ঢাকা ০২:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আল-আকসার পর গাজা-লেবাননে ইসরায়েলি হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১০:১৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩ ৯৭ বার পড়া হয়েছে

আল-আকসা মসজিদে তাণ্ডব চালানোর পর গাজা এবং প্রতিবেশী দেশ লেবাননে বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। শুক্রবার (৬ এপ্রিল) রাতে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। খবর আল-জাজিরার।

স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে এক বিবৃতিতে দখলদার বাহিনী বলেছে, তারা এই মুহূর্তে লেবাননে হামলা চালাচ্ছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিওবার্তায় ঘোষণা দেন, তার দেশের শত্রুদের ‘যেকোনো আগ্রাসনের জন্য মূল্য দিতে হবে’। এর পরপরই গাজায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যেতে থাকে।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে গাজা ও লেবাননে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা কেউ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগে, গত বুধবার পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থাপনা আল-আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোরের দিকে এই হামলা চালানো হয়। সে সময় গ্রেফতার করা হয় কমপক্ষে ৪০০ ফিলিস্তিনিকে।

এর পরের দিন আল-আকসায় ফের তাণ্ডব চালায় ইসরায়েলিরা। এসময় মসজিদে ইবাদত করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর স্টান গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছোড়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের আল-আকসা থেকে জোর করে বের করে দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

পবিত্র মসজিদটিতে ইসরায়েলি তাণ্ডবের পর অবরুদ্ধ পশ্চিম তীরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হন বহু ফিলিস্তিনি। এছাড়া নাবলুসে ইসরায়েলি বাহিনীর ছোড়া বিষাক্ত গ্যাসে অন্তত ১২ ফিলিস্তিনি আহত হন। হেবরনের উত্তর সিটি সংলগ্ন বাইত উমর, জেনিন-বেথেলহেমেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পাশাপাশি, ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, বৃহস্পতিবার লেবানন থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে ৩৪টি রকেট ছোড়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি আকাশেই ধ্বংস করা হয় এবং অন্তত চারটি রকেট ইসরায়েলের ভূমিতে গিয়ে আঘাত হানে।

এগুলো ছিল লেবানন থেকে চলতি বছরে প্রথম এবং ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ বাহিনীর সঙ্গে ৩৪ দিনের যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলের দিকে সর্বোচ্চ রকেট ছোড়ার ঘটনা।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা হামাসকে লেবাননের মধ্য থেকে কাজ করতে দেবে না এবং লেবানিজ ভূখণ্ড থেকে উৎক্ষেপিত প্রতিটি রকেটের জন্য দেশটিকে দায়ী করা হবে।

এদিকে, রমজান মাসে আল-আকসায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার নিন্দায় সরব হয়েছে বিভিন্ন দেশ ও জোট। দখলদার বাহিনীর তাণ্ডবের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে তুরস্কে।

ইসরায়েলি পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে জানিয়েছে আরব লীগ। আল-আকসায় হামলার জেরে ২২ দেশের আঞ্চলিক জোটের এক জরুরি বৈঠক থেকে এই নিন্দা জানানো হয়।

মালয়েশিয়া বলেছে, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড বেআইনি। এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের কাছে দাবি জানিয়েছে দেশটি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনীর মাধ্যমে মৌলিক নাগরিক বিধি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আল-আকসার পর গাজা-লেবাননে ইসরায়েলি হামলা

আপডেট সময় : ১০:১৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩

আল-আকসা মসজিদে তাণ্ডব চালানোর পর গাজা এবং প্রতিবেশী দেশ লেবাননে বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। শুক্রবার (৬ এপ্রিল) রাতে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। খবর আল-জাজিরার।

স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে এক বিবৃতিতে দখলদার বাহিনী বলেছে, তারা এই মুহূর্তে লেবাননে হামলা চালাচ্ছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিওবার্তায় ঘোষণা দেন, তার দেশের শত্রুদের ‘যেকোনো আগ্রাসনের জন্য মূল্য দিতে হবে’। এর পরপরই গাজায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যেতে থাকে।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে গাজা ও লেবাননে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা কেউ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগে, গত বুধবার পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থাপনা আল-আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোরের দিকে এই হামলা চালানো হয়। সে সময় গ্রেফতার করা হয় কমপক্ষে ৪০০ ফিলিস্তিনিকে।

এর পরের দিন আল-আকসায় ফের তাণ্ডব চালায় ইসরায়েলিরা। এসময় মসজিদে ইবাদত করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর স্টান গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছোড়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের আল-আকসা থেকে জোর করে বের করে দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

পবিত্র মসজিদটিতে ইসরায়েলি তাণ্ডবের পর অবরুদ্ধ পশ্চিম তীরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হন বহু ফিলিস্তিনি। এছাড়া নাবলুসে ইসরায়েলি বাহিনীর ছোড়া বিষাক্ত গ্যাসে অন্তত ১২ ফিলিস্তিনি আহত হন। হেবরনের উত্তর সিটি সংলগ্ন বাইত উমর, জেনিন-বেথেলহেমেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পাশাপাশি, ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, বৃহস্পতিবার লেবানন থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে ৩৪টি রকেট ছোড়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি আকাশেই ধ্বংস করা হয় এবং অন্তত চারটি রকেট ইসরায়েলের ভূমিতে গিয়ে আঘাত হানে।

এগুলো ছিল লেবানন থেকে চলতি বছরে প্রথম এবং ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ বাহিনীর সঙ্গে ৩৪ দিনের যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলের দিকে সর্বোচ্চ রকেট ছোড়ার ঘটনা।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা হামাসকে লেবাননের মধ্য থেকে কাজ করতে দেবে না এবং লেবানিজ ভূখণ্ড থেকে উৎক্ষেপিত প্রতিটি রকেটের জন্য দেশটিকে দায়ী করা হবে।

এদিকে, রমজান মাসে আল-আকসায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার নিন্দায় সরব হয়েছে বিভিন্ন দেশ ও জোট। দখলদার বাহিনীর তাণ্ডবের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে তুরস্কে।

ইসরায়েলি পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে জানিয়েছে আরব লীগ। আল-আকসায় হামলার জেরে ২২ দেশের আঞ্চলিক জোটের এক জরুরি বৈঠক থেকে এই নিন্দা জানানো হয়।

মালয়েশিয়া বলেছে, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড বেআইনি। এটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের কাছে দাবি জানিয়েছে দেশটি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনীর মাধ্যমে মৌলিক নাগরিক বিধি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনের বিষয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।