• মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১০:২৫ পূর্বাহ্ন

ছাত্রত্ব ধরে রাখতে ভরসা সান্ধ্য কোর্স

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশ : রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের ২৬তম বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে তৈরি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। আলোচনা-সমালোচনায় ভাসছেন পদপ্রত্যাশীরা। তবে এসব প্রার্থীর অনেকেরই শেষ হয়েছে ছাত্রত্ব, আবার অনেকে হয়েছেন ড্রপ আউট। তবে ছাত্রত্ব ধরে রাখতে তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্সকে। এদের অধিকাংশই ভর্তি হয়ে আছেন ইন্সটিটিউট ইংরেজি এন্ড আদার ল্যাঙ্গুয়েজ এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে।

জানা যায়, পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি কাজী আমিনুল হক লিংকন, জাকিরুল ইসলাম জ্যাক ও মেজবাহুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিনুল ইসলাম সরকার ডন, ফয়েজ আহমেদ ও শেখ মামুন সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু, গণযোগাযোগ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদ দূর্জয়, বঙ্গবন্ধু হল শাখার সভাপতি কাব্বিরুজ্জামান রুহুল, সোহরাওয়ার্দী হল শাখার সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ প্রমুখ। এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান বাকী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নেতৃত্বের দৌঁড়ে এগিয়ে থাকা এসব নেতাদের মধ্যে সহ-সভাপতি কাজী আমিনুল হক লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে পড়াশুনা শেষ করেছেন। তিনি ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং ২০১৭ সালে অনার্স এবং ২০২১ সালে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। দীর্ঘদিন ধরে একাডেমিক কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা কোর্সে আমার গ্যাপ ছিলো। তাই শেষ করতে একটু দেরি হয়েছে। তবে বর্তমানে আমি মার্কেটিং বিভাগেই সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি আছি।

সহ-সভাপতি জাকিরুল ইসলাম জ্যাক ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে নাট্যকটা বিভাগে ভর্তি হন। তিনি ২০১৬ সালে অনার্স এবং ২০১৮ সালে মাস্টার্স শেষ করেন। বর্তমানে তিনি ইংলিশ লিটারেচারে সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি রয়েছেন।

আরেক সহ-সভাপতি মেসবাহুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবের্ষর শিক্ষার্থী ছিলেন। একই বিভাগ থেকে ২০১৯ সালে অনার্স এবং ২০২২ সালে মাস্টার্স শেষ করেন বলে জানা যায়। বর্তমানে তিনি ইংলিশ অ্যান্ড আদার ল্যাংগুয়েজে সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি আছেন।

যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহিনুল ইসলাম সরকার ডন ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ফাইন্যান্স বিভাগে ভর্তি হন। পরে ২০১৬ সালে অনার্স এবং ২০১৮ সালে একই বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তিনিও জার্মান ভাষার শর্ট কোর্সে ভর্তি রয়েছেন। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ মামুন ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র। তিনি প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে ২০১৭ সালে অনার্স এবং ২০২০ সালের মাস্টার্স শেষ করেন। বর্তমানে তিনি ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্সটিটিউটে সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি আছেন। আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমেদ ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হন। তিনি ২০১৯ সালে অনার্স এবং ২০২১ সালে মাস্টার্স শেষ করেন। তবে বর্তমানে তিনি কোথাও ভর্তি নেই। এ বিষয়ে ফয়েজ বলেন, ‘আমার থিসিস এখনও শেষ হয়নি। তাই আর কোথাও ভর্তি হইনি।’

সংগঠনটির নেতৃত্বের দৌঁড়ে বেশ এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিব। গালিব বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ড্রপ আউট হয়ে ছাত্রত্ব হারানোর অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। ড্রপ আউটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপাতত কিছু বলতে চাচ্ছি না। তবে বর্তমানে আমি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি আছি।

অভিযোগ আছে ড্রপ আউট হয়ে ছাত্রত্ব হারিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন এই সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বলেন, আমি ২০২২ সালে বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করেছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের রেজাল্ট শীটে তার নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পদপ্রত্যাশী বলেন, ছাত্রলীগকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে। আর সেটি করতে যাদের ছাত্রত্ব আছে, শিক্ষার্থীরা পছন্দ করে এবং ক্যাম্পাসে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন লোকদের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। একজন পড়াশোনা শেষ করে যাওয়া লোক ছাত্রদের নেতৃত্ব দিবেন এটি আসলে কেমন দেখায়। আবার কলেজ পাশ একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা হবেন, এটি আসলে মেনে নেওয়া যায় না। নীতি নির্ধারকদের কাছে আমার অনুরোধ তারা যেন এসব বিষয় বিবেচনা করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ