• মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩, ০২:২১ পূর্বাহ্ন
  • Arabic AR Bengali BN English EN French FR German DE

ভোটে সেনা চান জাহাঙ্গীরের মা, কূটনীতিকদের চিঠি দিয়েছেন

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ / ২৫ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশ : সোমবার, ২২ মে, ২০২৩

ঢাকার পাশে দেশের সবচেয়ে বড় সিটি করপোরেশন গাজীপুরে আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের ভোটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে লড়ছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। ভোটের পরিবেশ নিয়ে তিনি শঙ্কিত। এজন্য নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণসহ সাত দফা দাবি জানিয়ে কূটনীতিকদের চিঠি দিয়েছেন জায়েদা খাতুন।

গতকাল রোববার (২১ মে) যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার বরাবর ইংরেজিতে তিন পাতার একটি চিঠি দিয়েছেন জাহাঙ্গীর আলমের মা। সেখানে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বিদেশি কূটনীতিকদের মাধ্যমে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি এবং নির্বাচনী এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ জানান।

সোমবার (২২ মে) চিঠির বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ কয়েকটি দাবি বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানানোর জন্য কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাই কমিশনারকে এ চিঠি দেওয়া হয়েছে।’

চিঠিতে যা লিখেছেন জায়েদা খাতুন

জায়েদা খাতুন চিঠিতে লেখেন, ‘আমি জায়েদা খাতুন আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টেবিলঘড়ি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমি গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা। আপনারা সবাই অবগত আছেন যে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আমার ছেলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় নির্বাচিত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়েছে। আমি এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টেবিলঘড়ি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমার ছেলের প্রতি অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য টেবিলঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নামলেই লাখো শান্তিপ্রিয় মানুষ গাজীপুরে আমার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। ৯ মে প্রতীক পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী আজমত উল্লা খান আমাকে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন, আমার গণসংযোগে হামলা করছেন। আমার নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত পোলিং এজেন্ট ও সম্ভাব্য পোলিং এজেন্টদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন। ব্যক্তিগত গুণ্ডা দিয়ে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন।

‘আজমত উল্লা খান তাঁর সন্ত্রাসী লোকজন নিয়ে গণসংযোগের সময় আমার গাড়িবহরে বাধা দিচ্ছেন এবং তাঁর পক্ষে উসকানিমূলক স্লোগান দিচ্ছেন। পুলিশ প্রশাসন অযথা বিভিন্নস্থানে আমার নির্বাচনী প্রচারণাকে হয়রানি করছে। রিটার্নিং অফিসারের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করেছি। আমি ১৮ মে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

চিঠিতে যে সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয় সেগুলো হলো-

১. এই মুহূর্ত থেকে নির্বাচনী প্রচারণার সব বাধা অপসারণের জন্য প্রতিপক্ষ প্রার্থী আজমত উল্লা খানের সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে এবং যারা আমার নির্বাচনী গণসংযোগে বিভিন্ন স্থানে হামলা করেছেন, তাদের গ্রেফতার করতে হবে।

২. ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে এবং ভোটকেন্দ্র ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচনের চার দিন আগে নির্বাচনী এলাকায় পর্যাপ্তসংখ্যক সেনা মোতায়েন করতে হবে। ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা দিতে হবে এবং ভোট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনীকে ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করতে হবে।

৩. যেহেতু বেশির ভাগ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ, তাই প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করতে হবে। আর সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর সমন্বয়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগ করে নির্বাচনী এলাকা শক্তিশালী করতে হবে।

৪. নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে ব্যবহৃত সিসি ক্যামেরার লাইভ যাতে গণমাধ্যমকর্মীরা এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মনোনীত ব্যক্তিরা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. নির্বাচনী এলাকায় একজন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী থাকায় এবং বিরোধী দলের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পুলিশ অফিসারের কিছু সদস্যকে প্রভাবিত করতে প্রচুর কালো টাকা খরচ করছেন। বিতর্কিত ও ক্ষতিগ্রস্ত পুলিশ কর্মকর্তাদেরও অবিলম্বে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে হবে।

৬. গাজীপুর মহানগর পুলিশের আওতাধীন বিভিন্ন থানার কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য আমার নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে চাঁদাবাজি করছেন। বিপথগামী পুলিশ কর্মকর্তাদের অবিলম্বে নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।

৭. নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে একটি নির্দেশনা চাই যে আমার কোনো নেতা-কর্মী বা এজেন্টকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার বা হয়রানি করা যাবে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ