ঢাকা ১০:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘গাজায় এখন কোনো নিরাপদ স্থান নেই’

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৮:১৬:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩৯ বার পড়া হয়েছে

গাজায় এখন কোনো নিরাপদ স্থান নেই। কারণ, ইসরায়েলি সেনারা এখন দক্ষিণ গাজাতেও হামলা করছে। ফলে ফিলিস্তিনিদের কাছে নিরাপদ আশ্রয় বলে আর কিছু থাকছে না।

যুদ্ধ শুরুর দুই মাস শেষে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এবার উত্তরের পর দক্ষিণ গাজাতেও আক্রমণ শানাচ্ছে। আর এই দক্ষিণ গাজাতেই লাখ লাখ ফিলিস্তিনি উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে এসেছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।

তরুণ শিল্পপতি হানা আওয়াদ বলছিলেন, ”আমরা এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি, যেখানে আমাদের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। আমরা চাকরি হারিয়েছি, পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছি, বাড়ি-ঘর হারিয়েছি, এমনকি নিজেদের শহরও হারিয়ে ফেলেছি।” লড়াই শুরুর কিছু দিনের মধ্যেই হানা তার শহর ছেড়ে চলে আসেন।

উত্তর গাজার হাজার হাজার মানুষের মতো হানা ও তার পরিবার মিসর সীমান্তের কাছে রাফাহতে চলে গেছেন। সেই সময় ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, উত্তর গাজা থেকে মানুষ যেন দক্ষিণ গাজার নিরাপদ জায়গায় চলে যান। কিন্তু এখন দক্ষিণ গাজাতেও ইসরায়েল সমানে বোমাবর্ষণ করছে।

ইসরায়েলের সেনারা এখন খান ইউনিস শহর ঘিরে অভিযান চালাচ্ছে। শহর থেকে মানুষকে পশ্চিমদিকে বা রাফাহর দক্ষিণে চলে যেতে বলা হচ্ছে। কিন্তু লড়াই বন্ধ করা হচ্ছে না। ইসরায়েলের দাবি, হামাস নেতারা এই শহরেই আছে।

রাফাহতে চাপ বাড়ছে

হানা জানিয়েছেন, ”রাফাহতে থাকাটাও রীতিমতো চ্যালেঞ্জের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খান ইউনিস থেকে দলে দলে মানুষ এখানে আসছেন। ফলে আগে যারা এসেছেন তারা বিপাকে পড়ছেন। গাজার সব জায়গা থেকে রাফাহতে মানুষ আসছে। এখানেও ইসরায়েলের ড্রোনের আওয়াজ শোনা য়াচ্ছে। তাই সত্যিকারের কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।”

যুদ্ধবিরতির সময় রাফাহ সীমান্ত দিয়ে কিছু মানবিক ত্রাণ এসেছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই মানুষের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।

সামনে আরও কঠিন সময়

জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অফ হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স(ইউএনওসিএইচএ) জানিয়েছে, গাজার ২২ লাখ মানুষের মধ্যে ১৮ লাখ মানুষ এই যুদ্ধের ফলে মাথার ওপর ছাদ হারিয়েছে। অনেকেই দক্ষিণ গাজায় চলে গেছেন। সেখানে জাতিসংঘের আশ্রয় শিবিরে আর ঠাঁই নেই। অনেকে গাড়িতে থাকছেন, আত্মীয়দের সঙ্গে গাদাগাদি করে থাকছেন।

হানা জানিয়েছেন, ”খাবার পওয়া যাচ্ছে না। গদি, কম্বল কিছুই নেই। গত দুই দিন ধরে যারা আসছেন, তারা মেঝের ওপর নাইলনের শিট বিছিয়ে থাকছেন।”

তিনি জানিয়েছেন, ”কেউ গাড়ির ভিতর থাকছেন, প্রচুর মানুষ রাস্তায় রাত কাটাচ্ছেন। এই ঠান্ডায় এভাবে রাত কাটানো ভয়ংকর কষ্টের।”

সূত্র : ডয়চে ভেলে

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

‘গাজায় এখন কোনো নিরাপদ স্থান নেই’

আপডেট সময় : ০৮:১৬:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩

গাজায় এখন কোনো নিরাপদ স্থান নেই। কারণ, ইসরায়েলি সেনারা এখন দক্ষিণ গাজাতেও হামলা করছে। ফলে ফিলিস্তিনিদের কাছে নিরাপদ আশ্রয় বলে আর কিছু থাকছে না।

যুদ্ধ শুরুর দুই মাস শেষে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এবার উত্তরের পর দক্ষিণ গাজাতেও আক্রমণ শানাচ্ছে। আর এই দক্ষিণ গাজাতেই লাখ লাখ ফিলিস্তিনি উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে এসেছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।

তরুণ শিল্পপতি হানা আওয়াদ বলছিলেন, ”আমরা এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি, যেখানে আমাদের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। আমরা চাকরি হারিয়েছি, পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছি, বাড়ি-ঘর হারিয়েছি, এমনকি নিজেদের শহরও হারিয়ে ফেলেছি।” লড়াই শুরুর কিছু দিনের মধ্যেই হানা তার শহর ছেড়ে চলে আসেন।

উত্তর গাজার হাজার হাজার মানুষের মতো হানা ও তার পরিবার মিসর সীমান্তের কাছে রাফাহতে চলে গেছেন। সেই সময় ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, উত্তর গাজা থেকে মানুষ যেন দক্ষিণ গাজার নিরাপদ জায়গায় চলে যান। কিন্তু এখন দক্ষিণ গাজাতেও ইসরায়েল সমানে বোমাবর্ষণ করছে।

ইসরায়েলের সেনারা এখন খান ইউনিস শহর ঘিরে অভিযান চালাচ্ছে। শহর থেকে মানুষকে পশ্চিমদিকে বা রাফাহর দক্ষিণে চলে যেতে বলা হচ্ছে। কিন্তু লড়াই বন্ধ করা হচ্ছে না। ইসরায়েলের দাবি, হামাস নেতারা এই শহরেই আছে।

রাফাহতে চাপ বাড়ছে

হানা জানিয়েছেন, ”রাফাহতে থাকাটাও রীতিমতো চ্যালেঞ্জের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খান ইউনিস থেকে দলে দলে মানুষ এখানে আসছেন। ফলে আগে যারা এসেছেন তারা বিপাকে পড়ছেন। গাজার সব জায়গা থেকে রাফাহতে মানুষ আসছে। এখানেও ইসরায়েলের ড্রোনের আওয়াজ শোনা য়াচ্ছে। তাই সত্যিকারের কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।”

যুদ্ধবিরতির সময় রাফাহ সীমান্ত দিয়ে কিছু মানবিক ত্রাণ এসেছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই মানুষের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।

সামনে আরও কঠিন সময়

জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অফ হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স(ইউএনওসিএইচএ) জানিয়েছে, গাজার ২২ লাখ মানুষের মধ্যে ১৮ লাখ মানুষ এই যুদ্ধের ফলে মাথার ওপর ছাদ হারিয়েছে। অনেকেই দক্ষিণ গাজায় চলে গেছেন। সেখানে জাতিসংঘের আশ্রয় শিবিরে আর ঠাঁই নেই। অনেকে গাড়িতে থাকছেন, আত্মীয়দের সঙ্গে গাদাগাদি করে থাকছেন।

হানা জানিয়েছেন, ”খাবার পওয়া যাচ্ছে না। গদি, কম্বল কিছুই নেই। গত দুই দিন ধরে যারা আসছেন, তারা মেঝের ওপর নাইলনের শিট বিছিয়ে থাকছেন।”

তিনি জানিয়েছেন, ”কেউ গাড়ির ভিতর থাকছেন, প্রচুর মানুষ রাস্তায় রাত কাটাচ্ছেন। এই ঠান্ডায় এভাবে রাত কাটানো ভয়ংকর কষ্টের।”

সূত্র : ডয়চে ভেলে