব উদ্দিন তানোর থানায় মাঠকর্মী গোলাম রাব্বানী বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়ে সাধারণ ডাইরি করেছেন। আর একই দিনে রাজশাহী জেলা আশা অফিস থেকে দুইজন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ও দুইজন আরএম দিয়ে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ তদন্ত কমিটি সোমবার সরেজমিন মুন্ডুমালা আশা ব্রাঞ্চে এসে গ্রাহক/সদস্যদের সঞ্চয় ও পরিশোধীত ঋণ যাছাই বাছাই শুরু করেছেন।

সোমবার প্রথম দিনেই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি মুন্ডুমালা ব্রাঞ্চের সদস্যদের পরিশোধীত ঋণে টাকা ও সঞ্চয় নিয়ে মাঠকর্মী অফিসে জমা দেখাইনি এমন ১২ থেকে ১৫ জনের তালিকা পেয়েছে। তাতে পাঁচ লাখ ৫২ হাজার ৫২০ টাকা খোয়া যাওয়া বিষয়টি সত্যতা পেয়েছেন বলে তদন্ত কমিটি এক সদস্য নাম প্রকাশ না করা শর্তে এ প্রতিবেদক জানিয়েছেন।

এদিকে গতকাল সোমাবার মুন্ডুমালা আশা ব্রাঞ্চে ২৫ থেকে ৩০ জন সদস্য এসেছিলেন তাদের আমনতের জমানো সঞ্চয় ঠিক আছেন কিনা তা জানতে। এর মধ্যে কথা হয় উপজেলার বাধাইড় ইউপির খাড়িকল্ল্যা গ্রামের সিমা নামের এক সদস্য। তিনি জানান গত এক সপ্তহ আগে মাঠকর্মী গোলাম রাব্বানী হাতে ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা ঋণ পরিশোধের জন্য দিয়েছে। কিন্ত অফিসের খাতা তা জমা হয়নি।

মুন্ডুমালা গ্রামের সাফিউল ইসলাম নামের এক সদস্য জানান, তিনি ৬ মাস মেয়াদী ঋণের এক লাখ টাকা মাঠকর্মীর হাতে দিয়েছেন। এখন দেখি অফিসের খাতায় তা জমা হয়নি।

তবে,আশা ব্রাঞ্চের এক মাঠকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,আশা সংস্থা একটি মানের সংস্থা। এখানে সদস্যদের আমনতের টাকা খোয়া যাওয়ার কোন সুয়োগ নাই। কিন্ত রাজশাহী জেলা ম্যানেজা আব্দুল রাজ্জাক শাখা ব্রাঞ্চগুলোর ম্যানেজার থেকে মাঠকর্মীদে বিনা দোষে নাজেহাল করে থাকেন। তাকে বিভিন্ন ভাবে সস্তষ করতে না পারলেই সে কর্মীকে বদলী করে পাঠান বিভিন্ প্রান্তে। এমন আচারণে ক্ষিপ্ত হয়ে গোলাম রাব্বানী এমন কাজ করতে পারে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাঠকর্মী গোলাম রাব্বানীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাই।

আশা ব্রাঞ্চ মুন্ডুমালা শাখার ম্যানেজার সিহাব উদ্দিন জানান, তার ব্রাঞ্চের মাঠ কর্মী গোলাম রাব্বানীকে গোদাগাড়ী উপজেলার পালপুল ব্রাঞ্চে বদলী করা হয়েছিল। ২ মার্চ তিনি এ ব্রাঞ্চ হতে ছাড়পত্র নিয়ে বিদায় হয়েছে। কিন্ত সেখানে তিনি যোগদান করেনি। পরে আমরা জানতে পারলাম এ ব্রাঞ্চের অনেক সদস্যদের টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। তার মোবাইল ফোন ও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে রবিবার তানোর থানায় জিডি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক জানান,মাঠকর্মী গোলাম রাব্বানীর বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত কমিটি সোমবার পর্যন্ত ১০ সদস্যের প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার নিয়ে গেছে এমন সত্যতা পেয়েছেন। আমরা মাঠকর্মী গোলাম রাব্বানীর বাড়ি জেলার বাগমারা উপজেলায় খোজ নিয়ে তার পরিবারে সাথে কথা বলেছি। টাকা উদ্ধার চেষ্টা চলছে। তবে বিষয়টি সামান্য এটা নিয়ে লেখা লেখির কিছু নেই। আর মাঠকর্মীদের সাথে খারাপ আচারণ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান