ঢাকা ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ মিথ্যার ওপর টিকে আছে: মির্জা ফখরুল

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১১:৫৮:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুন ২০২৪ ২৮ বার পড়া হয়েছে

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার মিথ্যার ওপর টিকে আছে বলে এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সরকারের যত পরিসংখ্যান সবই— মিথ্যা ও বানানো। শুধু পুলিশের আইজিপি বেনজীর, বে-নজির নয়। এই সরকারের এবং আমাদের সবকিছুই হলো বে-নজির। এ থেকে রক্ষা পেতে জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে; যার যার অবস্থান থেকেই সবাইকে জেগে উঠতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে জাগিয়ে তুলতে হবে। এটি যত কঠিন কাজই হোক না কেন।

শুক্রবার (৭ জুন) বিকেলে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার গৃহীত কর্মসূচি ও নীতি: বাংলাদেশের কৃষি বিপ্লব ও পল্লী উন্নয়নের মূলভিত্তি” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন সোনালী দল।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. গোলাম হাফিজ কেনেডির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ড. আবুল কালাম আজাদের পরিচালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে শুধু লুটপাটের সুযোগ। অন্যদিকে মানুষের ঘাড়ে ট্যাক্সের বোঝা চাপানো হয়েছে। যন্ত্রপাতি আমদানি বাধাগ্রস্ত হলে তো কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান হবে না। সেজন্যই কিন্তু ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। এ যেন ভয়াবহ অবস্থা। সুতরাং এই দানব সরকারকে সরাতে না পারলে আমাদের মুক্তি নেই।

জিয়াউর রহমানের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের প্রতিকূল সময়ে রাজনীতিতে এসেছিলেন জিয়াউর রহমান। ১৯৭১ সালে যখন গোটা দেশের মানুষ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়েছিলেন, তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে কী করবেন? কোনো নির্দেশনা নেই। তখন ২৬ মার্চে (রেডিও’র ঘোষণা) অপরিচিত একজন মেজর জাতিকে তার কয়েকটি শব্দের মাধ্যমে গোটা জাতিকে উজ্জীবিত করেছিলেন। পরবর্তীতে জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আজকে আওয়ামী লীগ এই বিষয়টি মানতে পারে না। তবে কেউ স্বীকার করুক না করুক এটা ধ্রুব সত্য যে, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমান আরেকটি সময় (১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর) জাতির দুঃসময়ে রাষ্ট্রের পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তাকে আমরা দেশের একজন যোগ্য, দক্ষ নেতা হিসেবে পেয়েছিলাম। স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারের দুর্নীতি অন্যায় ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। পক্ষান্তরে জিয়াউর রহমান কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। তিনি কৃষিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে গেছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের সমৃদ্ধির জন্য নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিদেশে কর্মী পাঠানো, গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠা, পিছিয়ে পড়া এলাকার জন্য ডেভেলমেন্ট বোর্ড গঠন করেছিলেন। তিনি মাঠে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কৃষির সেচের জন্য খাল খনন করেছিলেন। গ্রামে, উপজেলায় তিনি রাত্রিযাপন করেছিলেন। জেলাতে তিনি কেবিনেট মিটিং করেছিলেন। সংশ্লিষ্ট জেলার উন্নয়নের জন্য তিনি নতুন পরিকল্পনা নিতেন। এককথায় গোটা জাতিকে তিনি এক নতুন স্বপ্ন দেখিয়ে মাঠ পর্যায়ে উন্নয়ন করেছিলেন। তিনি ইরান-ইরাক যুদ্ধ নিরসনে গঠিত কুদস কমিটির সদস্য ছিলেন। সেজন্যই কিন্তু এই মানুষটিকে কেউ ভুলতে পারে না।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানকে কেউ খাটো করতে পারবে না। তাকে খাটো করতে গেলে দেশকে খাটো করা হবে। তার অবদানকে যারা অস্বীকার করে তারা দেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের ন্যূনতম অবস্থান থাকলে যেটি হয় সেটি ভারতের জনগণ দেখিয়ে দিয়েছে। মোদির একক বিজয় ঠেকিয়ে দিয়েছে। এটিই হলো প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্রের কারণে। আজকে আমাদের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। এজন্য আমাদের লড়াইয়ের বিকল্প নেই। আজকে লড়াই করতে গিয়েই কিন্তু আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে।

আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, দেশের গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে দুর্নীতি এবং চাঁদাবাজির কারণে। এসবই করছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। কৃষির উন্নয়ন, মানুষের জীবন-মানের উন্নয়ন করতে হলে এই সরকারকে যেকোনোভাবে হোক ক্ষমতাচ্যুত করে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এখন দেশের প্রথম সমস্যা হলো দেশের সকল প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনীতিকরণ করেছে। সরকার সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের কব্জায় নিয়েছে। সুতরাং এই রাজনীতির পরিবর্তন না হলে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও হবে না, দুর্নীতিও বন্ধ হবে না। যারা মানুষের হক নষ্ট করে তাদের ক্ষমতাচ্যুত করা ঈমানি দায়িত্ব।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আওয়ামী লীগ মিথ্যার ওপর টিকে আছে: মির্জা ফখরুল

আপডেট সময় : ১১:৫৮:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুন ২০২৪

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার মিথ্যার ওপর টিকে আছে বলে এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সরকারের যত পরিসংখ্যান সবই— মিথ্যা ও বানানো। শুধু পুলিশের আইজিপি বেনজীর, বে-নজির নয়। এই সরকারের এবং আমাদের সবকিছুই হলো বে-নজির। এ থেকে রক্ষা পেতে জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে; যার যার অবস্থান থেকেই সবাইকে জেগে উঠতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে জাগিয়ে তুলতে হবে। এটি যত কঠিন কাজই হোক না কেন।

শুক্রবার (৭ জুন) বিকেলে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার গৃহীত কর্মসূচি ও নীতি: বাংলাদেশের কৃষি বিপ্লব ও পল্লী উন্নয়নের মূলভিত্তি” শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন সোনালী দল।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. গোলাম হাফিজ কেনেডির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ড. আবুল কালাম আজাদের পরিচালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে শুধু লুটপাটের সুযোগ। অন্যদিকে মানুষের ঘাড়ে ট্যাক্সের বোঝা চাপানো হয়েছে। যন্ত্রপাতি আমদানি বাধাগ্রস্ত হলে তো কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান হবে না। সেজন্যই কিন্তু ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। এ যেন ভয়াবহ অবস্থা। সুতরাং এই দানব সরকারকে সরাতে না পারলে আমাদের মুক্তি নেই।

জিয়াউর রহমানের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের প্রতিকূল সময়ে রাজনীতিতে এসেছিলেন জিয়াউর রহমান। ১৯৭১ সালে যখন গোটা দেশের মানুষ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়েছিলেন, তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে কী করবেন? কোনো নির্দেশনা নেই। তখন ২৬ মার্চে (রেডিও’র ঘোষণা) অপরিচিত একজন মেজর জাতিকে তার কয়েকটি শব্দের মাধ্যমে গোটা জাতিকে উজ্জীবিত করেছিলেন। পরবর্তীতে জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আজকে আওয়ামী লীগ এই বিষয়টি মানতে পারে না। তবে কেউ স্বীকার করুক না করুক এটা ধ্রুব সত্য যে, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমান আরেকটি সময় (১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর) জাতির দুঃসময়ে রাষ্ট্রের পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তাকে আমরা দেশের একজন যোগ্য, দক্ষ নেতা হিসেবে পেয়েছিলাম। স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারের দুর্নীতি অন্যায় ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। পক্ষান্তরে জিয়াউর রহমান কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। তিনি কৃষিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে গেছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের সমৃদ্ধির জন্য নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিদেশে কর্মী পাঠানো, গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠা, পিছিয়ে পড়া এলাকার জন্য ডেভেলমেন্ট বোর্ড গঠন করেছিলেন। তিনি মাঠে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কৃষির সেচের জন্য খাল খনন করেছিলেন। গ্রামে, উপজেলায় তিনি রাত্রিযাপন করেছিলেন। জেলাতে তিনি কেবিনেট মিটিং করেছিলেন। সংশ্লিষ্ট জেলার উন্নয়নের জন্য তিনি নতুন পরিকল্পনা নিতেন। এককথায় গোটা জাতিকে তিনি এক নতুন স্বপ্ন দেখিয়ে মাঠ পর্যায়ে উন্নয়ন করেছিলেন। তিনি ইরান-ইরাক যুদ্ধ নিরসনে গঠিত কুদস কমিটির সদস্য ছিলেন। সেজন্যই কিন্তু এই মানুষটিকে কেউ ভুলতে পারে না।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানকে কেউ খাটো করতে পারবে না। তাকে খাটো করতে গেলে দেশকে খাটো করা হবে। তার অবদানকে যারা অস্বীকার করে তারা দেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের ন্যূনতম অবস্থান থাকলে যেটি হয় সেটি ভারতের জনগণ দেখিয়ে দিয়েছে। মোদির একক বিজয় ঠেকিয়ে দিয়েছে। এটিই হলো প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্রের কারণে। আজকে আমাদের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। এজন্য আমাদের লড়াইয়ের বিকল্প নেই। আজকে লড়াই করতে গিয়েই কিন্তু আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে।

আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, দেশের গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে দুর্নীতি এবং চাঁদাবাজির কারণে। এসবই করছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। কৃষির উন্নয়ন, মানুষের জীবন-মানের উন্নয়ন করতে হলে এই সরকারকে যেকোনোভাবে হোক ক্ষমতাচ্যুত করে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এখন দেশের প্রথম সমস্যা হলো দেশের সকল প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনীতিকরণ করেছে। সরকার সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের কব্জায় নিয়েছে। সুতরাং এই রাজনীতির পরিবর্তন না হলে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও হবে না, দুর্নীতিও বন্ধ হবে না। যারা মানুষের হক নষ্ট করে তাদের ক্ষমতাচ্যুত করা ঈমানি দায়িত্ব।