ঢাকা ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজকের ছবিটা তুলে রাখুন, এর জবাব থেকে মুক্তি নাই: ড. ইউনূস

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৪:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪ ৪৫ বার পড়া হয়েছে

শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (৩ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেন তার জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিন পাওয়ার সাংবাদিকদের ড. ইউনূস বলেন, আপনারা আজকের এই ছবিটা তুলে রাখুন। দুর্নীতি দমন কমিশনের বটতলায় আমরা সবাই। এটা ঐতিহাসিক একটা ছবি। এটা আজকে-কালকে পত্রপত্রিকায় বের হবে। কিন্তু এটা যুগ যুগ ধরে নানা বইতে প্রকাশিত হবে। আপনারা সেই ইতিহাসের সাক্ষী।

এই বিচারের ঘটনা দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় উল্লেখ করে নোবেল বিজয়ী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, এটা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, দেশের মধ্যেও সীমাবদ্ধ নয়, সারা দুনিয়ার মানুষ লক্ষ্য করছে এই বিচারে কি হলো। আমরা যা যা করছি তা সবই তারা দেখছে।

তিনি বলেন, এই যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার পক্ষে লিখুন, বিপক্ষে লিখুন কোন অসুবিধা নাই। কিন্তু এটা রেকর্ডেড। জাতির ইতিহাসের একটা অংশ হয়ে যাবে। এটার জন্য কি আমরা গর্ববোধ করবো, নাকি অপরাধবোধ করবো? এরকম একটা সন্তানকে এমন অপরাধে অপরাধী কেনো করলাম? এগুলোর জবাব থেকে মুক্তি নাই।

এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, একজন নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে, জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এনেছে। আমি একা নই। আমরা আরও ৭ জন, যারা সারাজীবন কঠোর পরিশ্রম করেছে গরীব মানুষের জন্য। এরা কোন চাকরি করতে এখানে আসে নাই। তারাও অর্থ আত্মসাত, জালিয়াতির এবং মানি লন্ডারিংয়ের জন্য অভিযুক্ত।

তিনি আরও বলেন, আপনারা আজকে এখানে উপস্থিত আছেন। আপনারা জন্ম-জন্মান্তর ধরে বলতে পারবেন যে, আমরা উপস্থিত ছিলাম সেখানে। এবং কেনো ছিলেন, কি হয়েছে সেগুলো আপনারা বর্ণনা করবেন। এটা আমার মুখ থেকে শোনার দরকার নেই। আপনারা যা নিজে মনে করবেন তা আপনার পরের প্রজন্মকে জানাবেন। আগের প্রজন্মকে জানাবেন। যারা এখানে উপস্থিত হয়নি তাদের জানাবেন। আইন মানুষের শুভ কামনা করে রচনা করা হয়। আইন মানুষের মনে স্বস্তি আনে, শান্তি আনে। আইন মানুষের মনে আশঙ্কাও জাগায়। ভয়ংকর শঙ্কা জাগায়। আইনকে আমরা কোনদিকে নিয়ে যাব সেটা সমাজের ইচ্ছা। সমাজ কিভাবে করতে চায়। আপনারাও ঠিক করেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আজ যে বিচারে বসলো সেটা সঠিক কারণে হয়েছে কিনা, সঠিক ভাবে হয়েছে কিনা। এটা আমার মুখের দিকে তাকানোর কোন দরকার নাই। এটা আপনার মনে যা জাগে তাই করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আজকের ছবিটা তুলে রাখুন, এর জবাব থেকে মুক্তি নাই: ড. ইউনূস

আপডেট সময় : ০৯:৫৪:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪

শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (৩ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেন তার জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিন পাওয়ার সাংবাদিকদের ড. ইউনূস বলেন, আপনারা আজকের এই ছবিটা তুলে রাখুন। দুর্নীতি দমন কমিশনের বটতলায় আমরা সবাই। এটা ঐতিহাসিক একটা ছবি। এটা আজকে-কালকে পত্রপত্রিকায় বের হবে। কিন্তু এটা যুগ যুগ ধরে নানা বইতে প্রকাশিত হবে। আপনারা সেই ইতিহাসের সাক্ষী।

এই বিচারের ঘটনা দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় উল্লেখ করে নোবেল বিজয়ী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, এটা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, দেশের মধ্যেও সীমাবদ্ধ নয়, সারা দুনিয়ার মানুষ লক্ষ্য করছে এই বিচারে কি হলো। আমরা যা যা করছি তা সবই তারা দেখছে।

তিনি বলেন, এই যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার পক্ষে লিখুন, বিপক্ষে লিখুন কোন অসুবিধা নাই। কিন্তু এটা রেকর্ডেড। জাতির ইতিহাসের একটা অংশ হয়ে যাবে। এটার জন্য কি আমরা গর্ববোধ করবো, নাকি অপরাধবোধ করবো? এরকম একটা সন্তানকে এমন অপরাধে অপরাধী কেনো করলাম? এগুলোর জবাব থেকে মুক্তি নাই।

এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, একজন নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে, জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এনেছে। আমি একা নই। আমরা আরও ৭ জন, যারা সারাজীবন কঠোর পরিশ্রম করেছে গরীব মানুষের জন্য। এরা কোন চাকরি করতে এখানে আসে নাই। তারাও অর্থ আত্মসাত, জালিয়াতির এবং মানি লন্ডারিংয়ের জন্য অভিযুক্ত।

তিনি আরও বলেন, আপনারা আজকে এখানে উপস্থিত আছেন। আপনারা জন্ম-জন্মান্তর ধরে বলতে পারবেন যে, আমরা উপস্থিত ছিলাম সেখানে। এবং কেনো ছিলেন, কি হয়েছে সেগুলো আপনারা বর্ণনা করবেন। এটা আমার মুখ থেকে শোনার দরকার নেই। আপনারা যা নিজে মনে করবেন তা আপনার পরের প্রজন্মকে জানাবেন। আগের প্রজন্মকে জানাবেন। যারা এখানে উপস্থিত হয়নি তাদের জানাবেন। আইন মানুষের শুভ কামনা করে রচনা করা হয়। আইন মানুষের মনে স্বস্তি আনে, শান্তি আনে। আইন মানুষের মনে আশঙ্কাও জাগায়। ভয়ংকর শঙ্কা জাগায়। আইনকে আমরা কোনদিকে নিয়ে যাব সেটা সমাজের ইচ্ছা। সমাজ কিভাবে করতে চায়। আপনারাও ঠিক করেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আজ যে বিচারে বসলো সেটা সঠিক কারণে হয়েছে কিনা, সঠিক ভাবে হয়েছে কিনা। এটা আমার মুখের দিকে তাকানোর কোন দরকার নাই। এটা আপনার মনে যা জাগে তাই করবেন।