ঢাকা ০২:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তানোরে খাবার পানির হাহাকার

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট সময় : ০৭:২৩:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ৯০ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহীর তানোর পৌরসভায় খাবার পানির হাহাকার পড়েছে। বিগত সময়ে পৌরসভা থেকে যে সব হ্যান্ড টিবওয়েল দেওয়া হয়েছে সেগুলো বিকল হয়ে পড়েছে। এতে করে খাবার পানি জোগাড় করতে গৃহিনীদের বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে পানি আনতে হচ্ছে। অথচ পৌর কর্তৃপক্ষের এসব নিয়ে তিল পরিমান গুরুত্ব নেই।

নাগরিক সেবা বলতে তো কিছুই নেই সেই সাথে খাবার পানি নিয়ে চরম বেকায়দায় পৌর নাগরিক রা। আর সব থেকে বঞ্চিত পৌর সদর গুবিরপাড়া গ্রামটি। গ্রামে একটি হ্যান্ড টিবওয়েলে পুরো পাড়ার পানি খাওয়ার ভরসা। পুরো পাড়ার চাপে প্রতিদিন বিকল হয়ে পড়ে টিবওয়েলটি। পৌর মেয়রকে একাধিকবার বলেও কোন গুরুত্ব নেই।

গ্রামবাসী সুত্রে জানা গেছে, পৌর সদর গুবিরপাড়া গ্রামের আলামিনের দোকানের উত্তরে, হান্নান ও সাইদুরের বাড়ির পূর্ব দিকে পৌরসভা থেকে বিগত কয়েক বছর আগে তৎকালিন ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান গৃহিনীদের দাবির প্রেক্ষিতে হ্যান্ড টিবওয়েল দেন। কিন্তু গোড়া বাঁধায় না করার কারনে মাসে কয়েকবার করে নষ্ট হয়ে পড়ে। পবিত্র ঈদুল ফিতরে দিনে সকালের দিকে নষ্ট হয় টিবওয়েলটি। নষ্টের কারনে প্রায় ২০টি পরিবার চরম বেকায় পড়েন।

কাজলী বেগম জানান, ঈদের দিন নষ্ট হওয়ার পর অন্যপাড়া থেকে পানি এনে খাবার সহ যাবতীয় কাজ করা হয়েছে। বিগত ২৮ বছরের পৌরসভায় কোন নাগরিক সেবা তো নাই, খাবার পানিরও কোন ব্যবস্থা করে দেয় নি। আমরা গুবিরপাড়ার মানুষ বলে কি পৌর নাগরিক না। ড্রেনেজ, মশা মারা তো হয়না, আবার ট্যাক্স ঠিকই দিতে হয়। মেয়রকে অনেক বার মটরের ব্যাপারে বলার পরও কোন গুরুত্ব দেয় না। অথচ ভোটের সময় উন্নয়নের জোয়ার বয়ে দিবে, কোন সমস্যা থাকবেনা, এবার ভোট চাইতে এলে মজা দেখাব। অল্প দিনের মধ্যে মটর না দিলে পাড়ার সব মহিলারা ঝাটা মিছিল করবে।

পলি নামের আরেক গৃহিনী জানান, একটি টিবওয়েল ২০ টি পরিবারের পানি খাওয়ার ভরসা। নষ্ট হলে এবাড়ি ওবাড়ি গিয়ে পানি এনে জমা রাখতে হয়। পৌর নাগরিক বলতে লজ্জা লাগে। অন্য জায়গায় ঠিকই মটর দেওয়া হচ্ছে। মান্নান কমিশনার এই টিবওয়েল না দিলে খাবার পানির জন্য পাগল পারা হতে হত। দ্রুত সময়ের মধ্যে মটর না দিলে পৌরসভা ঘেরাও করব। সবাই ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছে।

লাভলী, নারগিস, লাবনী, আলামিন, সামাদ, ওহাবসহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, আমরা অবহেলিত পৌর নাগিরক। কারন ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিটি পাড়া মহল্লায় মটর ও টেপের লাইন দেওয়া হয়েছে। তাদের খাবার পানি নিয়ে কোন চিন্তা নাই। কিন্ত পৌরসভা থেকে ১ কিলোমিটারের কম দুরুত্ব গুবিরপাড়া গ্রাম। এক টিবওয়েলে ২০ পরিবার কিভাবে পানি খেতে পারি। লাইন ধরে পানি নিতে হয়। পৌর মেয়র তো ভোটের আগে পানির লাইন, রাস্তা ঘাটসহ নানা উন্নয়নের কথা বলে ভোট নিয়েছে। চেয়ার পেয়ে আখের গোছানো শুরু করেছেন। অবস্থা দেখে মনে হয় গুবিরপাড়া গ্রামটি পৌর মানচিত্রের বাহিরে। অপ্ল দিনের মধ্যে মটর না হলে ঝাটা মিছিল সহ পৌর ভবন ঘেরাও করে মটর আদায় করা হবে।

পৌর মেয়র ইমরুল হক জানান, মটরের বরাদ্দ নাই, পেলে ব্যবস্থা করা হবে। আপনি বিভিন্ন জায়গায় মটর দিয়েছেন ও দীর্ঘ দিন ধরে মটরের বিষয়ে বলা হচ্ছে কি কারনে হয়নি প্রশ্ন করা হলে উত্তরে জানান, আমি চেষ্টা করব দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা করার। শুধু গুবিরপাড়া না পৌর ভবননের পশ্চিমে শীতলীপাড়ায় খাবার পানির তীব্র সংকট। দীর্ঘ ২৮ বছরে সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্য সম্মত স্যানেটশনের কোন ব্যবস্থা নেই।

কেশরহাট পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী তানোর পৌরসভার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী ও সচিব সরদার জাহাঙ্গীরের মোবাইলে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করেন নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, অল্পদিনের মধ্যে টিবওয়েল আসবে। যদিও পৌরসভায় দেওয়া যায় না। তারপরও আবেদন করলে গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে বা ব্যবস্থা করা হবে।

ডিডিএলজির কর্মকর্তা শাহানার মোবাইলে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলে তিনিও রিসিভ করেন নি। জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামিম আহম্মেদকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে খাবার পানির সংকট দুর করা হব।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তানোরে খাবার পানির হাহাকার

আপডেট সময় : ০৭:২৩:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৩

রাজশাহীর তানোর পৌরসভায় খাবার পানির হাহাকার পড়েছে। বিগত সময়ে পৌরসভা থেকে যে সব হ্যান্ড টিবওয়েল দেওয়া হয়েছে সেগুলো বিকল হয়ে পড়েছে। এতে করে খাবার পানি জোগাড় করতে গৃহিনীদের বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে পানি আনতে হচ্ছে। অথচ পৌর কর্তৃপক্ষের এসব নিয়ে তিল পরিমান গুরুত্ব নেই।

নাগরিক সেবা বলতে তো কিছুই নেই সেই সাথে খাবার পানি নিয়ে চরম বেকায়দায় পৌর নাগরিক রা। আর সব থেকে বঞ্চিত পৌর সদর গুবিরপাড়া গ্রামটি। গ্রামে একটি হ্যান্ড টিবওয়েলে পুরো পাড়ার পানি খাওয়ার ভরসা। পুরো পাড়ার চাপে প্রতিদিন বিকল হয়ে পড়ে টিবওয়েলটি। পৌর মেয়রকে একাধিকবার বলেও কোন গুরুত্ব নেই।

গ্রামবাসী সুত্রে জানা গেছে, পৌর সদর গুবিরপাড়া গ্রামের আলামিনের দোকানের উত্তরে, হান্নান ও সাইদুরের বাড়ির পূর্ব দিকে পৌরসভা থেকে বিগত কয়েক বছর আগে তৎকালিন ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান গৃহিনীদের দাবির প্রেক্ষিতে হ্যান্ড টিবওয়েল দেন। কিন্তু গোড়া বাঁধায় না করার কারনে মাসে কয়েকবার করে নষ্ট হয়ে পড়ে। পবিত্র ঈদুল ফিতরে দিনে সকালের দিকে নষ্ট হয় টিবওয়েলটি। নষ্টের কারনে প্রায় ২০টি পরিবার চরম বেকায় পড়েন।

কাজলী বেগম জানান, ঈদের দিন নষ্ট হওয়ার পর অন্যপাড়া থেকে পানি এনে খাবার সহ যাবতীয় কাজ করা হয়েছে। বিগত ২৮ বছরের পৌরসভায় কোন নাগরিক সেবা তো নাই, খাবার পানিরও কোন ব্যবস্থা করে দেয় নি। আমরা গুবিরপাড়ার মানুষ বলে কি পৌর নাগরিক না। ড্রেনেজ, মশা মারা তো হয়না, আবার ট্যাক্স ঠিকই দিতে হয়। মেয়রকে অনেক বার মটরের ব্যাপারে বলার পরও কোন গুরুত্ব দেয় না। অথচ ভোটের সময় উন্নয়নের জোয়ার বয়ে দিবে, কোন সমস্যা থাকবেনা, এবার ভোট চাইতে এলে মজা দেখাব। অল্প দিনের মধ্যে মটর না দিলে পাড়ার সব মহিলারা ঝাটা মিছিল করবে।

পলি নামের আরেক গৃহিনী জানান, একটি টিবওয়েল ২০ টি পরিবারের পানি খাওয়ার ভরসা। নষ্ট হলে এবাড়ি ওবাড়ি গিয়ে পানি এনে জমা রাখতে হয়। পৌর নাগরিক বলতে লজ্জা লাগে। অন্য জায়গায় ঠিকই মটর দেওয়া হচ্ছে। মান্নান কমিশনার এই টিবওয়েল না দিলে খাবার পানির জন্য পাগল পারা হতে হত। দ্রুত সময়ের মধ্যে মটর না দিলে পৌরসভা ঘেরাও করব। সবাই ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছে।

লাভলী, নারগিস, লাবনী, আলামিন, সামাদ, ওহাবসহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, আমরা অবহেলিত পৌর নাগিরক। কারন ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিটি পাড়া মহল্লায় মটর ও টেপের লাইন দেওয়া হয়েছে। তাদের খাবার পানি নিয়ে কোন চিন্তা নাই। কিন্ত পৌরসভা থেকে ১ কিলোমিটারের কম দুরুত্ব গুবিরপাড়া গ্রাম। এক টিবওয়েলে ২০ পরিবার কিভাবে পানি খেতে পারি। লাইন ধরে পানি নিতে হয়। পৌর মেয়র তো ভোটের আগে পানির লাইন, রাস্তা ঘাটসহ নানা উন্নয়নের কথা বলে ভোট নিয়েছে। চেয়ার পেয়ে আখের গোছানো শুরু করেছেন। অবস্থা দেখে মনে হয় গুবিরপাড়া গ্রামটি পৌর মানচিত্রের বাহিরে। অপ্ল দিনের মধ্যে মটর না হলে ঝাটা মিছিল সহ পৌর ভবন ঘেরাও করে মটর আদায় করা হবে।

পৌর মেয়র ইমরুল হক জানান, মটরের বরাদ্দ নাই, পেলে ব্যবস্থা করা হবে। আপনি বিভিন্ন জায়গায় মটর দিয়েছেন ও দীর্ঘ দিন ধরে মটরের বিষয়ে বলা হচ্ছে কি কারনে হয়নি প্রশ্ন করা হলে উত্তরে জানান, আমি চেষ্টা করব দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা করার। শুধু গুবিরপাড়া না পৌর ভবননের পশ্চিমে শীতলীপাড়ায় খাবার পানির তীব্র সংকট। দীর্ঘ ২৮ বছরে সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্য সম্মত স্যানেটশনের কোন ব্যবস্থা নেই।

কেশরহাট পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী তানোর পৌরসভার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী ও সচিব সরদার জাহাঙ্গীরের মোবাইলে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করেন নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, অল্পদিনের মধ্যে টিবওয়েল আসবে। যদিও পৌরসভায় দেওয়া যায় না। তারপরও আবেদন করলে গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে বা ব্যবস্থা করা হবে।

ডিডিএলজির কর্মকর্তা শাহানার মোবাইলে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলে তিনিও রিসিভ করেন নি। জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামিম আহম্মেদকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে খাবার পানির সংকট দুর করা হব।