ঢাকা ০৮:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনার মাঝারি মাত্রার নতুন ঢেউ বয়ে যাচ্ছে এশিয়ায়

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১২:০৮:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ৭৩ বার পড়া হয়েছে

গত তিন বছরে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পর শ্বাসতন্ত্রের রোগ করোনার বৈশ্বিক মহামারি যখন শেষ হওয়ার প্রহর গুণছে, সে সময়ই এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বাড়ছে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

বিশ্বের বৃহত্তম এই মহাদেশটির অন্তর্ভূক্ত দেশগুলোর সাম্প্রতিক সংক্রমণ পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, করোনার এক নতুন, মাঝারি মাত্রার ঢেউ বয়ে যাচ্ছে এশিয়ার দেশগুলোর ওপর দিয়ে।

ব্লুবার্গের বিশ্লেষণ বলছে, করোনার নতুন এই ঢেউয়ে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এশিয়ার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন দেশ। সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২ সালের শুরুতে দেশটিতে করোনায় যতসংখ্যক আক্রান্ত রোগী ছিলেন, গত মার্চের শেষ সপ্তাহে সেই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।

রোগী বাড়ছে ভারত- ইন্দোনেশিয়া-ভিয়েতনামেও। ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ভারতে একদিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ভেঙে ফেলেছে গত সাত মাসের রেকর্ড। ইন্দোনেশিয়াতে কয়েক দিন আগে এক দিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সংক্রমণের বিস্তার রোধ করতে ভিয়েতনাম সম্প্রতি করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিধিগুলো ফের সচল করছে বলে জানা গেছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে বাধ্যতামূলক মাস্কবিধি শিথিল করে সিঙ্গাপুর। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সে সময় দেশটিতে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে গড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ হাজারের কিছু বেশি; মার্চের শেষ সপ্তাহে তা ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

২০২১ সালে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ডেল্টার প্রভাবে করোনার সবচেয়ে বিধ্বংসী ঢেউ দেখেছে ভারত। সংক্রমণ পরিস্থিতির চরম পর্যায়ে দেশটির অধিকাংশ হাসপাতালে শয্যা ও অক্সিজেন— উভয়ই শেষ হয়ে গিয়েছিল।

গত ৮ এপ্রিল ভারতে একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ১৫০ জনেরও বেশি রোগী, যা গতবছর আগস্টের পর একদিনে সর্বোচ্চসংখ্যক আক্রান্ত রোগীর রেকর্ড।

হাসপাতালগুলোতে অবশ্য এখনও রোগীর কোনো চাপ দেখা যায়নি, তবে সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধ করতে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যসরকারকে করোনার স্বাস্থ্যবিধি পুনরায় চালু করার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মহামারিবিদ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এক্সবিবি নামের একটি ভাইরাসকে সংক্রমণের সাম্প্রতিক এই উল্লম্ফণের জন্য দায়ী করেছেন। সবচেয়ে সংক্রামক করোনাভাইরাস ওমিক্রনের একাধিক ধরনের মিশ্রনে উদ্ভূত হয়েছে এই ভাইরাসটি।

কর্মকর্তারা অবশ্য বলেছেন—সংক্রমণ ক্ষমতা ব্যাপকমাত্রায় থাকলেও রোগীকে গুরুতর অসুস্থ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নেই এই এক্সবিবি ভাইরাসটির। ফলে এটি প্রাণঘাতী নয়।

এছাড়া যেসব দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, সেসব দেশের অধিকাংশ জনগণ করোনা টিকার দুই ডোজ তো বটেই, বুস্টার ডোজও নিয়েছেন। ফলে নতুন এই ঢেউয়ের কারণে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ওপর তেমন চাপ পড়বে না বলেই আশা করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

করোনার মাঝারি মাত্রার নতুন ঢেউ বয়ে যাচ্ছে এশিয়ায়

আপডেট সময় : ১২:০৮:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৩

গত তিন বছরে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পর শ্বাসতন্ত্রের রোগ করোনার বৈশ্বিক মহামারি যখন শেষ হওয়ার প্রহর গুণছে, সে সময়ই এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বাড়ছে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

বিশ্বের বৃহত্তম এই মহাদেশটির অন্তর্ভূক্ত দেশগুলোর সাম্প্রতিক সংক্রমণ পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, করোনার এক নতুন, মাঝারি মাত্রার ঢেউ বয়ে যাচ্ছে এশিয়ার দেশগুলোর ওপর দিয়ে।

ব্লুবার্গের বিশ্লেষণ বলছে, করোনার নতুন এই ঢেউয়ে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এশিয়ার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন দেশ। সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২ সালের শুরুতে দেশটিতে করোনায় যতসংখ্যক আক্রান্ত রোগী ছিলেন, গত মার্চের শেষ সপ্তাহে সেই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।

রোগী বাড়ছে ভারত- ইন্দোনেশিয়া-ভিয়েতনামেও। ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ভারতে একদিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ভেঙে ফেলেছে গত সাত মাসের রেকর্ড। ইন্দোনেশিয়াতে কয়েক দিন আগে এক দিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সংক্রমণের বিস্তার রোধ করতে ভিয়েতনাম সম্প্রতি করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিধিগুলো ফের সচল করছে বলে জানা গেছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে বাধ্যতামূলক মাস্কবিধি শিথিল করে সিঙ্গাপুর। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সে সময় দেশটিতে সাপ্তাহিক ভিত্তিতে গড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ হাজারের কিছু বেশি; মার্চের শেষ সপ্তাহে তা ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

২০২১ সালে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ডেল্টার প্রভাবে করোনার সবচেয়ে বিধ্বংসী ঢেউ দেখেছে ভারত। সংক্রমণ পরিস্থিতির চরম পর্যায়ে দেশটির অধিকাংশ হাসপাতালে শয্যা ও অক্সিজেন— উভয়ই শেষ হয়ে গিয়েছিল।

গত ৮ এপ্রিল ভারতে একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ১৫০ জনেরও বেশি রোগী, যা গতবছর আগস্টের পর একদিনে সর্বোচ্চসংখ্যক আক্রান্ত রোগীর রেকর্ড।

হাসপাতালগুলোতে অবশ্য এখনও রোগীর কোনো চাপ দেখা যায়নি, তবে সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধ করতে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যসরকারকে করোনার স্বাস্থ্যবিধি পুনরায় চালু করার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মহামারিবিদ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এক্সবিবি নামের একটি ভাইরাসকে সংক্রমণের সাম্প্রতিক এই উল্লম্ফণের জন্য দায়ী করেছেন। সবচেয়ে সংক্রামক করোনাভাইরাস ওমিক্রনের একাধিক ধরনের মিশ্রনে উদ্ভূত হয়েছে এই ভাইরাসটি।

কর্মকর্তারা অবশ্য বলেছেন—সংক্রমণ ক্ষমতা ব্যাপকমাত্রায় থাকলেও রোগীকে গুরুতর অসুস্থ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নেই এই এক্সবিবি ভাইরাসটির। ফলে এটি প্রাণঘাতী নয়।

এছাড়া যেসব দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, সেসব দেশের অধিকাংশ জনগণ করোনা টিকার দুই ডোজ তো বটেই, বুস্টার ডোজও নিয়েছেন। ফলে নতুন এই ঢেউয়ের কারণে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ওপর তেমন চাপ পড়বে না বলেই আশা করা হচ্ছে।