ঢাকা ০২:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমদানি শুল্ক কমলেও চিনির দাম কমছে না

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৫:২৫:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩ ৮৮ বার পড়া হয়েছে

আমদানি শুল্ক কমলেও বাজারে চিনির দাম কমছে না। সরকার গত ৭ মাসে চিনির দাম চারবার বেঁধে দিয়েও বাজারের লাগাম টানতে পারেনি। উল্টো শুল্ক কমানোর পর সরকারি হিসাবে চিনির দাম আরও ২ শতাংশ বেড়েছে।

ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে শেষমেশ শুল্ক কমায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এত কিছুর পরও সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না।

কয়েক দিন আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী আশা প্রকাশ করেছেন যে রোজার মধ্যে চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমতে পারে। গতকাল শুক্রবার রোজা শুরু হয়ে গেছে।

রাজধানীর মৌলভীবাজারে গত বৃহস্পতিবার ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা খোলা চিনি পাইকারিতে ৫ হাজার ৪০০ টাকার কমবেশিতে বিক্রি হয়েছে। এতে প্রতি কেজি চিনির পাইকারি দাম পড়ে ১০৮ টাকা। অথচ সরকারিভাবে খোলা এই চিনির খুচরা দাম বেঁধে দেওয়া আছে ১০৭ টাকা।

অর্থাৎ পাইকারি বাজারেই সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে। সরকার প্যাকেটজাত চিনির খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে প্রতি কেজি ১১২ টাকা। কিন্তু এই দাম তো পরের বিষয়, বাজারে প্যাকেটজাত চিনি মিলছেই খুব কম। অবশ্য এখন খোলা চিনির সংকট নেই। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা ও প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে কমবেশি ১২০ টাকায়।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, বাজারে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশিতে বিক্রি হচ্ছে চিনি। অর্থাৎ সরকার দাম বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি শুল্ক কমালেও বাজারে চিনির দাম আরেক দফা বেড়েছে। শুল্ক কমানোর পরে চিনির দাম ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। টিসিবির হিসাবেই বাজারে এখন প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়।

রাজধানীর মৌলভীবাজারের পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, ‘শুল্ক কমানোর আগে আমরা যে দামে চিনি মিল ফটক থেকে পেতাম, এখনো সেই দামেই পাচ্ছি। শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত আসার পর ১০ দিন অতিবাহিত হলেও চিনির দামে কোনো পরিবর্তন নেই।’

শুল্ক কমার প্রভাব বাজারে কখন পড়বে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি মিলমালিকদের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, চিনির বাজার যখন একটু একটু করে বাড়তে শুরু করেছিল, তখনই সরকারকে চিনি আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক কাঠামো সংস্কারের অনুরোধ করা হয়। সরকার বিষয়টি সেই সময় আমলে নিলে বাজার এতটা চড়ত না। রোজা সামনে রেখে যখন সরকার শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিল, তখন বাজারে প্রভাব পড়ার মতো পরিস্থিতি নেই। তারা বলেন, চিনি আমদানিতে দুই মাসের বেশি সময় লেগে যায়। নতুন চিনি না এলে বাজারে শুল্ক কমার প্রভাব পড়বে না।

গত ১৯ মার্চ সচিবালয়ে ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ষষ্ঠ সভা’ শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, চিনির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমাতে রাজি হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

গত ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করেছে। একই সঙ্গে প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে তিন হাজার টাকা এবং পরিশোধিত চিনিতে ছয় হাজার টাকা আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। এই সুবিধা আগামী ৩০ মে পর্যন্ত বহাল থাকবে। এই শুল্ক কাঠামোর মধ্যে আমদানি হওয়া প্রতি কেজি চিনিতে ৫ টাকা দাম কমতে পারে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের। অর্থাৎ এত কিছুর পরও খুব শিগগির প্রতি কেজি চিনি ১০০ টাকার নিচে নামার লক্ষণ নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আমদানি শুল্ক কমলেও চিনির দাম কমছে না

আপডেট সময় : ০৫:২৫:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩

আমদানি শুল্ক কমলেও বাজারে চিনির দাম কমছে না। সরকার গত ৭ মাসে চিনির দাম চারবার বেঁধে দিয়েও বাজারের লাগাম টানতে পারেনি। উল্টো শুল্ক কমানোর পর সরকারি হিসাবে চিনির দাম আরও ২ শতাংশ বেড়েছে।

ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে শেষমেশ শুল্ক কমায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এত কিছুর পরও সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না।

কয়েক দিন আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী আশা প্রকাশ করেছেন যে রোজার মধ্যে চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমতে পারে। গতকাল শুক্রবার রোজা শুরু হয়ে গেছে।

রাজধানীর মৌলভীবাজারে গত বৃহস্পতিবার ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা খোলা চিনি পাইকারিতে ৫ হাজার ৪০০ টাকার কমবেশিতে বিক্রি হয়েছে। এতে প্রতি কেজি চিনির পাইকারি দাম পড়ে ১০৮ টাকা। অথচ সরকারিভাবে খোলা এই চিনির খুচরা দাম বেঁধে দেওয়া আছে ১০৭ টাকা।

অর্থাৎ পাইকারি বাজারেই সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে। সরকার প্যাকেটজাত চিনির খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে প্রতি কেজি ১১২ টাকা। কিন্তু এই দাম তো পরের বিষয়, বাজারে প্যাকেটজাত চিনি মিলছেই খুব কম। অবশ্য এখন খোলা চিনির সংকট নেই। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা ও প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে কমবেশি ১২০ টাকায়।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, বাজারে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশিতে বিক্রি হচ্ছে চিনি। অর্থাৎ সরকার দাম বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি শুল্ক কমালেও বাজারে চিনির দাম আরেক দফা বেড়েছে। শুল্ক কমানোর পরে চিনির দাম ২ শতাংশের বেশি বেড়েছে। টিসিবির হিসাবেই বাজারে এখন প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়।

রাজধানীর মৌলভীবাজারের পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, ‘শুল্ক কমানোর আগে আমরা যে দামে চিনি মিল ফটক থেকে পেতাম, এখনো সেই দামেই পাচ্ছি। শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত আসার পর ১০ দিন অতিবাহিত হলেও চিনির দামে কোনো পরিবর্তন নেই।’

শুল্ক কমার প্রভাব বাজারে কখন পড়বে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি মিলমালিকদের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, চিনির বাজার যখন একটু একটু করে বাড়তে শুরু করেছিল, তখনই সরকারকে চিনি আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক কাঠামো সংস্কারের অনুরোধ করা হয়। সরকার বিষয়টি সেই সময় আমলে নিলে বাজার এতটা চড়ত না। রোজা সামনে রেখে যখন সরকার শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিল, তখন বাজারে প্রভাব পড়ার মতো পরিস্থিতি নেই। তারা বলেন, চিনি আমদানিতে দুই মাসের বেশি সময় লেগে যায়। নতুন চিনি না এলে বাজারে শুল্ক কমার প্রভাব পড়বে না।

গত ১৯ মার্চ সচিবালয়ে ‘দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা-সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ষষ্ঠ সভা’ শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, চিনির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমাতে রাজি হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

গত ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করেছে। একই সঙ্গে প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে তিন হাজার টাকা এবং পরিশোধিত চিনিতে ছয় হাজার টাকা আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। এই সুবিধা আগামী ৩০ মে পর্যন্ত বহাল থাকবে। এই শুল্ক কাঠামোর মধ্যে আমদানি হওয়া প্রতি কেজি চিনিতে ৫ টাকা দাম কমতে পারে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের। অর্থাৎ এত কিছুর পরও খুব শিগগির প্রতি কেজি চিনি ১০০ টাকার নিচে নামার লক্ষণ নেই।