পাবনার সাঁথিয়ার আত্রাইশুকা গ্রামে বাঁশের ভাঙ্গা সেতুতে পারাপারে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কয়েক গ্রামের বাসিন্দারা। অর্থ সংকটে সেতুটি দীর্ঘদিন রয়েছে জরাজীর্ণ। হাড়ি, চাঁদা তুলে স্বেছাশ্রমে মেরামত করার উদ্যোগ নিয়েছে গ্রামবাসিরা। ভাঙ্গা সেতুতে পারাপারে প্রায়ই ঘটছে ছোট, বড় দুর্ঘটনা।
জানা যায়, উপজলার সীমান্তবর্তী আত্রাইশুকা ও বিষ্ণুবাড়িয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের সীমানা দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী। নদীটি পার হয়ে হাট বাজার, স্কুল, কলেজে ও চিকিৎসাসেবা গ্রহণে সুজানগর উপজেলার চরগোবিন্দপুর বাজারে আসতে হয় আত্রাইশুকা ও বিষ্ণুবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দাদের।
বাজারটি থেকে উপজেলা ও জেলা সদরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলাচল করতে হয় তাদের। চরগোবিন্দপুর বাজারে আসার একমাত্র ভরসা আত্রাই নদীর উপর স্থাপিত বাঁশের সেতু। দীর্ঘ ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে লোকজন সেতুটি ব্যবহার করে প্রতিদিন চলাফেরা করে থাকে। বছরের পর বছর সেতু মেরামত করে যেন ক্লান্ত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। যখনই সেতুটি ভেঙ্গে যায় তখনই দুর্ভোগে পড়ে এলাকার পুরুষ, নারী, ব্যবসায়ী ও ছাত্র ছাত্রীরা।
সেতুটি পার হয়েই রয়েছে ঐতিহ্যবাহী দুলাই উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি ডা: জহুরুল কামাল কলেজ, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কয়েকটি কিন্ডারগার্টেন। এছাড়া রয়েছে বেশ কয়েকটি এনজিও। আত্রাইশুকা গ্রামের অধিকাংশ পরিবার কামার শিল্পের সঙ্গে জড়িত যা কামার পল্লী নামে খ্যাত। প্রতিদিন ভোর থেকেই কর্মজীবি কামার সম্প্রদায়ের ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য বের হতে হয়। এসব কারণেই সেতুটি ওই গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের জন্য অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। ভাঙ্গা সেতুটি সংস্কারের জন্য গ্রামবাসীরা হাঁড়ি, চাঁদা তুলে মেরামত শুরু করেছে।
আত্রাইশুকা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের উঠতি বয়সী যুবক, নারী-পুরুষ স্বেছাশ্রমে সেতুটি মেরামত শুরু করেছে। লোহা ব্যবসায়ী মুকুল, সোবহান জানান, বাঁশের সেতুতে নিরাপত্তার অভাবে লোহা ও লোহার ভারি মালামাল বাড়িতে আনতে পারিনা। বাজারে অধিক খরচ করে ঘর ভাড়া করে মালামাল রাখতে হয়। সেখান থেকে প্রয়োজনমতো মালামাল মাথায় করে বাড়িতে আনতে হয়। এতে অনেক সময় ছোট, বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
আত্রাইশুকা গ্রামের ইয়াজ উদ্দিন ও সাত্তার খান জানান, প্রতি বছরই চাঁদা তুলে স্বেছাশ্রমে সেতুটি মেরামত করতে করতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।এ এলাকায় দরিদ্র লোকের বসবাস হওয়ায় মানুষ চাঁদা দিতে অনিহা করে। আমরা সরকারের নিকট এখানে একটি স্থায়ী ব্রিজের দাবি করছি। ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চোয়ারম্যান মুনসুর আলম পিনচু বলেন, সেতুটি আমি পরিদর্শন করেছি। আমি আর্থিক অনুদান দিতে চেয়েছি।
সাঁথিয়া উপজলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ হোসেন জানান, সেতুটির বিষয়ে আমার নিকট কোন তথ্য ছিল না। এ বিষয় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।