ঢাকা ০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খেটে-খাওয়া মানুষেরা ছুটছেন পাইকারি বাজারে

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৮:২০:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩ ৯৯ বার পড়া হয়েছে

পঞ্চাশোর্ধ্ব হালিমা বেগম। কালো রঙের একটি ব্যাগ নিয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকার রাস্তা পার হচ্ছিলেন। ব্যাগে কি আছে জানতে চাইলে বলেন, সবজি কিনতে আসছিলাম। কেনা শেষ, এখন বাসায় যাচ্ছি।

হালিমা জানান, পরিবারসহ থাকেন লালমাটিয়ায়। স্বামী রাজধানীর একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে তিন মেয়েসহ সংসার চলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় তাদের। তাই কম দামে সবজি কিনতে এসেছেন কারওয়ান বাজারে।

সপ্তাহে দুই দিন কারওয়ান বাজারে আসেন হালিমা। এখানে সবজির পাইকারি বাজার ধরতে হলে ভোরেই আসতে হয় তাকে। কারণ, সকাল ১০টার মধ্যে পাইকারি সবজি বিক্রি প্রায় শেষ হয়ে যায়। তাই ভোরেই কারওয়ান বাজারে আসেন তিনি।

হালিমার মতো শুক্রবার (৩ মার্চ) সকালে স্ত্রীসহ কারওয়ান বাজারে এসেছেন ধানমন্ডি সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ। উদ্দেশ্যও একই। আবুল কালাম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার বাসা ধানমন্ডির সেন্টার রোডে। সেই এলাকার পাশে হাতিরপুল কাঁচাবাজার রয়েছে। কিন্তু সেখানে সবজির অনেক দাম। তাই প্রতি শুক্রবার স্ত্রীকে নিয়ে কারওয়ান বাজারে সবজি কিনতে আসি।

ধানমন্ডির এই বাসিন্দা বলেন, অল্প বেতনে সরকারি একটা চাকরি করি। কিন্তু যে বেতন পাই সেই টাকা দিয়ে সারামাস চলা মুশকিল। তাই পরিকল্পিতভাবেই প্রতি শুক্রবারে কারওয়ান বাজারে আসি। সেখান থেকে পাইকারি দরে সবজি কিনে নিয়ে যাই।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট বৈশ্বিক অস্থিরতার মাঝে নিত্যপণ্যের মূল্য যখন লাগাম ছাড়া ঘোড়ার পিঠে চড়েছে, তখন শুধু আবুল কালাম আজাদ বা হালিমা বেগমই নয়; তাদের মতো অসংখ্য মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরাই এখন ভিড় করছেন কারওয়ান বাজারে। খুচরা বাজারের তুলনায় কিছুটা সস্তায় কিনছেন নানা সবজি।

ভ্যানচালক রহিম মিয়া বলেন, থাকি মহাখালী এলাকায়। যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ছে, কী খেয়ে বাঁচব- তা নিয়েই এখন চিন্তা করতে হচ্ছে। সবকিছুর দাম অনেক বেশি। তাই কম দামে সবজি কেনার জন্য কারওয়ান বাজারে আসছি।

পাইকারি সবজি বিক্রেতা আশরাফুল ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা আসেন কারওয়ান বাজারে। বেশিরভাগ ক্রেতা এক পাল্লা (৫ কেজি) করে সবজি ক্রয় করে নিয়ে যায়। অন্য এলাকা থেকে কিছুটা কম দামে এখানে সবজি ক্রয় করতে পারেন ক্রেতারা।

শুক্রবার কারওয়ান বাজারে প্রতি পাল্লা টমেটো বিক্রি হচ্ছিল ১২০ টাকায়। এছাড়া প্রতি পাল্লা কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ২০ টাকা, প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ১৪ টাকা, প্রতি পাল্লা আলু ৮০ টাকা, প্রতি পাল্লা পেঁপে ৮০ টাকা, এক কুড়ি লেবু ১১৫ টাকা ও প্রতি পাল্লা বেগুন ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

খেটে-খাওয়া মানুষেরা ছুটছেন পাইকারি বাজারে

আপডেট সময় : ০৮:২০:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩

পঞ্চাশোর্ধ্ব হালিমা বেগম। কালো রঙের একটি ব্যাগ নিয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকার রাস্তা পার হচ্ছিলেন। ব্যাগে কি আছে জানতে চাইলে বলেন, সবজি কিনতে আসছিলাম। কেনা শেষ, এখন বাসায় যাচ্ছি।

হালিমা জানান, পরিবারসহ থাকেন লালমাটিয়ায়। স্বামী রাজধানীর একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে তিন মেয়েসহ সংসার চলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় তাদের। তাই কম দামে সবজি কিনতে এসেছেন কারওয়ান বাজারে।

সপ্তাহে দুই দিন কারওয়ান বাজারে আসেন হালিমা। এখানে সবজির পাইকারি বাজার ধরতে হলে ভোরেই আসতে হয় তাকে। কারণ, সকাল ১০টার মধ্যে পাইকারি সবজি বিক্রি প্রায় শেষ হয়ে যায়। তাই ভোরেই কারওয়ান বাজারে আসেন তিনি।

হালিমার মতো শুক্রবার (৩ মার্চ) সকালে স্ত্রীসহ কারওয়ান বাজারে এসেছেন ধানমন্ডি সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ। উদ্দেশ্যও একই। আবুল কালাম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার বাসা ধানমন্ডির সেন্টার রোডে। সেই এলাকার পাশে হাতিরপুল কাঁচাবাজার রয়েছে। কিন্তু সেখানে সবজির অনেক দাম। তাই প্রতি শুক্রবার স্ত্রীকে নিয়ে কারওয়ান বাজারে সবজি কিনতে আসি।

ধানমন্ডির এই বাসিন্দা বলেন, অল্প বেতনে সরকারি একটা চাকরি করি। কিন্তু যে বেতন পাই সেই টাকা দিয়ে সারামাস চলা মুশকিল। তাই পরিকল্পিতভাবেই প্রতি শুক্রবারে কারওয়ান বাজারে আসি। সেখান থেকে পাইকারি দরে সবজি কিনে নিয়ে যাই।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট বৈশ্বিক অস্থিরতার মাঝে নিত্যপণ্যের মূল্য যখন লাগাম ছাড়া ঘোড়ার পিঠে চড়েছে, তখন শুধু আবুল কালাম আজাদ বা হালিমা বেগমই নয়; তাদের মতো অসংখ্য মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরাই এখন ভিড় করছেন কারওয়ান বাজারে। খুচরা বাজারের তুলনায় কিছুটা সস্তায় কিনছেন নানা সবজি।

ভ্যানচালক রহিম মিয়া বলেন, থাকি মহাখালী এলাকায়। যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ছে, কী খেয়ে বাঁচব- তা নিয়েই এখন চিন্তা করতে হচ্ছে। সবকিছুর দাম অনেক বেশি। তাই কম দামে সবজি কেনার জন্য কারওয়ান বাজারে আসছি।

পাইকারি সবজি বিক্রেতা আশরাফুল ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা আসেন কারওয়ান বাজারে। বেশিরভাগ ক্রেতা এক পাল্লা (৫ কেজি) করে সবজি ক্রয় করে নিয়ে যায়। অন্য এলাকা থেকে কিছুটা কম দামে এখানে সবজি ক্রয় করতে পারেন ক্রেতারা।

শুক্রবার কারওয়ান বাজারে প্রতি পাল্লা টমেটো বিক্রি হচ্ছিল ১২০ টাকায়। এছাড়া প্রতি পাল্লা কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ২০ টাকা, প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ১৪ টাকা, প্রতি পাল্লা আলু ৮০ টাকা, প্রতি পাল্লা পেঁপে ৮০ টাকা, এক কুড়ি লেবু ১১৫ টাকা ও প্রতি পাল্লা বেগুন ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল।