ঢাকা ০৬:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
১২ দিনে রেমিট্যান্স এল পৌনে ১২ হাজার কোটি টাকা পাকিস্তানে পুলিশ সদর দফতরে জঙ্গি হামলায় ৩ পুলিশ নিহত নির্বাচিত সরকারই একমাত্র জনগণের জন্য কাজ করতে পারে: রিজভী দুর্গাপুরে অসুস্থতা আর আর্থিক অসচ্ছলতায় মা-মেয়ে বিষপানে আত্মহত্যা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর সুপারিশ ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ৬৬৯ কৌঁসুলি নিয়োগ, তালিকা প্রকাশ রোহিঙ্গা নিয়ে প্রস্তাবে ড. ইউনূসের প্রশংসা জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধির গোদাগাড়ীতে ড্রাগন বাগানে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু ফেসবুকে পোষ্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুঠিয়ায় সংঘর্ষে গুরুতর আহত ৩ সাগর-রুনি হত্যায় বিগত সরকারের প্রভাবশালী অনেকে জড়িত

জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিলে আজমতের স্বস্তি

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৫:২৮:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩ ৯০ বার পড়া হয়েছে

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। রোববার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে তার মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন রির্টানিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম। মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ছাড়াও স্বতন্ত্র আরও দুই মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জাহাঙ্গীর আলমের অনান্য তথ্য সঠিক থাকলেও একটি কারখানার বিপরীতে ব্যাংকে লোনের জামিনদার হিসেবে ’ঋণ খোলাপি’র কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ৩০০ জন সমর্থনকারীর স্থলে ২৩৯ জনের স্বাক্ষর দিয়ে মনোনয়নয়পত্র জমা দেয়ায় অলিউর রহমান ও যথাযথ কাগজপত্র না থাকা এবং ৩০০ জনের সমর্থনের স্থলে ১৮৪ জনের সমর্থনকারীর স্বাক্ষর জমা দেয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

তবে যেহেতু সময় আছে। তাদের এ ব্যাপারে আপিল করার সুযোগ রয়েছে বলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম।

এরআগে জাহাঙ্গীর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছে নৌকা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেন। তবে দল তাকে মনোনয়ন না দিলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। মেয়র পদে তার মনোনয়নপত্র জমাদানের দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার মা জায়দা খাতুনেরও মনোনয়নপত্র জমা দেন। ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। ব্যাংকের পাওনার ইনস্টলমেন্ট জমা দেয়ার কথা। কর্তৃপক্ষ লিখিত ও মৌখিক জবানবন্দি দিয়েছে। তারপরও আপনারা যে কাজটি করলেন তাতে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে, আপনারা নিরপেক্ষতার মধ্যে ছিলেন না। আমি উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আমি আশা করি আপনাদের কাজে যেন নিরপেক্ষতা থাকে। সব প্রার্থীদের সঙ্গে নিরপেক্ষ আচরণ করা হয়। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মধ্যে কোনাবাড়ি এলাকায় কোরিয়ান মালিকানাধীন একটি কম্পোজিট কারখানা রয়েছে। ওই কোম্পানির মধ্যে আমার কোন শেয়ার নেই। কোন লভ্যাংশও নেই না। তবুও হাজার হাজার শ্রমিকদের বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে আমার নিজের সম্পদ তাদের দিয়েছি। ওই ব্যাংকের মর্টগেজ নিয়ে সেই কোরিয়ান মালিক লোন নিয়ে কারখানাটি চলমান রেখেছে। এক কথায় আমি সেখানে জামিনদার হই। করোনা মহামারির কারণে ইতোপূর্বে কোরিয়ান মালিক ব্যাংকে যথাসময়ে ওই পেমেন্ট দিতে পারেনি।

আমি প্রার্থী হওয়ার পর গত ১১ এপ্রিল ও ১৮ এপ্রিল কোরিয়ানরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের যে পাওনা ছিল তা পরিশোধ করেছে। কোরিয়ান কোম্পনি অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা টাকা পরিশোধ করেছে। সেই সমস্ত কাগজপত্র আইনজীবী এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জমা দেয়া হয়েছে। ব্যাংকে ঋণ খেলাপির যে অভিযোগে তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল হয়েছে তা তিনি পরিশোধ করে দিয়েছেন। যাচাই-বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংক কর্মকর্তারা ঋণ পরিশোধেদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি ওই কোরিয়ান মালিকের পক্ষে আব্দুর রহিমের বিপরীতে জামিনদার ছিলেন।

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, তারপরও আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছে। কোন অদৃশ্যের চাপে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছেন কিনা জানি না। তবে আমি ন্যায় বিচার পেতে আপিল করবো। প্রয়োজনে আমি উচ্চ আদালতে যাবো। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যেতে চাই।

রিটার্নিং কর্মকর্তার ফোকাল পয়েন্ট (সহায়ক) কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেন খান জানান, অগ্রণী ব্যাংক ঢাকার ওয়াশা শাখা থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকার নিউ টাউন নীট ওয়্যার কোম্পানী লিমিটেডের একটি ঋণের জামিনদাতা হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ ওই টাকা পরিশোধ না করায় মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি শাখা ২৯ এপ্রিল জাহাঙ্গীর আলমের ঋণ খেলাপী সংক্রান্ত এ তথ্য দিয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকতা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, মনোনয়ন সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করেছি। জাহাঙ্গীর আলমের অন্যসব কাগজপত্র সঠিক আছে। তবে এর স্বপক্ষে জাহাঙ্গীর আলম ব্যাংকে টাকা জমা করার কিছু কাগজপত্র আমাদের কাছে দিয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে তা যথার্থ ছিল না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইভি তথ্যে ত্রুটি থাকায় তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়েছে। তবে প্রার্থীর আপিল করার সুযোগ রয়েছে। তাই তিনি আপিল করতে পারবেন।

আজমতের স্বস্তি

আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ বলেন, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আমি স্বস্তি পেয়েছি। আমার দল, সাধারণ মানুষ ও শান্তিকামী মানুষ যেহেতু আমার সঙ্গে রয়েছে সেজন্য অবশ্যই স্বস্তি আমি পাচ্ছি। নির্বাচনে আমি কাউকে প্রতিপক্ষ মনে করি না। আমি প্রতিদ্বন্দ্বি মনে করি। আমি সবাইকে নিয়ে স্বচ্ছ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চাই। আমি এই ম্যাসেজটা দিতে চাই যে, কেউ আমাদের শত্রু নয়। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

বিএনপি’র সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার প্রশ্নে আজমত বলেন, বিএনপি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বয়কট করেনি। সিটি করপোরেশন শুধুমাত্র মেয়র দ্বারা পরিচালিত নয়। এটি পরিচালনা করতে মেয়রের সঙ্গে কাউন্সিলরদেরও প্রয়োজন হয়। আর বিএনপি কাউন্সিলর পদে তাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী নির্বাচন করছেন। আমি বলতে চাই বিএনপি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়নি, শুধুমাত্র মেয়র নির্বাচন থেকে তারা সরে দাঁড়িয়েছেন। আমি মনে করি এ নির্বাচনে সাধারণ জনগণ লড়াই করছেন।

আরও পড়ুন: জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল, মায়েরটা বৈধ

ঋণখেলাপির বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম একটি সংশোধনী চেয়েছেন। সেটা একেসেপ্ট হয়েছে কি-না তা জানি না। ব্যাংকের প্রতিনিধিও বলেছে তাদের বোর্ড মিটিং রয়েছে। সেই বোর্ড বিষয়টি ডিসাইড করবে। এটা আমাদের কোন ব্যাপার নয়। নির্বাচন কমিশনের যে আইন রয়েছে, বিধি রয়েছে সেই বিধির আলোকে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। তবে জাহাঙ্গীর আলম আইনের মধ্য দিয়ে যদি প্রার্থীতা ফিরে পায় আমি তাকে মোস্ট ওয়েলকাম জানাবো।

বৈধ মেয়র প্রার্থী ৯

গাজীপুর সিটি করপোরেশনে যাচাই-বাছাইয়ের পর নির্বাচন কমিশন রোববার ১২ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে নয় মেয়র প্রার্থীকে বৈধ বলে ঘোষণা করেছেন। ইতোপূর্বে এ পদে ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র উত্তোলন করলেও দাখিলের শেষ দিন ২৭ এপ্রিল ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

বৈধ প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন, আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্য সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন, জাকের পার্টির প্রার্থী রাজু আহমেদ, ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান, গণ ফ্রন্টের প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হারুন অর রশিদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম রনি, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডল এবং সাময়িক বরখাস্ত মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়দা আক্তার।

২৫ মে গাজীপুর সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ মে এবং প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ৯ মে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিলে আজমতের স্বস্তি

আপডেট সময় : ০৫:২৮:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। রোববার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে তার মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন রির্টানিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম। মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ছাড়াও স্বতন্ত্র আরও দুই মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জাহাঙ্গীর আলমের অনান্য তথ্য সঠিক থাকলেও একটি কারখানার বিপরীতে ব্যাংকে লোনের জামিনদার হিসেবে ’ঋণ খোলাপি’র কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ৩০০ জন সমর্থনকারীর স্থলে ২৩৯ জনের স্বাক্ষর দিয়ে মনোনয়নয়পত্র জমা দেয়ায় অলিউর রহমান ও যথাযথ কাগজপত্র না থাকা এবং ৩০০ জনের সমর্থনের স্থলে ১৮৪ জনের সমর্থনকারীর স্বাক্ষর জমা দেয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

তবে যেহেতু সময় আছে। তাদের এ ব্যাপারে আপিল করার সুযোগ রয়েছে বলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম।

এরআগে জাহাঙ্গীর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছে নৌকা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেন। তবে দল তাকে মনোনয়ন না দিলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। মেয়র পদে তার মনোনয়নপত্র জমাদানের দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার মা জায়দা খাতুনেরও মনোনয়নপত্র জমা দেন। ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর ৩ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। ব্যাংকের পাওনার ইনস্টলমেন্ট জমা দেয়ার কথা। কর্তৃপক্ষ লিখিত ও মৌখিক জবানবন্দি দিয়েছে। তারপরও আপনারা যে কাজটি করলেন তাতে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে, আপনারা নিরপেক্ষতার মধ্যে ছিলেন না। আমি উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আমি আশা করি আপনাদের কাজে যেন নিরপেক্ষতা থাকে। সব প্রার্থীদের সঙ্গে নিরপেক্ষ আচরণ করা হয়। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মধ্যে কোনাবাড়ি এলাকায় কোরিয়ান মালিকানাধীন একটি কম্পোজিট কারখানা রয়েছে। ওই কোম্পানির মধ্যে আমার কোন শেয়ার নেই। কোন লভ্যাংশও নেই না। তবুও হাজার হাজার শ্রমিকদের বাঁচানোর জন্য মানবিক কারণে আমার নিজের সম্পদ তাদের দিয়েছি। ওই ব্যাংকের মর্টগেজ নিয়ে সেই কোরিয়ান মালিক লোন নিয়ে কারখানাটি চলমান রেখেছে। এক কথায় আমি সেখানে জামিনদার হই। করোনা মহামারির কারণে ইতোপূর্বে কোরিয়ান মালিক ব্যাংকে যথাসময়ে ওই পেমেন্ট দিতে পারেনি।

আমি প্রার্থী হওয়ার পর গত ১১ এপ্রিল ও ১৮ এপ্রিল কোরিয়ানরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের যে পাওনা ছিল তা পরিশোধ করেছে। কোরিয়ান কোম্পনি অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা টাকা পরিশোধ করেছে। সেই সমস্ত কাগজপত্র আইনজীবী এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জমা দেয়া হয়েছে। ব্যাংকে ঋণ খেলাপির যে অভিযোগে তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল হয়েছে তা তিনি পরিশোধ করে দিয়েছেন। যাচাই-বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংক কর্মকর্তারা ঋণ পরিশোধেদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি ওই কোরিয়ান মালিকের পক্ষে আব্দুর রহিমের বিপরীতে জামিনদার ছিলেন।

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, তারপরও আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছে। কোন অদৃশ্যের চাপে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা থেকে সরে গেছেন কিনা জানি না। তবে আমি ন্যায় বিচার পেতে আপিল করবো। প্রয়োজনে আমি উচ্চ আদালতে যাবো। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যেতে চাই।

রিটার্নিং কর্মকর্তার ফোকাল পয়েন্ট (সহায়ক) কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেন খান জানান, অগ্রণী ব্যাংক ঢাকার ওয়াশা শাখা থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকার নিউ টাউন নীট ওয়্যার কোম্পানী লিমিটেডের একটি ঋণের জামিনদাতা হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ ওই টাকা পরিশোধ না করায় মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি শাখা ২৯ এপ্রিল জাহাঙ্গীর আলমের ঋণ খেলাপী সংক্রান্ত এ তথ্য দিয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকতা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, মনোনয়ন সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করেছি। জাহাঙ্গীর আলমের অন্যসব কাগজপত্র সঠিক আছে। তবে এর স্বপক্ষে জাহাঙ্গীর আলম ব্যাংকে টাকা জমা করার কিছু কাগজপত্র আমাদের কাছে দিয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে তা যথার্থ ছিল না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইভি তথ্যে ত্রুটি থাকায় তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়েছে। তবে প্রার্থীর আপিল করার সুযোগ রয়েছে। তাই তিনি আপিল করতে পারবেন।

আজমতের স্বস্তি

আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ বলেন, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আমি স্বস্তি পেয়েছি। আমার দল, সাধারণ মানুষ ও শান্তিকামী মানুষ যেহেতু আমার সঙ্গে রয়েছে সেজন্য অবশ্যই স্বস্তি আমি পাচ্ছি। নির্বাচনে আমি কাউকে প্রতিপক্ষ মনে করি না। আমি প্রতিদ্বন্দ্বি মনে করি। আমি সবাইকে নিয়ে স্বচ্ছ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চাই। আমি এই ম্যাসেজটা দিতে চাই যে, কেউ আমাদের শত্রু নয়। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

বিএনপি’র সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার প্রশ্নে আজমত বলেন, বিএনপি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বয়কট করেনি। সিটি করপোরেশন শুধুমাত্র মেয়র দ্বারা পরিচালিত নয়। এটি পরিচালনা করতে মেয়রের সঙ্গে কাউন্সিলরদেরও প্রয়োজন হয়। আর বিএনপি কাউন্সিলর পদে তাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী নির্বাচন করছেন। আমি বলতে চাই বিএনপি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়নি, শুধুমাত্র মেয়র নির্বাচন থেকে তারা সরে দাঁড়িয়েছেন। আমি মনে করি এ নির্বাচনে সাধারণ জনগণ লড়াই করছেন।

আরও পড়ুন: জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল, মায়েরটা বৈধ

ঋণখেলাপির বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম একটি সংশোধনী চেয়েছেন। সেটা একেসেপ্ট হয়েছে কি-না তা জানি না। ব্যাংকের প্রতিনিধিও বলেছে তাদের বোর্ড মিটিং রয়েছে। সেই বোর্ড বিষয়টি ডিসাইড করবে। এটা আমাদের কোন ব্যাপার নয়। নির্বাচন কমিশনের যে আইন রয়েছে, বিধি রয়েছে সেই বিধির আলোকে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। তবে জাহাঙ্গীর আলম আইনের মধ্য দিয়ে যদি প্রার্থীতা ফিরে পায় আমি তাকে মোস্ট ওয়েলকাম জানাবো।

বৈধ মেয়র প্রার্থী ৯

গাজীপুর সিটি করপোরেশনে যাচাই-বাছাইয়ের পর নির্বাচন কমিশন রোববার ১২ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে নয় মেয়র প্রার্থীকে বৈধ বলে ঘোষণা করেছেন। ইতোপূর্বে এ পদে ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র উত্তোলন করলেও দাখিলের শেষ দিন ২৭ এপ্রিল ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

বৈধ প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন, আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্য সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন, জাকের পার্টির প্রার্থী রাজু আহমেদ, ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান, গণ ফ্রন্টের প্রার্থী মো. আতিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হারুন অর রশিদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম রনি, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডল এবং সাময়িক বরখাস্ত মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়দা আক্তার।

২৫ মে গাজীপুর সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ মে এবং প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ৯ মে।