টিসিবির জন্য ২ কোটি ৯ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনছে সরকার
- আপডেট সময় : ১১:০৬:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১২৯ বার পড়া হয়েছে
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির জন্য ২ কোটি ৯ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে সরকারের ব্যয় হবে ৩৩৪ কোটি ৩৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩৯তম সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় মোট ৯টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এর সবকটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চারটি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের একটি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি প্রস্তাবনা রয়েছে।
অনুমোদন দেওয়া ৯টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ৪০৫ কোটি ৪৬ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬৭ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ৯৩২ কোটি ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ৫১৬ এবং এডিবি, জাইকা ও দেশীয় ব্যাংক ঋণ ১ হাজার ৪৭৩ কোটি ২৯ লাখ ৭০ হাজার ১৫১ টাকা।
সচিব জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ওমানের জাদ আল রহীল ইন্টারন্যাশনাল থেকে কেনা হবে ১ কোটি ১০ লাখ লিটার তেল। এ সরকারকে ব্যয় করতে হবে ১৫১ কোটি ৭৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। প্রতি লিটারের জন্য খরচ পড়বে ১৫২ টাকা ৮৫ পয়সা।
এছাড়া দেশীয় প্রতিষ্ঠান সেনা এডিবল ওয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের কাছ থেকে ৪৪ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে সরকার। এক্ষেত্রে প্রতি লিটার সয়াবিনের জন্য সরকারের ব্যয় হবে ১৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। এতে মোট খরচ হবে ৮১ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
দেশীয় আরেক প্রতিষ্ঠান শাং শিন এডিবল ওয়েল লিমিটেডের কাছ থেকে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। প্রতি লিটার ১৮৪ টাকা ৫০ টাকা দরে এতে সরকারের ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
দেশীয় এই দুই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতেই তেল কেনা হবে। এর আগে সরকার দেশীয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১৮৫ টাকা দরে সয়াবিন কিনেছিল। সেই হিসাবে আগের চেয়ে লিটারপ্রতি ৫০ পয়সা কম খরচ হবে এবার।
এছাড়াও ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কিনবে টিসিবি। ১০১ টাকা ৯১ পয়সা দরে মসুরের এসব ডাল কেনায় সরকারের ব্যয় হবে ৮১ কোটি ৫৭ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা।
এদিকে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কোর ওসিপি, এসএ হতে ৩০ হাজার টন টিএসপি সার কিনবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)। এতে সরকারের ব্যয় হবে ১৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। প্রতি টন সার কেনায় খরচ হবে ৪৮০ ডলার। এর আগে প্রতি টন টিএসপি ৫১৮ ডলারে কিনেছিল সরকার।
এছাড়া রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে ফার্জি গ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কিনবে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। এতে খরচ হবে ১৫৩ কোটি ৬০ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
এছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য তিনটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় ‘শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রনটিয়ার টেকনোলজি’র প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের থেকে ৪২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৮৬ হাজার ৪৮৬ টাকায় প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের জন্য দেশি-বিদেশি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান থেকে ১ হাজার ২৩২ কোটি ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮১ টাকা ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ফ্যামিলি বা পরিবার কার্ডের আওতায় একজন কার্ডধারীর কাছে সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি ও দুই কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছে টিসিবি। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১১০ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ৬০ টাকা, ১ কেজি মসুর ডাল ৭০ টাকা ও প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।