ঢাকা ১২:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ছেড়ে খোলামাঠে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৪:০২:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ১২৮ বার পড়া হয়েছে

ঝালকাঠির রাজাপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ছেড়ে খোলা মাঠের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। উপজেলার শুক্তগড় মাহমুদিয়া দাখিল মাদ্রাসার এমন অবস্থা।

মাদ্রাসা থেকে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে ৭ লাখ ৪৯ হাজার ৪ শত ১০ টাকা ব্যয়ে তিন কক্ষ বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়। তিন কক্ষের একটিতে অফিস রুম। আর বাকি দুইটি কক্ষের মাঝে পার্টিশন দিয়ে চারটি ক্লাস বসানো হয়। কাজের মান খারাপ হওয়ায় কয়েক বছর আগে থেকেই ভবনের ছাদ থেকে পানি পরতে শুরু করে। অফিস কক্ষের ভিম ভেঙ্গে পড়ায় সুপারি গাছের খুটি দিয়ে ঢেকে বাধানো হয়েছে। ভবনের প্রতিটা পিলার ফেটে লোহার রড বের হয়ে গেছে। ভবনের পলেস্তার খসে খসে পরছে। কক্ষের সিলিং সহ ভিম ফেটে রড বের হয়ে গেছে। পলেস্তার পরে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা আহতও হয়েছে। এখন যে কোন সময় ভবন ধসে পরতে পারে এই ভেবে এখন এর মধ্যে শিক্ষার্থীরা আর বসতে চায় না। তাই দিন দিন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। মাদ্রাসায় এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পাশে আর একটি জড়াজীর্ণ কাঠের শ্রেনীকক্ষ রয়েছে। বর্তমানে এই মাদ্রাসায় ১ম শ্রেনী থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত মোট ২৭৫জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে যারা ক্লাস করতো বাধ্য হয়ে তারা এখন খোলা মাঠের মধ্যে পাঠদান নিচ্ছে। ভবনের এমন খারাপ অবস্থা দেখে এক বছর পূর্বে মৌখিক ভাবে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ।

মাদ্রাসার শিক্ষার্থী তহমিনা, ফারিয়া, ফয়সাল, সাদিয়, আল-মাহমুদ জানায়, ক্লাসরুমে প্রায় সিলিং থেকে পলেস্তার খসে পরে আমাদের কয়েকজন সহপাঠী আহত হয়েছে। এখন ঝুঁকিপূর্ণ ঐ ক্লাস রুমে ঢুকতে ভয় হয়।

মাদ্রাসার শিক্ষার্থী অভিভাবক আব্দুল ওয়াহেদ তালুকদার, মো. রুবেল হাওলাদার, মো. ছাইদুল সিকদার, মো. খলিলুর রহমান মোল্লা জানায়, বর্তমানে মাদ্রাসার শ্রেনীকক্ষের যে অবস্থা তাতে ছেলে-মেয়েদের মাদ্রাসায় পাঠাতে দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি। কারণ বাচ্চাদের মাদ্রাসায় পাঠিয়ে সারাদিন আতঙ্কে থাকতে হয়।

মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মাহবুবুর রহমান বলেন, ভবনের এ অবস্থায় বর্তমানে খোলা মাঠে ক্লাস করাতে হচ্ছে। কিন্তু রোদে বসে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে চায় না। এখন দিনে দিনে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। সামনে আবার বর্ষাকাল আসতেছে তখন শিক্ষার্থীদের কোথায় বসাবো জানিনা। তাই মাদ্রাসার এই সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কমনা করছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তফা আলম বলেন, ইতোমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষসহ এমপি মহাদয়ের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। এমপি মহোদয় নতুন ভবন দেবেন বলে আশ্বস্থ করেছেন। এখন দেখি এতে কাজ না হলে মাদ্রাসার বর্তমান অবস্থা দেখে আবারও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ প্রধানমন্ত্রীর কর্যালয় যাবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ছেড়ে খোলামাঠে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

আপডেট সময় : ০৪:০২:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ঝালকাঠির রাজাপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ছেড়ে খোলা মাঠের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। উপজেলার শুক্তগড় মাহমুদিয়া দাখিল মাদ্রাসার এমন অবস্থা।

মাদ্রাসা থেকে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে ৭ লাখ ৪৯ হাজার ৪ শত ১০ টাকা ব্যয়ে তিন কক্ষ বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়। তিন কক্ষের একটিতে অফিস রুম। আর বাকি দুইটি কক্ষের মাঝে পার্টিশন দিয়ে চারটি ক্লাস বসানো হয়। কাজের মান খারাপ হওয়ায় কয়েক বছর আগে থেকেই ভবনের ছাদ থেকে পানি পরতে শুরু করে। অফিস কক্ষের ভিম ভেঙ্গে পড়ায় সুপারি গাছের খুটি দিয়ে ঢেকে বাধানো হয়েছে। ভবনের প্রতিটা পিলার ফেটে লোহার রড বের হয়ে গেছে। ভবনের পলেস্তার খসে খসে পরছে। কক্ষের সিলিং সহ ভিম ফেটে রড বের হয়ে গেছে। পলেস্তার পরে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা আহতও হয়েছে। এখন যে কোন সময় ভবন ধসে পরতে পারে এই ভেবে এখন এর মধ্যে শিক্ষার্থীরা আর বসতে চায় না। তাই দিন দিন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। মাদ্রাসায় এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পাশে আর একটি জড়াজীর্ণ কাঠের শ্রেনীকক্ষ রয়েছে। বর্তমানে এই মাদ্রাসায় ১ম শ্রেনী থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত মোট ২৭৫জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে যারা ক্লাস করতো বাধ্য হয়ে তারা এখন খোলা মাঠের মধ্যে পাঠদান নিচ্ছে। ভবনের এমন খারাপ অবস্থা দেখে এক বছর পূর্বে মৌখিক ভাবে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ।

মাদ্রাসার শিক্ষার্থী তহমিনা, ফারিয়া, ফয়সাল, সাদিয়, আল-মাহমুদ জানায়, ক্লাসরুমে প্রায় সিলিং থেকে পলেস্তার খসে পরে আমাদের কয়েকজন সহপাঠী আহত হয়েছে। এখন ঝুঁকিপূর্ণ ঐ ক্লাস রুমে ঢুকতে ভয় হয়।

মাদ্রাসার শিক্ষার্থী অভিভাবক আব্দুল ওয়াহেদ তালুকদার, মো. রুবেল হাওলাদার, মো. ছাইদুল সিকদার, মো. খলিলুর রহমান মোল্লা জানায়, বর্তমানে মাদ্রাসার শ্রেনীকক্ষের যে অবস্থা তাতে ছেলে-মেয়েদের মাদ্রাসায় পাঠাতে দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি। কারণ বাচ্চাদের মাদ্রাসায় পাঠিয়ে সারাদিন আতঙ্কে থাকতে হয়।

মাদ্রাসা সুপার মাওলানা মাহবুবুর রহমান বলেন, ভবনের এ অবস্থায় বর্তমানে খোলা মাঠে ক্লাস করাতে হচ্ছে। কিন্তু রোদে বসে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে চায় না। এখন দিনে দিনে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। সামনে আবার বর্ষাকাল আসতেছে তখন শিক্ষার্থীদের কোথায় বসাবো জানিনা। তাই মাদ্রাসার এই সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কমনা করছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তফা আলম বলেন, ইতোমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষসহ এমপি মহাদয়ের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। এমপি মহোদয় নতুন ভবন দেবেন বলে আশ্বস্থ করেছেন। এখন দেখি এতে কাজ না হলে মাদ্রাসার বর্তমান অবস্থা দেখে আবারও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ প্রধানমন্ত্রীর কর্যালয় যাবো।