উল্লাপাড়ায় ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং বিপর্যস্ত জনজীবন
- আপডেট সময় : ১০:৩২:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৯ বার পড়া হয়েছে
তীব্র তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমে যখন নাকাল অবস্থা তার উপর ঘন্টায় ঘন্টায় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উল্লাপাড়ার জনজীবন। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করছে সাধারন মানুষ। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা। তিন দিন ধরে চলছে এ অবস্থা। রোববারের পরিস্থিতি ছিল আরও ভয়াবহ। এদিন রাতে উপজেলার পৌরশহর, পঞ্চক্রোশী, সলপ, উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়নসহ বেশ কিছু এলাকায় সারা রাতই প্রায় বিদ্যুৎ ছিল না।
সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতায় অধিকাংশ মানুষের রাত কাটে বিদ্যুৎ বিহীন চরম দুরাবস্থায়। পঞ্চক্রোশী ও সলপ ইউনিয়নে এমনকি উল্লাপাড়া পৌর শহরেও রোববার রাতে ১৮ বার লোডশেডিং হয়েছে। বিদ্যুৎ সমিতি বলছে তারা অসহায়। জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ না পেলে কিছুই করার নেই তাদের। আগামী আরও দুই তিন দিন এ অবস্থা থাকবে বলে সমিতির সদর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে।
পঞ্চক্রোশী এলাকার আব্দুল্লাহ, দেলকোশ, উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়নের জাহিদুল ইসলাম, আব্দুল জব্বার এবং সলপ ইউনিয়নের বানছারাম সরকার ও মোতালেব হোসেন জানান, দুই দিন ধরে ২৪ ঘন্টায় এমনিতেই ১২ থেকে ১৫ বার বিদ্যুৎ থাকে না। একবার গেলে ১ থেকে দেড় ঘন্টা দেখা মেলেনা বিদ্যুতের। আবার আসলেও গড়ে ১৫/২০ মিনিট থাকছে। রোববারের পরিস্থিতি ছিল আরও নাজুক। সারা রাতই বিদ্যুৎ ছিল না। ভ্যাপসা গরমে পরিবার পরিজন নিয়ে তাদেরকে খুবই কষ্টে রাত কাটাতে হয়েছে। এমন অবস্থা গত ১০ বছরেও তারা দেখেনি বলে উল্লেখ করেন।
সোমবার বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি ছিল আরও খারাপ। প্রতি ঘন্টায় অন্তত: ২ বার করে লোডশেডিং হয়েছে।
উল্লাপাড়া সানফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান, আবির হোসেন জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় স্কুলে আসার পর থেকে বেলা ১ টা পর্যন্ত
প্রতিঘন্টায় অন্তত: ২ বার করে লোডশেডিং হয়েছে। সব মিলিয়ে ঘন্টাখানেক বিদ্যুৎ ছিল। তাদের স্কুলের শ্রেণি ভবনে টিনের চালা। ফলে এমনিতেই বেশি গরম।
তারপর প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় শ্রেণি কক্ষে তাদের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছিল। তারা প্রধান শিক্ষকের কাছে অনুরোধ করে এক ঘন্টা আগে স্কুল থেকে ছুটি নিয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে ক্লাসে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়বে বলে তাদের আশংকা।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর মহাব্যবস্থাপক আবু আশরাফ মো. ছালেহ্ বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা খুবই খারাপ উল্লেখ করে বলেন, জাতীয় গ্রিড থেকে
বিদ্যুৎ না পেলে তাদের পক্ষে সরবরাহ দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। ২/৩ দিন ধরে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তার উপর দুদিন আগে উল্লাপাড়ার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রবল ঝড়ে সমিতি এলাকার বেশ কয়েকটি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সমস্যা আরও বেড়েছে।
বর্তমানে তার সমিতি এলাকার দৈনিক বিদ্যুৎ চাহিদা ১০৯ থেকে ১১০ মেগাওয়াট।সেখানে একেবারেই নগন্য পরিমান বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন তারা। ফলে বার বার লোডশেডিং দিতে বাধ্য হতে হচ্ছে। আরও ২/৩ দিন এ অবস্থা চলবে বলে উল্লেখ করেন এই মহাব্যবস্থাপক।