বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশের ন্যায় রাজশাহী জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের আয়োজনে অবস্থান কর্মসূছী পালিত হয়। বৃহস্পতিবার বেলা ১১ থেকে দুপুর পর্যন্ত দেশব্যাপি বিদ্যুতের অসনীয় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দূর্নীতির প্রতিবাদে রাজশাহী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে এই কর্মসূচীঅ পালিত হয়। নেতাকর্মীরা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের নির্ধারিত স্থানে জরো হতে থাকেন। একপর্যায়ে সেখান থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হেতম খাঁ বিদ্যুৎ অফিসের সামনে এসে অবস্থান নেন। অবস্থান শেষে তারা স্বারকলিপি প্রদান করেন। কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহিন শওকত।
বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহŸায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ মহসিন ও সদস্য সচিব অদ্যাপক বিশ^নাথ সরকার, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ ও জেলা বিএনপি’র সদস্য আব্দুস সামাদ, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক ওয়ালিউল হক রানা, শফিকুল ইসলাম শাফিক, জয়নাল আবেদিন শিবলী, রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য আলী হোসেন, শাহাদৎ হোসেন, তোফায়েল হোসেন রাজু, জাকিরুল ইসলাম বিকুল, মিজানুর রহমান মিজান, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম।
জেলা কৃষকদলের আহবায়ক শফিকুল আলম সমাপ্ত, সদস্য সচিব আকুল হোসেন মিঠু, মহানগর কৃষকদলের আহবায়ক শামীম আহমেদ, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সভাপতি ও যুবদল রাজশাহী মহানগরের আহŸায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন রিমন, রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মাসুদুর রহমান লিটন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মীর তারেক ও সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান জনি।
আরো উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর জাসাস এর সদস্য সচিব সেলিম রেজা, রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আকবর আললী জ্যাকি ও রাবি ছাত্রদলের আহবায়ক সুলতান আহমেদ রাহিসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী বৃন্দ।
প্রধান অতিথি বলেন, এই সরকার থেকে বেশী দুর্নীতি বাজ। তিনি মেগা প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট কওে বেগম পাড়ায় বাড়ি করেছে। তিনি আরো বলেন, জৈষ্ঠ্যের খরতাপে মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠে গেছে।। এর ওপর বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে মানুষ এক ভয়াবহ দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। গ্রামে চাহিদার তুলনায় ৩০-৩৫ শতাংশ বিদ্যুৎ কম পাচ্ছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। গ্রাম-গঞ্জের মানুষ ২৪ ঘন্টায় মাত্র ১-২ ঘন্টা বিদ্যুৎ পায়। মফস্বল শহরগুলোতে রাতে ২ ঘন্টার বেশী বিদ্যুৎ থাকে না। দিনের বেলাও অধিকাংশ সময় লোডশেডিংয়ে আচ্ছন্ন থাকে। রাজশাহী শহরেও দিনে-রাতে ৬-৭ ঘন্টার বেশী বিদ্যুৎ থাকে না। মানুষের বসতবাড়িতে সীমাহীন দুর্ভোগের পাশাপাশি বিদ্যুতের অভাবে ক্ষুদ্র, মাঝারী ও বৃহৎ শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে ও পর্যায়ক্রমে সেগুলি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এর চেইন রিএ্যাকশনে ক্রমাগতভাবে কর্মহীন হবে লক্ষ লক্ষ মানুষ ।
তিনি আরো উল্লেখ করেন সরকারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজনকে প্রাইভেট কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্প দেয়া হয়েছে। তাদের বিপুল- অর্থবিত্তের মালিক বানানোর জন্য এই সকল প্রকল্প স্থাপনের সুযোগ দেয়া হয়। যাদের মধ্যে কেউ সিঙ্গাপুরে গিয়ে সর্বোচ্চ ধনীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন। অথচ জনগণের পকেট কেটে হাজার হাজার কোটি টাকা আদায় করা হচ্ছে কেবলমাত্র এই খাতে ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই ক্যাপাসিটি চার্জের নামে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার উপরে পরিশোধ করা হচ্ছে। এই লুটপাটের পরিণতিই হচ্ছে অভাবনীয় লোডশেডিংয়ের আত্মপ্রকাশ। লোডশেডিংয়ের বর্তমান দুর্বিষহ পরিস্থিতির জন্য বর্তমান সরকারের গণবিরোধী নীতিই দায়ী। বিদ্যুৎ খাতে লুটপাটকে বৈধ করতেই ইনডেমনিটি আইন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার সবসময় বড় গলায় উদ্বৃত্ত বিদ্যুতের কথা বলে এসেছে। পরিবেশ ও মানুষের অস্তিত্বের কথা বিবেচনা না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির নামে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তাহলে আজ কেন এতো অসহনীয় বিদ্যুৎ বিপর্যয়। আসলে এই সরকারের আমলে বিদ্যুৎ খাতে চলেছে দুর্নীতির মহা তেলেসমাতি। না হলে এই অবস্থা হতনা। কারন প্রতিটি গ্রহান সময়মত বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করে আসছেন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে লুটপাটের সুযোগ দিয়ে আওয়ামী সরকার ফৌজদারী অপরাধ করেছে। সেজন্য এই রেন্টাল-কুইক রেন্টালের সাথে যারা জড়িত তাদের বিচার হওয়া উচিৎ। এরা জনগণের দুশমন বলেই বিদ্যুতের মতো অতি আবশ্যকীয় একটি খাতকে চুরির খনিতে পরিণত করেছে।
প্রধান অতিতি বলেন, মেগা প্রজেক্টের প্রতি অতি আগ্রহের প্রতিফলনই হলো বর্তমান দুর্বিষহ লোডশেডিং। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা চুরি ও কুইক রেন্টালের নামে কুইক চুরি বর্তমান সরকারের ঘোষিত কর্মসূচি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি অবিলম্বে অবর্ণনীয় লোডশেডিং বন্ধ এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে জোরালো আহবান আহŸান জানান তিনি। সেই সাথে সরকার পতেনর আন্দোলনে সবাইকে রাজপথে থাকর আহŸান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন। বক্তব্য শেষে একটি প্রতিনিধি দল বিদু্যূৎ অফিসের কর্মকর্তার নিকট স্মারকলিপি পেশ করেন।