চীন এলেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ
- আপডেট সময় : ০১:৪৩:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ৮০ বার পড়া হয়েছে
মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কিয়েভ সফরের পর ইউক্রেনের জোর যেন কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। যার দাপটে এবার শক্তিশালী চীনকেও অকপটে কড়া হুঁশিয়ারি দিল দেশটি।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চীনকে সতর্ক করে বলেন, রাশিয়াকে সমর্থন করলেই হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
এছাড়া মলদোভাকে সার্বিক সহায়তা করবে বলেও জানিয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন।
জার্মান দৈনিক পত্রিকা ডাই ওয়েল্টকে জেলেনস্কি জানান, যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল চীন রাশিয়াকে সমর্থন করছে না। বলেন, আমি চাই চীন আমাদের পাশে থাকুক। তবে এই মুহূর্তে আমি মনে করি না এটি সম্ভব। চীন যদি রাশিয়ার সঙ্গে একত্রিত হয়, তাহলে বিশ্বযুদ্ধ হবে। আমি মনে করি যে চীনও সেই ব্যাপারে অবগত আছে।
শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শীর্ষ চীনা কূটনীতিক ওয়াং ইকে তার দেশ চলমান সংঘাতের দিকে যেতে হলে পরিণতির জন্য সতর্ক করেছেন। তার পরই বেইজিং এ দাবি অস্বীকার করেছে। বেইজিং রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে এমন তথ্যে যুক্তরাষ্ট্রর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে চীন।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে অস্ত্র পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। চীন নয়, যুক্তরাষ্ট্রকে তার নিজস্ব ক্রিয়াকলাপের প্রতি মনোযোগ দিতে অনুরোধ করছি। এছাড়াও পরিস্থিতির প্রশমন, শান্তি ও আলোচনা করে অন্যকে দোষারোপ করাসহ মিথ্যা তথ্য ছড়ানো বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এছাড়া ব্রিটেনের ডাউনিং স্ট্রিট মস্কোর পাশে না থাকার জন্য চীনকে একটি সতর্কতা জারি করেছে। চীন প্রাণঘাতী সহায়তা সরবরাহের কথা বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের মুখপাত্র। জানায়, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পুতিনের নৃশংস ও অবৈধ যুদ্ধে যেকোনো সমর্থনই দুঃখজনক।
বলেন, ‘আমরা আশা করছি চীন ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার পক্ষে দাঁড়াবে।’ চীনকে সতর্ক করার পাশাপাশি জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন মলদোভার প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্ডুকে গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছিল। যাতে রাশিয়া অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র করছে বলে উল্লেখ ছিল। জেলেনস্কি জানান, সান্ডু কখনোই আমার কাছে সাহায্য চাননি। তবে তথ্যের জন্য আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ইউক্রেন সর্বদা মোলেদাভাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত থাকবে। প্রথম বার্ষিকীর আগে বাইডেন কিয়েভ সফরে অস্ত্র সরবরাহসহ ৫০০ মিলিয়ন
ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জেলেনস্কি অস্ত্র সরবরাহের গতি বাড়াতে মিত্রদের চাপ দিয়েছেন। যুদ্ধবিমান সরবরাহ করার জন্য পশ্চিমকে আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে তাতে সায় দেননি বাইডেন।
রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠক চীনের শীর্ষ কূটনীতিকের : মঙ্গলবার রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠক করতে মস্কো আসেন চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই। আজ রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। ইউক্রেনে-রাশিয়া যুদ্ধের পর এটিই হবে কোনো চীনা কর্মকর্তার প্রথম সফর। ওয়াংকে গত মাসে চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের শীর্ষ পররাষ্ট্র নীতি উপদেষ্টা হিসাবে মনোনীত করা হয়। তার আটদিনের আন্তর্জাতিক সফরের মধ্যেই পড়বে এই মস্কো সফর।
ওয়াং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন কি-না সে ব্যাপারে রাশিয়া বা চীন কেউই জানায়নি। সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, রাশিয়া-চীনা সম্পর্ক বহুমুখী। এরা পরস্পরের মিত্র। এজেন্ডাটি তাই স্পষ্ট যে এখানে কথা বলার অনেক বিষয়ই থাকতে পারে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই মস্কো সফর চীন ও রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এতে কৌশলগত অংশীদারত্বের বিকাশ চালিয়ে যাওয়া আর আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক হটস্পট ইস্যুর বিষয়ে মতামত বিনিময়ের সুযোগ থাকবে।