ঢাকা ০৩:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলার মাটির বাড়ী বিলুপ্তির পথে

নিজস্ব প্রতিবেদক//
  • আপডেট সময় : ১০:৫৭:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪ ১৫০ বার পড়া হয়েছে

আধুনিকতার ছোয়ায় আর কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ী এখন বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে মাটির বাড়ীর স্থান, দখল করে নিয়েছে ইট, পাথর, সিমেন্ট, বালি ও রডের তৈরি পাকা বাড়ীগুলো। গ্রাম বাংলার চিরচেনা সেই মাটির বাড়ী এখন াার দেখাই যাই না। গ্রামের মাটির বাড়ী ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ইট পাথরের বাড়ী নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রাচীনকাল থেকে গ্রামবাংলায় মাটির বাড়ী প্রচলন ছিল। এঁটেল মাটি দিয়ে এসব বাড়ীর ঘর তৈরি করা হতো। মাটি পানি দিয়ে ভিজিয়ে কাদায় পরিনত করে সেই কাদা ২০-৩০ ইঞ্চি চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো। এ দেয়াল তৈরি করতে বেশ সময় লাগে, কারণ একসঙ্গে বেশি উঁচু করে তৈরি করা যায় না। প্রতিবার এক থেকে দেড় ফুট উঁচু করে দেয়াল তৈরি করা হয়। কয়েকদিন পর শুকিয়ে গেলে আবার তার ওপর একই উচ্চতায় দেয়াল তৈরি করা হয়। এভাবে দেয়াল ১০-১২ ফুট উঁচু হলে বেশ কিছুদিন ধরে রোদে শুকানো হয়। তারপর এই দেয়ালের ওপর বাঁশের চালা তৈরি করে খর বা টিন দিয়ে ছাউনি দেয়া হয়। একটি মাটির বাড়ী তৈরি করতে প্রায় দেড় থেকে দুই মাস পর্যন্ত সময় লাগে। মাটির ঘর শীত গরম এবং গরমে ঠান্ডা, উভয় মৌসুমে বেশ আরাম দায়ক, তবে বন্যা, ভূমিকম্প বা প্রবল ঝড় না হলে এসব বাড়ী শতাধিত বছর পর্যন্ত টিকসই হয়। অনেক সময় মাটির বাড়ী দোতলা পর্যন্ত করা হয়। গৃহিনীরা তাদের নরম হাতের কোমল ছোঁয়ায় নিপুনভাবে কাদা দিয়ে লেপে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতো। এখন আর সেই মাটির ঘর চোখে পড়ে না বললেই চলে। এখনো বাপ-দাদার স্মৃতি ধরে রাখতে অনেকেই খরচ করে মাটির বাড়ী টিকিয়ে রেখেছে।
মাটির বাড়ী গুলো বন্যা, ঝড়, জলচ্ছাসের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগ বিশেষ ক্ষতি সাধন হয় বলেই মানুষ ইট-সিমেন্ট এর ঘর-বাড়ি নির্মাণ করছে। তা ছাড়া গ্রামের মানুষ আগের তুলনায় এখন আধুনিক। প্রতি বছর মাটির বাড়ী খরচ না করে একবারে বেশি খরচ হলেও পাকা ঘর-বাড়িই নির্মাণ করছে। আগামী প্রজন্মের মানুষের কাছে মাটির ঘর রুপকথার গল্পের মতোই হয়ে যাবে।
এক্সিম ব্যাংক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাঈম জানান , ছোটবেলায় আমাদের গ্রামে বা আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যেতাম এবং গ্রাম ঘুরে অনেক সুন্দর সুন্দর একতলা-দোতলা মাটির বাড়ি দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। কিন্তু এখন এই সব এলাকায় আগের মতো আর মাটির বাড়ী নেই, কালের বিবর্তনে এসব হারিয়ে যেতে বসেছে। মাটির বাড়ী গুলো বন্যা, ঝড়, জলচ্ছাসের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগ বিশেষ ক্ষতি সাধন হয় বলেই মানুষ ইট-পাথর, সিমেন্ট এর ঘর-বাড়ি নির্মাণ করছে।
সে আরো বলে আমাদের প্রজন্ম কয়েকটি হলেও মাটির বাড়ী দেখতে পেয়েছে। আগামী প্রজন্মের মানুষের কাছে মাটির বাড়ী শুধু রুপকথার গল্পের মতোই থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলার মাটির বাড়ী বিলুপ্তির পথে

আপডেট সময় : ১০:৫৭:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪

আধুনিকতার ছোয়ায় আর কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ী এখন বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে মাটির বাড়ীর স্থান, দখল করে নিয়েছে ইট, পাথর, সিমেন্ট, বালি ও রডের তৈরি পাকা বাড়ীগুলো। গ্রাম বাংলার চিরচেনা সেই মাটির বাড়ী এখন াার দেখাই যাই না। গ্রামের মাটির বাড়ী ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ইট পাথরের বাড়ী নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রাচীনকাল থেকে গ্রামবাংলায় মাটির বাড়ী প্রচলন ছিল। এঁটেল মাটি দিয়ে এসব বাড়ীর ঘর তৈরি করা হতো। মাটি পানি দিয়ে ভিজিয়ে কাদায় পরিনত করে সেই কাদা ২০-৩০ ইঞ্চি চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো। এ দেয়াল তৈরি করতে বেশ সময় লাগে, কারণ একসঙ্গে বেশি উঁচু করে তৈরি করা যায় না। প্রতিবার এক থেকে দেড় ফুট উঁচু করে দেয়াল তৈরি করা হয়। কয়েকদিন পর শুকিয়ে গেলে আবার তার ওপর একই উচ্চতায় দেয়াল তৈরি করা হয়। এভাবে দেয়াল ১০-১২ ফুট উঁচু হলে বেশ কিছুদিন ধরে রোদে শুকানো হয়। তারপর এই দেয়ালের ওপর বাঁশের চালা তৈরি করে খর বা টিন দিয়ে ছাউনি দেয়া হয়। একটি মাটির বাড়ী তৈরি করতে প্রায় দেড় থেকে দুই মাস পর্যন্ত সময় লাগে। মাটির ঘর শীত গরম এবং গরমে ঠান্ডা, উভয় মৌসুমে বেশ আরাম দায়ক, তবে বন্যা, ভূমিকম্প বা প্রবল ঝড় না হলে এসব বাড়ী শতাধিত বছর পর্যন্ত টিকসই হয়। অনেক সময় মাটির বাড়ী দোতলা পর্যন্ত করা হয়। গৃহিনীরা তাদের নরম হাতের কোমল ছোঁয়ায় নিপুনভাবে কাদা দিয়ে লেপে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতো। এখন আর সেই মাটির ঘর চোখে পড়ে না বললেই চলে। এখনো বাপ-দাদার স্মৃতি ধরে রাখতে অনেকেই খরচ করে মাটির বাড়ী টিকিয়ে রেখেছে।
মাটির বাড়ী গুলো বন্যা, ঝড়, জলচ্ছাসের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগ বিশেষ ক্ষতি সাধন হয় বলেই মানুষ ইট-সিমেন্ট এর ঘর-বাড়ি নির্মাণ করছে। তা ছাড়া গ্রামের মানুষ আগের তুলনায় এখন আধুনিক। প্রতি বছর মাটির বাড়ী খরচ না করে একবারে বেশি খরচ হলেও পাকা ঘর-বাড়িই নির্মাণ করছে। আগামী প্রজন্মের মানুষের কাছে মাটির ঘর রুপকথার গল্পের মতোই হয়ে যাবে।
এক্সিম ব্যাংক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাঈম জানান , ছোটবেলায় আমাদের গ্রামে বা আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যেতাম এবং গ্রাম ঘুরে অনেক সুন্দর সুন্দর একতলা-দোতলা মাটির বাড়ি দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। কিন্তু এখন এই সব এলাকায় আগের মতো আর মাটির বাড়ী নেই, কালের বিবর্তনে এসব হারিয়ে যেতে বসেছে। মাটির বাড়ী গুলো বন্যা, ঝড়, জলচ্ছাসের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগ বিশেষ ক্ষতি সাধন হয় বলেই মানুষ ইট-পাথর, সিমেন্ট এর ঘর-বাড়ি নির্মাণ করছে।
সে আরো বলে আমাদের প্রজন্ম কয়েকটি হলেও মাটির বাড়ী দেখতে পেয়েছে। আগামী প্রজন্মের মানুষের কাছে মাটির বাড়ী শুধু রুপকথার গল্পের মতোই থাকবে।