ঢাকা ১২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়া হাসপাতালে, যা বললেন ডা. জাহিদ

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৭:২৮:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩ ৯০ বার পড়া হয়েছে

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিনি আজ শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সেখানে যান। পরে, চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ভর্তি করা হয়। এরপর রাতে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে হাসপাতালে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

ডা. জাহিদ বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। আজকে সপ্তমবারের মতো এই হাসপাতালে এসেছেন তিনি। এখানে আসার পরে তার কিছু পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক আরও বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে আমার আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা, যেগুলো বাসায় করা সম্ভব নয়, সে সমস্ত বিষয়গুলো পরীক্ষা আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই হয়ে যাবে। এরপর মেডিকেল বোর্ড সব রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তার শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা দেবেন।’

এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকাদারের তত্ত্বাবধায়নে বিএনপি চেয়ারপারসন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ডা. জাহিদ জানান, গত কিছুদিন যাবৎ খালেদা জিয়ার লিভারের জটিলতা ছিল, কিডনির জটিলতা রয়েছে, হার্টের জটিলতা ছিল, সর্বোপরি লিভার জটিলতার কারণে হসপিটালে এবং মেডিকেল বোর্ড বিদেশ যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘যাতে ওনার (খালেদা জিয়া) অবস্থা আর খারাপের দিকে না যায়, সেজন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা আলাপ-আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে চিকিৎসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন; সেই অনুযায়ী তার চিকিৎসা চলবে। ইতোমধ্যে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তার পরীক্ষা করেছেন। চিকিৎসাও শুরু হয়েছে।’

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ এতগুলো অসুস্থতা নিয়েও বারবার বলার পরে আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ না পেয়েও শারীরিকভাবে যতটুকু রয়েছেন এটা আল্লাহর রহমত রহমত ও মানুষের দোয়ার বরকতে। এত অসুস্থ তার মধ্যেও এত প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি তার মানসিক শক্তি ধরে রেখেছেন এবং সুচিকিৎসার ব্যাপারে চিকিৎসারাও আশাবাদী আমরাও আশাবাদী।’

এর আগে আজ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালের পথে যাত্রা শুরু করেন খালেদা জিয়া। সন্ধ্যার দিকে তিনি হাসপাতালে পৌঁছান।

বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামসহ বিএনপির শত শত নেতাকর্মী।

এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে যান বেগম খালেদা জিয়া। তিনি অনেক বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

২০২১ সালের এপ্রিলে বেগম খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। নানা শারীরিক জটিলতায় ওই বছরের ২৭ এপ্রিল বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একপর্যায়ে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। প্রায় দুই মাস তিনি সিসিইউতে ছিলেন। ১৯ জুন বাসায় ফেরেন তিনি।

করোনার টিকা নেওয়ার জন্য বেগম খালেদা জিয়া দুই দফায় মহাখালীর শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে যান। ১৯ জুলাই করোনার প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পর ১৮ আগস্ট দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেন তিনি।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এ পর্যন্ত ছয় দফায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ফলে তিনি তার গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

খালেদা জিয়া হাসপাতালে, যা বললেন ডা. জাহিদ

আপডেট সময় : ০৭:২৮:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিনি আজ শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সেখানে যান। পরে, চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ভর্তি করা হয়। এরপর রাতে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে হাসপাতালে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

ডা. জাহিদ বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। আজকে সপ্তমবারের মতো এই হাসপাতালে এসেছেন তিনি। এখানে আসার পরে তার কিছু পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক আরও বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে আমার আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা, যেগুলো বাসায় করা সম্ভব নয়, সে সমস্ত বিষয়গুলো পরীক্ষা আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই হয়ে যাবে। এরপর মেডিকেল বোর্ড সব রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তার শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা দেবেন।’

এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকাদারের তত্ত্বাবধায়নে বিএনপি চেয়ারপারসন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ডা. জাহিদ জানান, গত কিছুদিন যাবৎ খালেদা জিয়ার লিভারের জটিলতা ছিল, কিডনির জটিলতা রয়েছে, হার্টের জটিলতা ছিল, সর্বোপরি লিভার জটিলতার কারণে হসপিটালে এবং মেডিকেল বোর্ড বিদেশ যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘যাতে ওনার (খালেদা জিয়া) অবস্থা আর খারাপের দিকে না যায়, সেজন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা আলাপ-আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে চিকিৎসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন; সেই অনুযায়ী তার চিকিৎসা চলবে। ইতোমধ্যে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তার পরীক্ষা করেছেন। চিকিৎসাও শুরু হয়েছে।’

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ এতগুলো অসুস্থতা নিয়েও বারবার বলার পরে আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ না পেয়েও শারীরিকভাবে যতটুকু রয়েছেন এটা আল্লাহর রহমত রহমত ও মানুষের দোয়ার বরকতে। এত অসুস্থ তার মধ্যেও এত প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি তার মানসিক শক্তি ধরে রেখেছেন এবং সুচিকিৎসার ব্যাপারে চিকিৎসারাও আশাবাদী আমরাও আশাবাদী।’

এর আগে আজ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালের পথে যাত্রা শুরু করেন খালেদা জিয়া। সন্ধ্যার দিকে তিনি হাসপাতালে পৌঁছান।

বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামসহ বিএনপির শত শত নেতাকর্মী।

এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে যান বেগম খালেদা জিয়া। তিনি অনেক বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

২০২১ সালের এপ্রিলে বেগম খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। নানা শারীরিক জটিলতায় ওই বছরের ২৭ এপ্রিল বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একপর্যায়ে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। প্রায় দুই মাস তিনি সিসিইউতে ছিলেন। ১৯ জুন বাসায় ফেরেন তিনি।

করোনার টিকা নেওয়ার জন্য বেগম খালেদা জিয়া দুই দফায় মহাখালীর শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে যান। ১৯ জুলাই করোনার প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার পর ১৮ আগস্ট দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেন তিনি।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এ পর্যন্ত ছয় দফায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ফলে তিনি তার গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন।